হেমন্তের প্রথম শিশির, তোমার চুলের মতোই নরম,
যেন আলগোছে জড়িয়ে রেখেছে রাতের শেষ কুয়াশা।
তোমার চোখের তারায় যেন ছড়িয়ে আছে শিউলি ফুল,
প্রভাতের রোদ্দুরে ভিজে ওঠা, নীরব ভাষা।

তোমার হাসিতে হেমন্তের হাওয়া বাজায় সুর,
পাতা ঝরার মৃদু মর্মর ধ্বনি, যেন হৃদয়ে কাঁপন।
গাছের ডালে ডালে জমা কুয়াশা তোমার দৃষ্টি,
আলো-অন্ধকারের ছায়ায় লুকিয়ে প্রেমের অঙ্গন।

তুমি এলে হিমেল বাতাসে, গোধূলির আকাশে রঙ মেখে,
আশ্বিনের শেষ বিকেলে যখন মাঠে নামে ঝরা পাতার ধুলো।
তোমার পায়ের শব্দে ধানক্ষেতের সোনালী ঢেউ জাগে,
পাখিরা তোমার নামেই গায়, যেন বনভূমির উৎসব হলো।

তোমার কণ্ঠে যেন গায় হেমন্তের নদী,
তোমার ঠোঁটে মৌমাছির গুঞ্জন, মধুর মায়া।
ফসলের মিঠা গন্ধ, তুমি ছড়াও পথজুড়ে,
তোমার ছোঁয়ায় হেমন্তের মাটিতে লেগে থাকে রোদ-ছায়া।

তোমার বুকের গভীরে লুকিয়ে আছে কুয়াশার মেঘ,
হিমের চাদরে মোড়া আকাশের নীলগোধূলি।
তুমি এসেছো, হেমন্তের প্রতিচ্ছবি হয়ে,
তোমার প্রেমের স্বপ্নে ভরে ওঠে রাতের চাঁদনী।

তোমার স্পর্শে কেঁপে ওঠে হেমন্তের শেষ ফুল,
মরিচিকা তুমি, ছায়ার ভেতর সোনালী বৃষ্টি।
তোমার হাত ধরেই জেগে ওঠে মাঠের শস্য,
তোমার অনন্ত শ্বাসে মিশে থাকে সময়ের গতি।

হেমন্তের শেষে তুমি যখন হারিয়ে যাও দূর দেশে,
শুকনো পাতারা তখনও কাঁদে তোমার কথা মনে।
তুমি হেমন্তীকা, মায়াবী রাত্রির গান,
তোমার স্মৃতিতে হেমন্ত ভরে ওঠে, প্রতিটি ঘুমহীন প্রাণ।


দুপচাঁচিয়া,বগুড়া।