হে কবি,
তোমার কবিতায় কৃষকের ঘামে
হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমে ফলা সোনালি ফসলের খতিয়ান কই?
তোমার কলমে বেপরোয়া দুর্নীতিবাজ
জাতি ধ্বংসকারী তস্করদের বিরুদ্ধে জ্বলে ওঠা ভিসুভিয়াসের
সেই লেলিহান শিখা কই?
তোমার চলনে বলনে আগেকার দিনের চে, লেলিন,
মুজিবের বিপ্লবী ভাবধারা গেল কই?
হে কবি,
আজ তোমার অবিনাশী গানে ধ্বজ চেতনার নির্লজ্জ
চামুন্ডাদের হাতে ধর্ষিত বামার অভিযোগ বাণী গেল কই?
সভ্যতার শত্রু মোঙল হানাদার দোসরদের ভয়ে
তোমার চিত্ত সদা কম্পমান কেন?
হে কবি,
কেন আজ তোমার কলমখানা এতিমের আর্তনাদ, সহায়
সম্বলহীন ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর গগনবিদারী চেঁচানিতে
ভ্যান উইঙ্কলের ঘুমের ঘোরে আচ্ছন্ন?
হে কবি,
তবে তুমিও কি ডুব দিয়েছো আয়েশী সাগরে,
সেই কূপমন্ডুক কিছু দস্যু সাংবাদিকদের মত,
সর্বগ্ৰাসী লুটেরা রাজনৈতিক নেতাদের মত,
তুমিও কি অবশেষে আখের গোছানোর অন্তীম
খেলায় মেতে উঠেছো?
হে কবি,
তবে আজ থেকে আর কোনদিনও নিজেকে
বিপ্লবী সুকান্ত নজরুলদের উত্তরসূরী দাবি করতে এসোনা।
তোমার কলুষিত ভোগবাদি কবিসত্ত্বাকার কদর্যরূপ
নব প্রজন্মের কাছে আর উন্মোচিত করোনা।
আমাদের এই প্রজন্ম তোমার পদভ্রষ্ঠতার দিনলিপির খবর রাখে।
তোমার বেপথে ধাবিত হওয়া ও ছলচাতুরির
রোজনামচা পড়ার মত আগ্ৰহী মন আজকের তরুণ প্রজন্মের নেই।
হে কবি,
হয়তো আজকে তুমি ঘোলাপানিতে কবিসত্ত্বার বিপুল
দেনদরবারে মত্ত হয়ে আগামীর সোনালি তপন কিরণে স্নানে যাওয়ার
তড়িঘড়ি প্রস্তুতি নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছো।
তবে শুনে রাখ, দিন বরাবরের মতই যায় ভালো, আসে দিন খারাপ।
ধ্বংসের দামামা বেজে উঠবে ধরনীতে যখন পূঞ্জীভূত হবে পাপ।
১৮ অক্টোবর ২০২১, রংপুর