(০১)
আধুনিক প্রেমিকা
-বিচিত্র কুমার

নীল আকাশে সাদা সুদর্শন মেঘ দেখে
মেঘপরীরা কেউকেউ হাতছানি দেয় নীড়ে,
কাশ তরুণীরা তুলতুলে তুলার শরীর নিয়ে:
কল্পনাতে চুমু দেয় উতলা হাওয়ায় উড়ে।
কথা চলে দিবানিশি প্রেমিকের সাথে সেলফোনে
ফুল আর ভ্রমরের বেশে যেন গুনগুনে।

টানাটানা চোখে তরুণীরা যেন খুব আধুনিক
ডাক দিলেই চলে আসে বুকে,
রঙিন ঘুড়ির মতো উড়তে আকাশের বুকে
আলো আর আঁধারে আনন্দ আর সুখে।
তারপর আবার হারায় যেন অন্যগ্রহে
প্রেম আর ভালোবাসা মোহে।

দৈনিক চাঁপাই দর্পণ ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ ইং
দৈনিক যুগের আলো ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ ইং

(০২)
তোর প্রেমে পড়েছি
-বিচিত্র কুমার

যেদিন থেকে তোর ছবিটি
এঁকেছি আমার হৃদয় পাঁজরে,
সেদিন থেকেই হয়েছি আমি
রোমান্টিক হিরো রে।

বারবার দেখি যে মুখ
আয়নার দিকে চেয়ে,
কদিন আগে ছিলি তুই
অচিনা এক মেয়ে।

এখন কেন আর পারি না
তোর দিকে না চেয়ে,
বুকে ভিতর আগুন জ্বলে
যেন চিনচিনিয়ে।

ঘুম আসে না চোখের কোণে
দিন ফুরিয়ে যায়,
নির্ঘুম রাতে তোকে নিয়ে
কত না স্বপ্ন দেখে কাটায়।

দিবানিশি ছটফট করি
তোকে দেখার জন্য,
তোর ভালোবাসা পেলেই হবে
তবে আমার জীবন ধন্য।

দৈনিক যুগের আলো ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১ ইং
দৈনিক মানভূম সংবাদ(ভারত)১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ ইং
দৈনিক ঘাঘট ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ ইং

(০৩)
কুমারী মেয়ে
-বিচিত্র কুমার

ওগো কুমারী মেয়ে,
প্রথম দেখাতেই তোমার প্রেমে পড়েছিলাম
ঠিক যেন রমিও মতন
তোমার চোখের না বলা ভাষা বুঝেছিলাম।

তুমি দাঁড়িয়ে ছিলে কপালে কালো টিপ পড়ে
আলতা রাঙা দু'পায়ে সোনার নূপুর পড়ে,
রিমঝিম বৃষ্টিতে খোঁপায় বকুল ফুল বেঁধে
কিম্বা লাল পারা হলুদ বর্ণের শাড়ি পড়ে।

তোমার মায়াবী হাসি আমার হৃদয়ে বাসা বেঁধেছিলো
তোমার সরলতা যেন আমাকে মুগ্ধ করেছিল,
তোমার চঞ্চলতা আমার দুরন্তর মনকে কেড়ে নিয়েছিল
তোমার দুঃখ যেন আমাকে ভাবিয়ে তুলেছিল।

তোমার প্রতি আমার একটা অদ্ভুত টান রয়েছে
যেমন নদীর প্রতি সাগরের টান,
কিম্বা বৃষ্টির প্রতি যেমন মেঘের টান
অথবা দিনের প্রতি যেমন রাতের টান।
ঠিক তেমনি একটা টান।

দৈনিক ঘাঘট ০২ সেপ্টেম্বর ২০২১ ইং
দৈনিক চাঁপাই দর্পণ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ ইং

(০৪)
শরৎ রানী
বিচিত্র কুমার

শরৎ‍ রানী রাঙা সাজে
ওগো কোথায় তুমি যাও?
ও রূপসী কোথায় তোমার গাঁও
একবার ফিরে চাও?

ওই দেখা যায় নয়া গাঁ
চিকন পথটা আঁকা বাঁকা,
ঐ গ্রামেতেই যাচ্ছি আমি
তবে আমার সাথে কী কথা?

স্বপ্নে তোমায় রোজ দেখি
আমি ভীষণ একা,
পাগলা হাওয়ার উদাস সুরে
তোমার সাথে দেখা।

ও ছেলে তুমি উদাস কেন
কই হয়েছে দেরি,
সারা গাঁয়ের চিঠি এসেছে
কাকে যে বন্ধু করি।

বাই আবার হবে কথা
এখন তবে যাই,
ফিরে ফিরে দু'জন দেখি
মনে মনে তোমাকেই চাই।

দৈনিক ফুলবাড়ীয়া প্রতিদিন ০১ সেপ্টেম্বর ২০২১ইং
দৈনিক নতুন প্রভাত ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ ইং
দৈনিক জন্মভূমি ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ ইং
দৈনিক সাতসকাল ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ ইং

(০৫)
রূপশ্রী
-বিচিত্র কুমার

জোছনা রাতে চাঁদের ছায়াতলে
আমি বিছানা পেতেছি বাড়ির ছাদেতে,
শুধু তোমাকে খুঁজি এমন মধুর ক্ষণে
যদি ভালোবেসে পাশে পাই সেই আশাতে।

ওই আকাশে বুকে দেখা যায় শতশত তারা
জ্বলে আর নিভে কত ঝলকে ঝলকে,
ঝিঁঝি পোকা গান ধরে দূরে বিরহের সুরে
ঝোপঝাড়ে জোনাকিরা কথা বলে পলকে পলকে।

রঙধনুর দেশে চাঁদপরী আর মেঘ কুমারেরা
আনন্দে আর উল্লাসে খেলে লুকোচুরি,
কী যেন মায়াবী অপলক চাহনীতে
এখন থেকে ওখানে চাঁদপরী যায় যেন উড়ি।

যেভাবে তুমি তাকাও চাতক পাখির মতো
আমার দিকে চেয়ে চেয়ে,
প্রেমের পরসা সাজিয়ে ভিডিও কলে
নাম জানা কোন এক মায়াবী মেয়ে।

কত কপোত কপোতীরা বাসর সাজায়
এমন মধুর ক্ষণে মনে মনে গোপনে,
তুমি একবার মাথা রেখো আমার বুকে
রূপশ্রী এমন মধুর ক্ষণে।

দৈনিক চাঁপাই দর্পণ ২০ আগস্ট ২০২১ ইং
দৈনিক মানভূম সংবাদ ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ ইং

(০৬)
স্বপ্নভঙ্গ
-বিচিত্র কুমার

কল্পনাতে পাই যে তোকে
বাস্তবতে পাই না,
তোকে নিয়ে স্বপ্ন দেখি
সত্যি কেন হয় না।

স্বপ্নে তোকে জড়িয়ে ধরি
আঘাত খেয়ে দু'জন মরি,  
হঠাত্‍ করে চমকে উঠি
তুই যে শুধু ঘুমের পরী।

ঘুমের মাঝে পাই যে তোকে
প্রেমের মাঝে পাই না,
তুই কেমন করে হবি তবে
আমার প্রিয় ময়না।

চোখ বুজিলেই দেখি তোকে
তুই কেন বুঝিস না,
তোকে কত ভালোবাসি
তুই কাছে আসিস না।

এ হৃদয় মাঝে থাকিস তুই
বলতে যেন পারি না,
একলা একলা শুমরে করি
শয়তে আর পারি না।

ফুলবাড়ীয়া প্রতিদিন ১৮ আগস্ট ২০২১ ইং
দৈনিক চাঁপাই দর্পণ ২২ আগস্ট ২০২১ ইং
দৈনিক যুগের আলো ২৩ আগস্ট ২০২১ ইং
দৈনিক মানভূম সংবাদ(ভারত) ২৬ আগস্ট ২০২১ ইং
দৈনিক সাতসকাল(ভারত) ২৯ আগস্ট ২০২১ ইং

(০৭)
ছলনা
-বিচিত্র কুমার

তুমি উড়ে এসে জুড়ে বসে ছিলে পাখি আমার পাশে
আমিও তোমাকে আপন ভেবেছিলাম ভালোবেসে,
সুখের একটা স্বপ্ন দেখেছিলাম ছোট্ট একটা ঘর বাঁধার
এক সাথে থাকার এক সাথে বাঁচার।
কিন্তু তুমি আবার উড়াল দিলে নীল আকাশে
কচি ডানা মেলে অন্য দেশে।

শুনেছি তোমরা ছোট ছোট ঘর বাঁধ বড় বড় ডালে
কিছুদিন মজা নেও আনন্দ খোঁজ রৌদ্র বৃষ্টির জলে,
প্রজাপতির মতো ফুরফুর করে উড়ে
রথের মেলায় ঘুরে ঘুরে।
আরআমি তোমার প্রেমে দেবদাস হয়ে পথেপথে ঘুরি ওরে
মন বুঝে না রে মন বুঝে না রে।

দৈনিক যুগের আলো ১১ আগস্ট ২০২১ ইং
দৈনিক আপনজন ২২ আগস্ট ২০২১ ইং
দৈনিক

(০৮)
নষ্টানারী
-বিচিত্র কুমার

কোন মৃত্তিকায় তৈরী তুমি
এতো দম্ভ তোমার কিসে,
দুই দিনের এই রুপের বড়াই
করছো ক্ষণিক হেসে।

বৈশ্বিক উষ্ণতার শরীর তোমার
ছড়াও নগ্ন রুপের বিস্ফোরণ,
জাত ধর্মের মাথা খেয়ে
সুশীলসমাজ করছে তোমায় বরণ।

তোমার মগ্ন হাতের মিষ্টি ছোঁয়ায়
জোছনা রাত্রিতে উঠে ফগুনের চাঁদ,
তোমার মুখশ্রীর একঝলক হাসিতে
আছে যেন অমৃত সুরার স্বাদ। 

রুপালী ইলিশের মতো তোমার যৌবন
সোনালী রৌদ্রেতে চিকিমিকি করে,
তরুণ শ্রেণী প্রেমের পসরা সাজিয়ে 
ভ্রোমর বেশে জ্বলেপুড়ে মরে।

তুমি আঁধার রাতের রক্ষসী রানী
দিনের বেলায় রুপসী ময়ূরী,
তোমাকে চিনিছি হে নারী
তুমি এই পৃথিবীতে শত রহস্যময়ী।

দৈনিক চাঁপাই দর্পণ ০৮ আগস্ট ২০২১ ইং
দৈনিক ঘাঘট ২৪ আগস্ট ২০২১ ইং

(০৯)
ও আমার পাখি
-বিচিত্র কুমার

ভালোবেসে কাছে থেকে
তোমাকে যতবার ডাকি
বারবার দূরে যাও
ও আমার পাখি।।

কী ছিলো অপরাধ
ভালোবেসে তোমায়
কাছে এসে বারবার
কাঁদিয়ে য়াও আমায়।।

ভালোবাসা নয়কো
জানি কোন অপরাধ
তবু কেন বিনা দোষে
দিলে আমায় বিষের আঘাত।।

ভালোবেসে কাছে থেকে
তোমাকে যতবার ডাকি
বারবার দূরে যাও
ও আমার পাখি।।

দৈনিক ঘঘট ০৪ আগস্ট ২০২১ ইং

(১০)
সেদিন 
-বিচিত্র কুমার

তোমাকে আমি শতশত প্রজাপতি মাঝে
সেদিন মুগ্ধনয়নে দেখছিলাম বারবার,
তুমি ডানামেলে উড়ছিলে ফুলে ফুলে
আমার দিকে ফিরেও চাওনি একবার।
হয়তো বা অন্য কেউ---
তোমার কল্পনার দ্বার।

কী যে দারুন লাগছিলো তোমায়
রেশমীচুরি আর হলুদ বর্ণ শাড়িতে,
আমার দু'চোখ ফিরাতে পারছিলাম না 
যেন কোন এক অদ্ভুত মায়াতে।
অবশেষে পৃথিবীর বুক চিড়ে সন্ধ্যা নামল
এ সুন্দর প্রকৃতিতে আবার।

ফিরে এসে যখন নিশিতে চাঁদের দিকে তাকাছিলাম
তখন তোমার মায়াবী মুখটি বারবার প্রতিফলিত হচ্ছিল
আমি দু'চোখের পাতা কিছুতেই এক করতে পারছিলাম না
সেই দৃশ্যগুলো বুকের মধ্যে শুধু আনছান করছিল।
ইচ্ছে করছিল রঙতুলিতে তোমার ছবি
এ হৃদয়মাঝে আঁকতে বারবার।

দৈনিক মানভূম সংবাদ(ভারত) ৩১ জুলাই ২০২১ ইং

(১১)
সেই সেই মেয়েটি
-বিচিত্র কুমার

ওগো এই শহরের সেই সেই মেয়ে
পাগল হতে চাই তোমার আঁখি পানে চেয়ে,
চোখ জুড়াবো বুক জুড়াবো তোমার ভেজা চুলে
চায়ের কাপে ঠোঁট ভেজাব চুমুক দিয়ে ভুলে।

হাত বাড়াব পা বাড়াব চাইলে তুমি মেয়ে
বুকের ভিতর আগুন জ্বলে যেন চিনচিনিয়ে,
লুকিয়ে লুকিয়ে দেখি তোমায় চশমার ফাঁকে পথে
তোমায় পাশে পেলে হারিয়ে যাব তেপান্তরের মাঠে।

মাঠ পেরিয়ে বন পেরিয়ে যেতাম স্বপ্নপূরীর দেশে
যেখানে প্রেমিক প্রেমিকারা হাবুডুবু খায় প্রেমসাগরে ভেসে,
হয়তো দু'জনে একটু বসতাম কোন এক ফুল বাগিচার নীড়ে
দুষ্ট মিষ্টি কথা বলতাম হেঁটে হেঁটে সমুদ্রসৈকতের তীরে।

ঘুমের ঘোরে স্বপ্ন দেখে বলে উঠতাম ভালোবাসি
কল্পনাতে আদর দিতাম সোহাগ দিতাম হাজার রাশিরাশি,
আসতে যদি ছুটে তুমি আমার বুকে কেঁদে
বাসতাম ভালো জীবন দিয়ে রাখতাম হৃদয় খাঁচায় বেঁধে।

দৈনিক ঘাঘট ৩০ জুলাই ২০২১ ইং
দৈনিক মানভূম সংবাদ(ভারত) ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ ইং

(১২)
কোন এক পড়ন্ত বিকালে
-বিচিত্র কুমার

যদি কখনো মনে পড়ে আমাকে
তুমি চলে এসো কোন এক পড়ন্ত বিকালে,
সৈই শানবাঁধানো পুকুরের তীরে সখীদের ভীড়ে
এখনো সেখানে প্রজাপতি দল ডানা মেলে।
শিমুল ডালে এসে বসে মাছরাঙা স্বপ্ন দেখে
যেন কোন এক পড়ন্ত বিকালে।

পাতি হাঁসেরা সাঁতার কাটে ভেসে ভেসে জলে
শানবাঁধানো পুকুরের গভীরে ছন্দ সুরে,
হলুদ পাখিরা পাখা ঝাপটায় এসে পুকুরের তীরে
ভ্রমরেরা গান গায় দলবেঁধে দূরে।
স্বপ্ন বাসাবাঁধে অন্তরে অন্তরে মনে মনে
যেন কোন এক পড়ন্ত বিকালে।

আধো-আলো খেলা করে বেলা যায় বয়ে
পাখিরা ঘরে ফিরে শুধু চেয়ে চেয়ে,
মনে পড়ে তোমার কথা যেন ক্ষণেক্ষণে
মুখোমুখি বসতে তুমি গল্পের কাব্য নিয়ে।
কথা হতো চোখে চোখে কথা হতো নীরবে
যেন কোন এক পড়ন্ত বিকালে।

দৈনিক চাঁপাই দর্পণ ৩০ জুলাই ২০২১ ইং
সাপ্তাহিক বাংলাদেশের বার্তা ৩০ জুলাই ২০২১ ইং
দৈনিক প্রান্তজ্যোতি(ভারত) ০১ আগস্ট ২০২১ ইং

(১৩)
ছিঁড়া ডাইরীর পাতা

রঙিন পাতায় লিখিছি কত
ভালোবাসার চিঠি,
আবার মনের অজান্তে কখন যে
ছিঁড়ে ফেলেছি যথারীতি।

শীতে যেমন ঝরে পরে কত না
গাছের লতা-পাতা,
তেমনি কিছু ভালোবাসা কথা লেখা হয়
ছিঁড়া ডাইরীর পাতা।

পথের ধারে কত নানা ফুল ফোটে
সবার কপালে কী আর ফুলদানী টা জোটে?
ভালোবাসা ঠিক পথের ধারে ফোটা ফুলের মতো
তবু সবাই ফুলদানীর আশায় ছোটে।

একদিন আমারও স্বপ্নিল আকাশে
ছিলো এক চাঁদনি ,
সে রোজ পাখি মতো ডাকতো 
আমায় দিয়ে হাতছানি।

সে আর নেই আমার,হারিয়ে গেছে বহুদূরে
শুনেছি অন্য এক গ্রহে,
পৃথিবী যেমন করে ঘোরে নিজ অক্ষ পথে
                                  ঠিক তেমনি করে
চিরন্তন ভালোবাসার মোহে। 

দৈনিক ঘাঘট ১৭ জুলাই ২০২১ ইং
দৈনিক যুগের আলো ২৬ জুলাই ২০২১ ইং
দৈনিক নতুন প্রভাত ০৬ আগস্ট ২০২১ ইং

(১৪)
শুধু তোমাকে চাই
-বিচিত্র কুমার

তোমাকে চাই,শুধু তোমাকে চাই,
শয়নে স্বপনে জাগরণে শুধু তোমাকে চাই,
সুখে-দুখে জীবনে-মরণে শুধু তোমাকে চাই,
শুধু তোমাকে চাই,শুধু তোমাকে পাশে চাই।

সবুজ মাঠে তোমাকে চাই,
সোনালী বিকালে তোমাকে চাই,
খোলা আকাশে তোমাকে চাই,
মুক্ত বাতাসে তোমাকে চাই,
শুধু তোমাকে চাই,শুধু তোমাকে পাশে চাই।

জোছনা ভরা আকাশে তোমাকে চাই,
ফুল ভরা বাগানে তোমাকে চাই,
ঝিকিমিকি রৌদ্রে তোমাকে চাই,
চাঁদনী রাতে তোমাকে চাই,
শুধু তোমাকে চাই,শুধু তোমাকে পাশে চাই।

নদী যেমন করে মোহনা চায়,
মেঘ যেমন করে নীড় চায়,
চাঁদ যেমন করে চাঁদনীকে চায়,
দিন যেমন করে রাত্রিকে চায়,
আমিও ঠিক তেমনি করে শুধু তোমাকে চাই,
এ জীবনে শুধু তোমাকে পাশে চাই।

দৈনিক মানভূম সংবাদ(ভারত) ১৫ জুলাই ২০২১ ইং

(১৫)
স্বপ্নের ফেরিওয়ালা
-বিচিত্র কুমার

আমি যে এক স্বপ্নের ফেরিওয়ালা
স্বপ্ন বেচতে বেচতে কাটে সারাবেলা,
হরেক স্বপ্ন সোনালি গোলাপি লাল নীল
আমি যে এক উড়ন্ত চিল।
কোথায় থেকে কোথায় যাই
একটুকু যদি সুখ পাই।

তোমরা তো শুধু ইশারাতে ডাকো এসো এসো
ও ফেরিওয়ালা ও ফেরিওয়ালা কাছে এসো,
একটা আশার স্বপ্ন দাও একটা বাঁচার স্বপ্ন দাও
একটা প্রেমের স্বপ্ন দাও একটা ভালোবাসা স্বপ্ন দাও।
ও ফেরিওয়ালা তোমার কাছে এ সব আছে
ফিলিক্স পাখি গাছের ডালে নাচে।

ও ফেরিওয়ালা তোমার কী আছে সেটাই দাও?
এই দিলাম ভালোবাসার রঙিন স্বপ্ন নাও,
এবার তুমি দাম দাও একি তুমি না এক উড়ন্ত পাখি
ভালোবাসার দাম দিলে না আমায় দিলে ফাঁকি।

দুপচাঁচিয়া,বগুড়া,বাংলাদেশ।

দৈনিক যুগের আলো ১১ জুলাই ২০২১ ইং
আন্তর্জাতিক সাপ্তাহিক পলাশ ০৮ জুলাই ২০২১ ইং

(১৬)
প্রেমিকা
-বিচিত্র কুমার

যে সুখ পাখিটি আমার মনের খাঁচায় বাসা বেঁধেছিলো
তাকে মুক্ত দিলাম সব মায়ার বাঁধন থেকে মুক্ত আকাশে,
জোর করে বেঁধে রেখে লাভ কী সে ঠিক মতো আর খায় না 
আগের মতো আর মন খুলে আমার সাথো কথা বলে না
                                            শুধু যেতে চায় দূূর বিদেশে।

যে যেতে চায় তাকে আটকে রাখা বড্ড দায় মনের খাঁচায়
ভালোবাসা কী এতই সস্তা যে লিখে ভরে রাখা যায় ডাইরির খাতা,
হৃদয় ডাইরির পাতায় যদি থাকে সত্যিকারের ভালোবাসা আঁকা
সেখান থেকে মুছে ফেলা যায় না স্মৃতির পাতা।

সারাটি জীবন সহিতে হয় অন্তর জ্বালা বিষের ব্যাথা
যদি অতি আপন জন দেয় ধোঁকা,
অবহেলা অপমানে অন্তর জমিন পুড়ে পুড়ে ছাই হয়
সেটা তুমি বুঝলে না রেখা।

হাজার শখের পোষা পাখি যদি কেউ ছেড়ে দেয়
শুধু সেই জানে তার নিথর মন কত কথা কয়,
পাষাণ বাঁধে বুকের মাঝে অশ্রুর সাগর বয়
নিজেকে আগ্নেয়গিরির মতো জ্বালাই পোড়ায়।

দৈনিক ঘাঘট(গাইবান্ধ)০৫ জুলাই ২০২১ ইং

(১৭)
মাধুরী

তোমার মুখটি দেখেছি আমি
এক জোছনা মুখোরীত উজ্জ্বল নোভাতে,
তুমি হাতে হাত রেখেছিলে স্বপ্নে
হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে গেল চমকে প্রভাতে।

পাখির কলকালরির মতো তোমার কণ্ঠধ্বনি
শুধু এসে দু'কানে পড়ে,
আমি উঠিউঠি ভেবেও উঠতে পারি না
দু'চোখে শুধু দুষ্টুকল্পনা ঘোরে ফিরে।

অবশেষে তুমি একাকী পালিয়ে গেলে
দিনের আলোয় লজ্জা পেয়ে,
তোমার দীঘলকালো চুলগুলো পড়ছিলো
আমার চোখে মুখের পর চেয়ে চেয়ে ।

ও যেনো ছিলো এক নীলকণ্ঠ পাখি
খিলখিল করে হেসে চলে গেল মাধুরী,
মুখ তার চাঁদের মতো শিল্পীর আঁকা ছবি
ইচ্ছে করে ভলোবাসার সুতোয় ধরি।

দৈনিক ঘাঘট,৩ এপ্রিল ২০২১ ইং
দৈনিক মানভূম সংবাদ(ভারত)০৫ জুলাই ২০২১ ইং

(১৮)
তুমি যদি আসতে
-বিচিত্র কুমার

কোন এক বৃষ্টি ভেজা দিনে যদি তুমি আসতে
একটু ভালোবেসে কাছে এসে হাসতে,
তোমার মায়াবী মুখটি দেখতাম আমি কল্পনাতে
দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এক পসলা বৃষ্টিতে।

কমদ ফুল হাসতো কলমিলতা ভাসতো
বাদলা হাওয়া নাচতো,
উতলা ব্যাঙের মতো শুধু ডাকতাম
মনে মনে রঙিন স্বপ্ন আঁকতাম।

ইচ্ছে নদীতে দু'জন সাঁতার কাটতাম
দুষ্টু চাওয়ায় হাতে হাত রাখতাম,
মেঘ আর বৃষ্টির মতো প্রেমকাব্য লিখতাম
একটা সুখের স্বপ্ন দেখতাম।

তোমাকে নিয়ে যেতাম রঙধনুর দেশে
মেঘের ভেলায় ভেসে ভেসে,
দূর আকাশে রূপকথার দেশে
গানে গানে ভালোবেসে।

দৈনিক চাঁপাই দর্পণ ০২ জুলাই ২০২১ ইং
দৈনিক যুগের আলো ০৫ জুলাই ২০২১ ইং

(১৯)
শেষ বিকালের মেয়ে
-বিচিত্র কুমার

পৃথিবীর সমস্ত আলোক রশ্মি নিয়ে তুমি চলে যাচ্ছিলে
সেদিন পড়ন্ত বিকালে তোমাকে দেখেছিলাম,
একঝলক মিষ্টি হাসি দিয়ে নিজ গন্তব্যের দিকে
আর আমি নিস্তব্ধ পৃথিবীর মতো দাঁড়িয়ে মুগ্ধ হচ্ছিলাম।

টিপটিপ বৃষ্টি পড়চ্ছিলো অরণ্য আর বনে ফুলে ফুলে
পৃথিবীর সমস্ত স্নিগ্ধতা যেন ঝরচ্ছিলো তোমার চাঁদ মুখে,
ঝর্ণার বুকে যেমন রঙধনুর সাতটি বর্ণিল রূপ
ঠিক তেমনি কাজলে আঁকা ভ্রুর ফাঁকে মায়াবী দুটি চোখে,

সেদিন তুমি সাদাপারা হলুদ বর্ণের শাড়ি পড়েছিলে
শ্রাবণের মেঘের মত ঘনকালো চুলে কদমফুলে বেঁধেছিলে,
কপালে কালো টিপ নাকেতে নথ দু'কানে ঝুমকা
সাদা আর হলুদ রঙে রঙে সেজেছিলে।

নকশীকাঁথার মতো মেহেদী আঁকা দু'হাতে পড়েছিলে চুরি
তুমি হেঁটে যাচ্ছিলে নরম মাটির উপর,
আমি শুধু নিস্তব্ধ দাঁড়িয়ে দেখছিলাম সেই অপরূপ
আলতা রাঙা পায়ে বাঁজচ্ছিলো ঝুমুর ঝুমুর নূপুর।

দৈনিক ঘাঘট ২৪ জুন ২০২১ ইং

(২০)
প্রতীক্ষার প্রহর
-বিচিত্র কুমার

আমি একগুচ্ছ কদম ফুল নিয়ে দাঁড়িয়ে
শুধু তোমার প্রতীক্ষায় আর প্রতীক্ষায়
এত প্রতীক্ষা কেন কবি?
একটা স্বপ্নের পৃথিবী সাজাবো বলে
যুগযুগ ধরে কত প্রতীক্ষার প্রহর গুনেছি
সেখানে তুমি আর আমি হারাব স্বপ্নের দেশে?
এটা কী সম্ভব কবি?
কেন নয় বলো?
আমি কী বেশি কিছু চেয়েছি, না তবে?
আচ্ছা আমি যদি আকাশ হই তুমি বৃষ্টি হবে
দুজনে মেঘের ভেলায় চড়ে হারিয়ে যাব দূর বিদেশে,
সুখতারাদের মতো রাতে মিটিমিটি জ্বলব আমরা দুজন
হাতে রেখে হাত গল্প করব ছন্দ সুরে রঙধনুর দেশে।
এত স্বপ্ন হি হি হি
এমন করে হেসো না সুখ পাখি
আমি যে দম বন্ধ হয়ে মরে যাব
তাহলে কী চাও তুমি?
তোমাকে,একটা নতুন স্বপ্নকে, একটা নতুন আশাকে
একটা সত্যিকারের ভালোবাসাকে।
তুমি একটা পাগল কবি
তোমার জন্যে যদি পাগল হতে পারতাম
তাহলে একটা স্বপ্নের পৃথিবী গড়তে পারতাম।
তাহলে আমি কী তোমার সুখ পাখি নই?
হ্যাঁ,কিন্তু
কিন্তু আবার কী কবি?
আমিও তো রক্তে মাংসে গড়া মানুষ
আমারও তো একটা মন আছে,একটা স্বপ্ন আছে
বুকের মধ্যে জমা ভালোবাসা আছে।
তুমি তো কখনো আগে বলোনি পাখি
তুমি আমাকে এতটা ভালোবাসো
সব কথা কী বলতে হয় মুখে কবি?
কিছু কথা বুঝে নিতে হয়।

দৈনিক ঘাঘট ২২ জুন ২০২১ ইং

বিজুলি মেয়ে ও আকাশ
-বিচিত্র কুমার

তোর মায়াবী চোখে চোখটি রেখে
আমার কাটে রঙিন দিন,
ইচ্ছে নদীয় আমি হারিয়ে যাই
বুকের মধ্যে বাজে সুখের বীণ।

বুকের মধ্যে বিজুলি চমকায়
যখন তুই ফিরে ফিরে চাস,
মধ্য দুপুর উতাল পাতাল
তুই যখন চলে যাস।

একটুখানি তুই দূরে গেলে
নীল আকাশ কালো হয়ে যায়,
রঙধনুর রঙ মিশে যায় দিকেদিকে
আকাশের বুকে বৃষ্টি শুখিয়ে যায়।

তুই তাকাস কেন আমার দিকে
বুকের ভিতর আঁকিস কেন আকাশ?
তুই তাকালেই থমকে দাঁড়ায়
আমার বুকের বাঁ পাশ।

দৈনিক মানভূম সংবাদ(ভারত)২২ জুন ২০২১ ইং

মায়া সভ্যতা
-বিচিত্র কুমার

একটা সত্যিকারের ভালোবাসার জন্যে আমি
হাজার কোটি বছর ধরে রঙিন পথে হেঁটেছি,
সেই তাজমহল থেকে মিশরের পিরামিড চূড়া
কিম্বা হিমালয় থেকে আল্পাস চূড়া।
কোথাও খুঁজে পাইনি একটু সত্যিকারের মমতা
পুরো পৃথিবীটা শুধু একটা মায়া সভ্যতা।

দৈনিক বিবৃতি ২০ জুন ২০২১ ইং
সাপ্তাহিক বজ্রকথা ২০ জুন ২০২১ ই
দৈনিক ফুলকি ২০২১ জুন ২০২১ ইং
দৈনিক আলোকিত প্রতিদিন ১ জুলাই ২০২১ ইং
দৈনিক সংগ্রাম ২৭ আগস্ট ২০২১ ইং

তোমার বর্ণনা
-বিচিত্র কুমার

তুমি ছিলে কবিতার ছন্দের মতো মিষ্টি
কী মায়াবী তোমার দু'চোখের দৃষ্টি,
ঠিক যেন জোছনা রাতের পূর্ণিমার চাঁদ
কিম্বা উতলা নদীর ভাঙা এক বাঁধ।

কালোমেঘের মতো চুলগুলো উড়চ্ছিল
দুকানে কদম ফুলের ঝুমকা দুলচ্ছিল,
ঠিক যেন তুমি এক লজ্জাবতী
কিম্বা রঙের রানী প্রজাপতি।

তুমি রাখালিয়া বাঁশির মিলের সুর
বারবার মনে হয় নয় বহুদূর,
দেখেছি হৃদয়ে ভয়াবহ দাবানল
কিম্বা বটের ছায়ার মতো শীতল।

তুমি জলতরঙ্গীর মতো আবেগী
নীরবে বয়ে চলা অভিমানিনী নদী,
দেখেছি তোমায় প্রথম বর্ষার মৌসুমে নারী
পড়েছিলে যেন হলুদ বর্ণের শাড়ি।

দৈনিক ঘাঘট ২০ জুন ২০২১ ইং

প্রেমসাগরে হাবুডুবু
-বিচিত্র কুমার

এসেছে আষাঢ়ও শ্রাবণ বয়ছে উরুউরু বাতাস 
রংধনুর রঙে ছেয়েগেছে প্রেমিকের রঙিন আকাশ, 
এদিকে প্রেমিকা প্রতীক্ষার প্রহরগুনছে একটি বছর ধরে
কদম ফুলের পরসা সাজিয়েছে তার নীড়ে।

অসংখ্য সবুজ পাতার ফাঁকে তার ডাগর দুটি আখিঁতে
সে যেন সেজে রয়েছে সাদাপারা হলুদ বর্ণ শাড়িতে,
তার শুধু ইচ্ছে করে আকাশের বুকে উড়তে ডানামেলে
প্রজাপতির মতো ফুরফুর করে হেসে খেলে।

যেখানে পাতি হাঁসেরা প্রেমসাগরে হাবুডুবু খায়
ভেসেভেসে সাঁতার কাটে রঙের মেলায়,
ঝুমুর ঝুমুর বৃষ্টি পড়ে মন করে হায় ব্যাকুল!
ডোবার জলে ব্যাঙেরা হেসে না পায় কূল।

লিচু বনের আড়ালে কেউ আবার চিঠি লেখে
রংধনুর সবরঙ তার সমগ্র শরীরে মেখে,
জুঁই কেয়া মালতীলতা হাসে হিজল বনে
ময়ূর মযূরীরা নৃত্য করে বর্ষার দিনে।

দৈনিক ঘাঘট ১৬ জুন ২০২১ ইং

অপরূপা বৃষ্টি ও আকাশ
-বিচিত্র কুমার

মেঘলা আকাশ যখন তাকায় অপরূপা বৃষ্টির দিকে
হঠাৎ তখন বিজুলি চমকায় চতুর্দিকে মেঘ ডাকে
লজ্জাবতীর মতো লাল হয়ে বৃষ্টি পালায় রঙধনুর দেশে
উতলা দেওয়া আবেগে বৃষ্টিকে ডাকে।
তখন আধ-আলো লুকোচুরি চলে জগৎ জুড়ে
দু-জনে লুকিয়ে কথা বলে ছন্দ সুরে সুদূরে।

ভিরুভিরু চোখে আকাশ বলে,এতদিন কোথায় ছিলে?
অপলক দৃষ্টিতে বৃষ্টি বলে,আপনার নীল আকাশেই ছিলাম আমি,
কিন্তু আপনে হাজার তারার মাঝে আমাকে দেখতে পাননি?
আকাশ বলে ও তাই বুঝি?
হঠাৎ আন্ধকার নেমে এলো রঙিলা পৃথিবীর বুকে
তবু একঝলক হাসি ওদের চোখে মুখে।

অতঃপর-
কখন যে হঠাৎ বৃষ্টি এলো মনের অজান্তে
কিছু ক্ষণ কিছু মধুর স্মৃতি থেকে গেল মনে।

দৈনিক সাতসকাল(ভারত)১৩ জুন ২০২১ ইং
----------------------------------------------------------------------------------------------
বর্ষারাণী
-বিচিত্র কুমার

ছলাৎ ছলাৎ জলে মেয়ে কুটিকুটি হেসে
বর্ষারাণী হাতছানি দেন একাকী আমায় বাহিরে,
চুলগুলো তার দীঘলকালো আষাঢ়ের মেঘের মতো
নিপুণ হাতে কচি পাতার বোনা শাড়ি পড়ে দাঁড়িয়ে।

দু'কানে তার ঝুমকা দোলে কদম ফুলে ফুলে
নাকের নথ বানিয়ে নিয়েছে কলমিলতা দিয়ে,
খোঁপাতে তার ফুলের সুবাস বর্ষার ফুল বেঁধে
ডাগর ডাগর দু'চোখ মেলে চায় যেন মেয়ে।

হলুদ বর্ণ রূপ তার মায়াবী মুখের হাসি
যেন হাজার ফুলের মাঝে রঙিন এক পাখি,
ঠোঁট দুটি তার লালটুকটুক ঠিক বেদানার দানা
হঠাৎ যখন খুলে দেখি আমি দুটি আঁখি।

তখন কুটিকুটি হেসে ছলাৎছলাৎ জলে লুকোচুরি মেয়ে
ও যেন হেঁটে যায় অরণ্য আর বনে বৃষ্টি বাদল দিনে,
সুদূরে দেখা যায় হলুদ একটি পাখি স্বপ্নের দেশে
বারবার আমাকেই ডাকছে নিত্য আর গানে।

দৈনিক ঘাঘট ১৩ জুন ২০২১ ইং
দৈনিক মানভূম সংবাদ(ভারত)১৫ জুন ২০২১ ইং
দৈনিক যুগের আলো ১৬ জুন ২০২১ ইং
দৈনিক ঊষার বাণী ০১ জুলাই ২০২১ ইং

বৃষ্টি জলে হলুদ মেয়ে
-বিচিত্র কুমার

হঠাৎ সেদিন বৃষ্টি জলে নিত্য করে হলুদ মেয়ে
অসংখ্য সবুজ পাতার ফাঁকে মিষ্টি হাসি মুখে,
সে যেন সেজে রয়েছে সাদাপারা হলুদ বর্ণ শাড়িতে,
এলোমেলো চুলে কাজল মাখা দু'চোখে।

কী অপরূপ লাগচ্ছিলো তুলতুলে গা দুলচ্ছিল
পাপড়ি গুলো উড়চ্ছিলো হাওয়ায় হেসেহেসে,
গুনগুনিয়ে ভ্রমরেরা গায়চ্ছিল বৃষ্টি জলে ভিজে
ফুল কলিদের সাথে আনন্দে নাচে আর উল্লাসে।

বৃষ্টি পড়ে টাপুরটুপুর মন করে হায় ব্যাকুল
ঘোলা জলে ব্যাঙেরা সব কাদা মেখে খেলে দোল,
পাতিহাঁস সাঁতার কাটে বৃষ্টির জলে এমন মধুর ক্ষণে
কুটিকুটি হাসে কদম ফুল একাই বনে আর জঙ্গল।

বৃষ্টি পড়ে আকাশ থেকে হিমেল হাওয়ায় উড়ে সে
দূর আকাশে চায় যেতে মায়ায় বাঁধা কদম গাছে,
হঠাৎ সে চায় আমার দিকে অপলক দৃষ্টিতে
লজ্জায় তার লাল মুখটি ঢাকে রঙধনুর পাশে।

দৈনিক যুগের আলো ০৯ জুন ২০২১

একবিংশ শতাব্দীর মেয়ে
-বিচিত্র কুমার

ওগো একবিংশ শতাব্দীর মেয়ে
তোমার মনটা চাই দিবে,
তোমার দু'চোখের অশ্রু চাই
আমাকে একটু দিবে।

তোমার দুঃখ চাই তোমার কষ্ট চাই
তোমার অভিমান চাই অনুরাগ চাই,
তোমার অনুভব চাই অনুভূতি চাই
তোমার স্নেহ চাই ভালোবাসা চাই।

তোমার মুখশ্রীর মিষ্টি হাসি চাই
তোমার বাঁকা নয়নের গভীরতা চাই,
তোমার নিখুঁত প্রেমের ভালোবাসা চাই
তোমার অন্তরের একটু সুখ চাই

তোমার দুফোঁটা অশ্রু চাই
তোমার নরম হাতের স্পর্শ চাই,
তোমার খোঁপার ফুল হতে চাই
তোমার কপালের টিপ হতে চাই।

ছোট্ট একটা সুখের জীবন চাই
সত্যিকারের একটা ভালোবাসা চাই,
ওগো একবিংশ শতাব্দীর মেয়ে আমার হবে
শুধু তোমাকে চাই।

দৈনিক ঘাঘট ০৪ জুন ২০২১ ইং
দৈনিক মানভূম সংবাদ(ভারত) ১৭ জুন ২০২১ ইং

একটা বর্ষার প্রতীক্ষা
-বিচিত্র কুমার

আকাশ কিম্বা মেঘের স্পর্শে
বৃষ্টি তুমি রঙধনুর সাত রঙে সাজো,
শুধু আমার জন্যে আমার জন্যে
হয়তো একটা বর্ষার প্রতীক্ষায় আজো।

যুগযুগ ধরে হয়তো আমিও একীভাবে
শুধু তোমার প্রতীক্ষায় আছি দাঁড়িয়ে,
যতটুকু ভালোবাসা আছে আমার হৃদয়ে
সবটুকু বিলিয়ে দিয়ে তোমাকে জারিয়ে।

সারাটা জীবন হৃদয় কারাগারে বন্দি করে রাখব
তোমাকে আমার স্বপ্নিল আকাশের বুকে,
শুধু একবার দু'চোখ খুলে দেখ আমাকে
ভালোবাসা আর স্বর্গ সুখে।

দৈনিক ঘাঘট ০১ জুন ২০২১ ইং
দৈনিক সংগ্রাম ০৪ জুন ২০২১ ইং
দৈনিক যুগের আলো ০৬ জুন ২০২১ ইং
দৈনিক ঘাঘট ১৭ জুন ২০২১ ইং

প্রেম করতে হবে তা কিন্তু নয়
-বিচিত্র কুমার

তোমার সাথে রোজ রোমান্টিক কথা বলছি দেখে
আমি যে তোমাকে ভালোবাসি তা কিন্তু নয়,
আমি চাই আমার একজন ভালো বন্ধু থাকুক
সে মন খুলে আমার সাথে সারাক্ষণ কথা বলুক
                          প্রেম করতে হবে তা কিন্তু নয়।

আমি যে তোমাকে খুব মিস করি সবসময়
আমি যে তোমাকে ভালোবাসি তা কিন্তু নয়,
আমি চাই কেউ একজন আমাকে মিস করুক
আমি ভালো আছি কি না জিজ্ঞাসা করুক
                             প্রেম করতে হবে তা কিন্তু নয়।

আমি জানি প্রেম-ভালোবাসা মানে একটা ফিলিক্স
দু'জনার চাওয়া-পাওয়া দুটি মনের মিলন,
কিন্তু এই ঘোরকলিতে ভালোবাসার মূল্য কে দেয় বলো?
সবাই তো দেখি কাম-বাসনা নিয়ে পরে থাকে
  মনে হয় এটাই যেনো এখনকার ডিজিটাল জীবন।

আমি বলছি না তোমাকে প্রেম করতে হবে
আমি চাই আমার একজন ভালো বন্ধু থাকুক,
সে সারাক্ষণ আমাকে কিছু একটা বলুক
আমি কেমন আছি জিজ্ঞাসা করুক?

দৈনিক ঘাঘট ২৯ মে ২০২১ ইং

বৃষ্টি তোমাকে ভালোবাসি
-বিচিত্র কুমার

বৃষ্টি তোমায় খুব ভালোবাসি আমি
তুমি চিকমিকিয়ে নিত্য করো হেসে হেসে য়াও,
তুমি তো আমার বুকের মাঝে লুকিয়ে থাকো গাও
মাঝে মাঝে আমাকে ভিজিয়ে দিয়ে ফিরে ফিরে চাও।

কদম ফুল তাকিয়ে থাকে রঙধনুটার দিকে
তুমি কুটিকুটি হাসো যেন নাচে নাচে,
চাঁদের সাথে কওনা কথা যাও না আর দূরে
তুমি তাকালে মনে আমার শান্তি ফিরে আসে।

তুমি ছাড়া নীল আকাশে কালো মেঘ ভাসে
কালবৈশাখী বারেবারে ফিরে ফিরে আসে,
সুন্দর এই পৃথিবীটা তচনচ হয়ে যায়
কচি বুকের স্বপ্ন ভেঙ্গে যায়।

জুঁই কামিনী ঘাসফুলে ভরিয়ে দিব তোমার পাও
কেন তুমি আমায় ছেড়ে দূরে দূরে য়াও?

দৈনিক চাঁপাই দর্পণ ২৯ মে ২০২১ ইং
দৈনিক মানভূম সংবাদ(ভারত) ০১ জুন ২০২১ ইং

ভুল গন্তব্যে
-বিচিত্র কুমার

কত বসন্ত এলো কত ফুল ফুটলো
আবার কখন যে ঝরে গেলো
মনের অজান্তে কিম্বা স্বপ্নের মধ্যে
জানতেই পারলাম না ভুল গন্তব্যে।

ঠিক তেমনি কিছু সম্পর্কও হয়
আবার নীরবে ফুলের মতো ঝরে যায়,
কেউ জানে না জানে শুধু দু'জনার অন্তর
প্রেমিক প্রেমিকার ভাঙ্গে শুধু সুখের ঘর।

একদিন তোমার আমার সম্পর্কও মধুর ছিলো
বসন্তের রঙিন ফুলের মতো হেসেছিলো,
তোমার সৌন্দর্যের বিভোরে আপন করে নিয়েছিলাম
আমার অন্তরের ভিতরে বাহিরে স্থান দিয়েছিলাম।

কিন্তু কখনো খিহাল করিনি যে এ সম্পর্ক শুধু ক্ষনিকের
একদিন শেষ হয়ে যাবে আমার স্বপ্নের নীড়,
তবু আবেকে ফুলে ফুলে সাজিয়েছিলাম স্বপ্নের অট্টালিকা
অবশেষে আমাকে ফাঁকি দিয়ে চলে গেল সেই অনামিকা।

দৈনিক ঘাঘট ২৭ মে ২০২১ ইং
দৈনিক আজকের প্রত্যাশা ২৮ মে ২০২১ ইং

-------------------------------------------++---+++++++++++++++++++

স্বপ্নপূরীর দেশে
-বিচিত্র কুমার

ইচ্ছে হলে আবার এসো ফিরে কোন এক বর্ষার দিনে
এই বাংলায় নকশীকাথাঁর মাঠে অঝোর ধারায় বৃষ্টি নামলে,
দুজনে একটু ভিজবো মুক্ত স্বাধীন নীল আকাশের নীচে
মুক্তা হাওয়ায় মুক্ত বেশে মুক্ত মাঠে মুক্ত নদীর কূলে।
হাতে রেখে হাত দুজনে একটু হাঁটবো স্বপ্নপূরীর দেশে
তুমি আর আমি একাএকা হাওয়ায় ভেসে ভেসে।

তখন হয়তো চোখে পড়বে ময়ূর ময়ূরীরা নিত্য করছে
সুদূরে স্বাধের বৃষ্টির জলে কত না হেসে খেলে,
পাতি হাঁসেরা সাঁতার কাটছে আনন্দ আর উল্লাসে
ভেসে ভেসে মায়াবী এক নদীর জলে।
হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ আমরা ভিজে যাব একপসলা বৃষ্টিতে
তুমি যেন আমার দিকে চেয়ে থাকলে অপলক দৃষ্টিতে।

হয়তো তখন আমি একগুচ্ছ কদম ফুল তুলি
তোমার খোঁপায় গেঁথে দিব,
হেঁটে হেঁটে মাতাল হাওয়ায় দুজনে গল্পের দেশে
হাতে রেখে হাত সবুজ শ্যামল বাংলায় হারাব।
আবার যদি তুমি ফিরে এসো প্রিয়া সেই চিরচিনা স্বপ্নপূরীর দেশে
এখনো সেখানে আমি তোমার প্রতীক্ষা দাঁড়িয়ে থাকি একাকী বেশে।

দৈনিক ঘাঘট ২৩ মে ২০২১ ইং

তোমার দু'চোখের ভিতর প্রেম দেখেছি
-বিচিত্র কুমার

তোমার দু'চোখের কালো পাতার ভিতরে
আমি এক রঙিন স্বপ্নিল আকাশ দেখতে পেয়েছি,
কপালেতে কালোটিপ লালঠোঁটের পাপড়ির উল্লাস
টলমলে অশ্রু আর বৃষ্টির শতশত ফোঁটা দেখেছি।

মনে হচ্ছিল তুমি কারু জন্যে প্রেমের পরসা সাজিয়ে
কোটি কোটি বছর প্রতীক্ষার প্রহর গুনছিলে,
তোমার মুখশ্রীর এক ঝলক মিষ্টি হাসি যেন
সেই কথাটাই বলেচ্ছিল ফুটন্ত ফুলে ফুলে।

ওইখানে সবুজ পাতার ভিড়ে শুভ্রফুলের পাপড়িতে
রকমারি প্রজাপতি ফুরফুর করে উড়চ্ছিলো,
তোমার দীঘলকালো চুলে গণসমুদ্রের ঢেউ নেমেছিলো
ফুলের সুঘ্রাণে অচিনা নীলভ্রমরেরা ঘোরাফিরা করছিলো।

আমি শুধু দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিলাম সেই স্বপ্নপূরী
তোমার দু'চোখের কালো পাতার ভিতরে,
তুমি স্নিগ্ধ দুটি আঁখি খুলে বললে,এতদিন পরে আপনি?
         কী খুঁজে পেয়েছেন আপনার স্বপ্নপূরী?
আমি বললাম কাছেই রয়েছে সেতো নয় বহুদূরে?

দৈনিক বাংলা ২১ মে ২০২১ ইং

দু'ফোঁটা অশ্রু
-বিচিত্র কুমার

এ জীবনে সব পেয়েছি পাইনি কারু মন
একলা একলা কাটে গেল আমার সারাটা জীবন,
চাই না আমি তোমার লগ্ন দেহ আহার ভরা বুক
শুধু আমি চেয়েছিলাম দু'ফোঁটা অশ্রু করব বরণ।

সেই আশাতে হাত বাড়ালাম রঙিন পৃথিবীতে
এমন কেউ কী নেই এই জগতে?
ঘর থেকে দু'পা ফেলিয়ে দেখি বাড়ির আগিনাতে
একটি রঙিন প্রজাপতি সুদূরে পুষ্প বাগানাতে।

রঙে ঢ়ঙে খেলছে কত রঙিন ফুলে ফুলে
এদিকে সেদিকে মৌমাছিরা ফুলের মধু খাচ্ছে,
মিষ্টি একটা সুবাস চারদিকে ছরিয়ে পড়েছে
ভ্রমররা ফুলে ফুলে উল্লাসে নাচানাচি করচ্ছে।

সে হাতছানি দেয় আমাকে গোপনে ডাগর ডাগর দুটি চোখে
তার এক ঝলক মিষ্টি হাসি যেন লেগে ছিলো মুখে,
সে বললো, আমি হলাম রঙের রানী নিবেন আমার রঙ
আমি আপনার একাত্বতা দূর করে দিব সুখে?

উওরে আমি বললাম আমি শুধু দু'ফোটা অশ্রু চাই
আছে তোমার কাছে
আমি আর রঙিন স্বপ্ন দেখতে চাই না সে মৃদুস্বরে বললো,
আমার দু'চোখের নদী শুকিয়ে গেছে প্রথম ফাগুনবেলা ভালোবেসে
তবে আপনে নদীর কাছে যান ওর অনেক জল আছে।

মাঠ পেরিয়ে বন পেরিয়ে অনেক কষ্টে গেলাম নদীর কাছে
একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বললাম, একটা সত্যিকারের ভালোবাসা চাই,
তুমি দিতে পারবে আমায় তোমার দু'ফোঁটা অশ্রু উপহার
সেও মৃদুস্বরে বললো আমার সব কিছু সাগরকে উজার করে দিয়েছি
                   এখন আপনাকে দিবার মতো আমার আর কিছু বাকী নেই?

আপনেও ইচ্ছে করলে আমার নদীতে সাঁতার কাটতে পারেন
যত খুশি তত,
অবশেষে চোখের পর্দা খুলে হঠাৎ দেখি
বোন হাঁসেরা সেই রূপসী নদীতে হাবুডুবু খাচ্ছে কত।

দৈনিক ঘাঘট ২০ মে ২০২১ ইং

(০১)
অভিমান
-বিচিত্র কুমার

এখন আর তোমার প্রতি কোন অভিমান হয় না
যেদিন থেকে জেনেছি তুমি আমার কেউ না
তাই তোমার প্রতি আমার আর কোন অভিযোগ নেই
কখনো আর তোমার প্রিয় নাম ধরে ডাকবো না।

বারবার মনে পড়লেও কখনো আর আমি বলবো না
তোমাকে আর কতদিন ধরে দেখি না,
এসো না দেখা করি দুজনে কোথায় বাড়াতে যাই?
গড়ম চায়ের চুমুতে চুমুতে আর স্বপ্ন আঁকবনা।

তুমি তো উড়ন্ত পাখির মতো এ ডালে ও ডালে বসো
পাতার ফাঁকে লুকিয়ে লুকিয়ে কথা বলো,
চাঁদের আলো ভালো লাগে তোমার রঙধনু রঙ
জানি না আরো কত প্রেম প্রেম খেলো।

তোমার স্বরূপ জেনে ফেলেছি চিনিছি তোমায় আমি
আমার চেয়ে অন্য কেউ তোমার কাছে দামি,
কালোমেঘে ছেয়ে গেছে মনের আকাশ বজ্রবৃষ্টি হচ্ছে
তবু তোমায় আর মনে করবো না আমি।

ভুলেও তোমার কথা আর কখনো মুখে আনবো না
কারণ আমি তো আর তোমার কেউ না,
তাই এখন আর তোমার প্রতি কোন অভিমান হয় না
নিজের প্রতি ঘৃণা ছাড়া আর কিছুই না।

দৈনিক মানভূম সংবাদ(ভারত)১১ মে ২০২১ ইং
দৈনিক দেশজগত ২৩ মে ২০২১ ইং

(০২)
মনের ঠিকানা
-বিচিত্র কুমার

উতলা নদী আমাকে ভালোবেসে জল ছিটিয়ে
সাগরের বুকে একাকী হাতছানি দিয়ে ডাকে আমি যাইনি,
প্রজাপতি রঙ ছরিয়ে আমাকে কাছে ডাকে আমি যাইনি
কোকিল গান শুনিয়ে আমাকে ডাকে আমি যাইনি।

চাঁদপরীরা আমার দিকে তাকিয়ে হাসে চাইনি
নীল আকাশের তারারা চুপিচুপি ভালোবাসে জানি,
মনের দরজা খুলে কাছে ডাকে আমি যাইনি
ফুল কলিরা ছুটে ছুটে আসে আমি হাত বাড়াইনি।

হঠাৎ দেখি সুদূরে কে যেন দাঁড়িয়ে আছে এলোমেলো চুলে
যেন সবুজ পাতার ফাঁকে মুখটা তার ঢেকে কোন দিকে না চেয়ে,
মুখে তার আটা ময়দা নেই চোখে তার কাজল নেই
যেন অতি সাধারণ এক প্রকৃতির মেয়ে।

তোমার ভালোবাসা আমাকে শ্যাওলার মতো আঁকড়ে ধরেছে
আমি যেন তোমাকে ছেড়ে কোথাও যেতে পারছি না,
অবশেষে মুখোমুখি দাঁড়িয়ে মনটা যে হারিয়ে
তোমাকেই দিলাম আমার মনের ঠিকানা।

দৈনিক মানভূম সংবাদ(ভারত)১১ মে ২০২১ ইং

(১৮)আমি প্রেমিক হতে পারিনি

কোন এক নাটকীয় দৃশ্যের ভিতরে
তোমার ঠোঁটে ঠোঁট রাখিনি,
এযুগের নায়ক নায়িকার মতো
তোমার বুকের বোতাম ছিড়িনি।

এজন্যে হয়তো তোমার কাছে
আমি প্রেমিক হতে পারিনি,
সুদর্শন পরুষ হতে পারিনি 
কিম্বা রোমান্টিক হতে পারিনি। 

তুমি যদি আমাকে কাছে টেনে নিতে
তাহলে আমিও প্রেমিক হতাম,
তুমি যদি বাঘিনী হতে
তাহলে আমিও পাগলা ঘোড়া হতাম।

কিন্তু তুমি আমাকে প্রেমিক হতে দিলে না
তুমি আমাকে প্রেম শেখালে না,
কারণ আমি শারুফখান কিম্বা কালাচাঁদ ছিলাম না
তাই তো তুমি প্রেম দিলে না।

আমি প্রেমিক হতে পারিনি
সারাটা জীবন তোমার আসামিই হয়ে রয়ে গেলাম,
আমি মিছেমিছি কাঁদতে পারিনি
তাই তোমার কাছে অপরাধীই রয়ে গেলাম।

দৈনিক মানভূম সংবাদ(ভারত) ০৭ মে ২০২১ ইং

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
-বিচিত্র কুমার

সারা বিশ্বের কবি তুমি এক নামেতেই সবাই চিনি
তুমি ফুলের মতো ফুটো রোজ শত মানুষের মনে মনে,
সাহিত্যে জুড়ে ছড়িয়ে আছে তোমার বিপুল সমাহার
গল্প কবিতা উপন্যাস আর ছড়া গানে গানে।

তুমি রয়েছো বাংলা সাহিত্যের উজ্জ্বল নক্ষত্র রূপে
হাজারো কবি সাহিত্যিকের চিন্তা চেতনার কলমে,
তুমি রয়েছো বহমান নদীর রূপে মানুষের নিশ্বাসে প্রশ্বাসে
মহৎ কীর্তি দিয়ে যুগেযুগে মানুষের অন্তরে সাহিত্য কর্মে।

আন্তর্জাতিক সাপ্তাহিক পলাশ ০৮ মে ২০২১ ইং
দৈনিক জন্মভূমি ০৮ মে ২০২১ ইং

---------++--++++---++++++++++++++++++++++-----++++++++
নীলাঞ্জনা
-বিচিত্র কুমার

শতকোটি বছর আগে তোমার সাথে দেখা হয়েছিলো
এই রঙিন পৃথিবীর নকশীকাঁথার মাঠে কোন এক প্রান্তে,
সেখানে তুমি প্রতীক্ষার প্রহর গুনছিলে কোন এক প্রেমিকের
এলোমেলো স্বপ্নএেঁকে মনের অজন্তে।

এদিকে তোমাকে পাবার জন্য পাগল সমস্ত পৃথিবী
কেউবা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধর ঘোষণা দিয়েছে জগতে,
কেউবা তোমার ছবি খোঁদায় করে এেঁকেছে হৃতপিণ্ডে
কেউবা দাঁড়িয়ে রয়েছে ফুল হাতে তোমার যাবার পথে।

নীলাঞ্জনা তোমার কোন তুলনা হয়না তুমিতো অবিনাশী কবিতা
যার প্রেমের প্রগাঢ়তা খুঁজে দেখে কবি প্রেমিক সেজেছে,
বিশ্ব সংসার তন্নতন্ন করে খুঁজে এনে ১০৮টি লাল গোলাপ
তোমাকে পাবার জন্যে শুধু তোমার হাতে তুলে দিয়েছে।

তুমিই তো স্বপ্ন দেখিয়েছিলে জীবনকে উপভোগে জন্যে
প্রেমের শ্রেষ্ঠ রোমান্টিক কবিতায়,
তবুও শেষ নেই খুঁজে দেখা তোমার লাবণ্য রূপ
তোমার মুখশ্রীর একঝলক মিষ্টি হাসিয়।

দৈনিক মানভূম সংবাদ ০৬ মে ২০২১ ইং

(০১)
চোখের ভাষা
-বিচিত্র কুমার

চোখের ভাষার কোন দাড়ি কমা থাকে না বুঝেছি
যখন তুমি আমার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকাও,
গোপনে একা একা ইচ্ছে নদীতে যাও
স্বপ্নগুলো মনের মধ্যে পুষে রেখে বারবার হারাও।

যেমন করে জোছনা আকাশের মাঝে হারায়
চোখের অশ্রু যেমন করে গোপনে শুকিয়ে যায়,
ফুল যেমন করে পাপড়ির সুবাস ছরিয়ে ঝরে যায়
ঠিক তোমার মতো বারবার চোখ ফিরায়।

তোমার চোখের দৃষ্টিতে একটা জাদু রয়েছে
তোমার হাসিতে যেন স্বর্গসুখ,
তাছাড়া কেন আমি বারবার হারিয়ে ফেলি পথ
নিত্যদিন স্বপ্নেও দেখি বারবার তোমার মায়াবী মুখ।

আমি তো কবি চঞ্চল আমার মন সরল সাদা
আমার চোখের ভাষা থাকতে চাই না বাঁধা,
সুনন্দ কে তো আর অসুন্দর বলতে পারি না
ইচ্ছে করলে তুমিই হতে পার আমার স্বপ্নের রাধা।

দৈনিক ঘাঘট ০৪ মে ২০২১ ইং

(০২)
ভালোবাসা কী
-বিচিত্র কুমার

হৃদয়ের ক্যানভাসে একটা রঙিন স্বপ্ন এঁকে
জোছনা রাতে রূপসী এক চাঁদনীকে প্রশ্ন করেছিলাম,
                                             ভালোবাসা কী?
সে বলেছিলো ভালোবাসা শুধু একটা ফিলিক্স।
ফুটন্ত এক লালটুকটুকে গোলাপকে প্রশ্ন করেছিলাম,
                                              ভালোবাসা কী?
সে বলেছিলো ভালোবাসা কারু প্রিয় নাম।
মেঘলা আকাশে বৃষ্টিকে প্রশ্ন করেছিলাম ভালোবাসা কী?
সে বলেছিলো মাঝে মাঝে আমার দুচোখের অশ্রু হচ্ছে                                                              ভালোবাসা।
উতলা এক নদীকে প্রশ্ন করেছিলাম,ভালোবাসা কী?
সে বলেছিলো সমস্ত বাধা অতিক্রম করে সাগরের বুকে
ছুটে যাওয়ায় তার কাছে ভালোবাসা।

দৈনিক ঘাঘট ০৫ মে ২০২১ ইং

(০১)
চাঁদপরী ও মেঘ কুমার
-বিচিত্র কুমার

যখন আকাশের বুকে চাঁদপরীরা যায় ভেসেভেসে
স্বপ্ন ডানায় চড়ে হারায় মেঘের দেশে,
তখন মেঘ কুমারেরা স্বপ্ন দেখে ছবি আঁকে বুকে
ছুটে যায় চাঁদপরীদের পিছু পিছু মেঘের বেশে।
তখন আধো-আলো খেলা করে প্রকৃতির বুকে
মেঘ ডাকে বিজুলি চমকায় দিকেদিকে।

কখনো কখনো চাঁদের আলোয় ঝলমল করে
চাঁদপরীরা দিক দিগন্তে,
মাঝেমাঝে প্রেম বিনিময় হয় মেঘ কুমারদের সাথে
হঠাৎ বৃষ্টি এলে চোখের কোণে মনের অজান্তে।
তখন দুজন হারিয়ে যায় দুজনার মধ্যে
হাতে রেখে হাত কথা হয় অনেক পদ্য আর গদ্যে।

মেঘের পালকে চড়ে মেঘ কুমার মেঘের রাজ্যে
তাকে নিয়ে যেতে চায় মেঘপুরী,
সেখানে জোনাকিরা গল্পকরে মিটমিট জ্বলে
তারারা ঝলমল করে হারায় আবার খেলে লুকোচুরি।
আকাশের কালো মেঘ সরে যায় দূরে
রংধনুর সাত রঙ রাঙায় আকাশ সুদূরে।

দৈনিক ঘাঘট ১৯ এপ্রিল ২০২১ ইং
দৈনিক যুগের আলো ২২ এপ্রিল ২০২১ ইং
দৈনিক চাঁপাই দর্পণ ২৩ এপ্রিল ২০২১ ইং
দৈনিক মানব বার্তা ২৪ এপ্রিল ২০২১ ইং
দৈনিক জয়পুরহাট খবর ২৯ এপ্রিল ২০২১ ইং
সুপ্রভাত সিডনি(অস্ট্রেলিয়া) ১২ মে ২০২১
দৈনিক কালের চিত্র ০৫ জুন ২০২১ ইং
দৈনিক পশ্চিমাঞ্চল ১২ জুন ২০২১ ইং

(০২)
ভালোবাসার অধ্যয়ন
-বিচিত্র কুমার

বিশ্বাস আর অবিশ্বাসের বিশ্লেষণ তোমার মতো করতে পারিনি
প্রজাপতির মতো পাখনা মেলে হাওয়ায় আমি উড়তে পারিনি,
কচি ডানায় হেলান দিয়ে তোমার মতো রঙধনুর রঙ গায়ে মাখিনি
নীল সাগরে সবার মতো আমি পুষ্পস্নান করতে পারিনি।

সাত সমুদ্র পারি দিয়ে তোমার সাথে নিঝুম দ্বীপে যাইনি
কোকিলের মতো প্রেমের গান আমি বসন্তে গাইনি,
হাজার কথার মুক্ত ছন্দে তোমার কাব্য কখনো লেখিনি
তোমার ছবি হৃদয় মাঝে খোদাই করে আঁকিনি।

নীল আকাশের বুকের মাঝে চাঁদনী তোমায় রাখিনি
ভ্রমরের মতো গুনগুনিয়ে গান গেয়ে তোমায় কাছে ডাকিনি,
আমি অনেক কিছুই চেয়েছিলাম কিছুই আমি পাইনি
হাজার সুখের স্বপ্নের মাঝেও তোমায় আমি ভুলতে পারিনি।

হয়তো ভালোবাসার অধ্যয়ন গুলো সঠিক সময় সঠিক ভাবে
                                                        করতে আমি পারিনি,
তাই তো আমি তোমার ভালোবাসা এই জীবনে পাইনি।

দৈনিক আজকের প্রত্যাশা ২৩ এপ্রিল ২০২১ ইং

(০৩)
নীল সাগরে হাবুডুবু
-বিচিত্র কুমার

আকাশের নীল রঙ কখনো কখনো রঙিন হয় রংধনুর রঙে
যখন বৃষ্টির ফোঁটায় ফোঁটায় দেখা যায় তোমার মুখশ্রীর ছবি
সুদূরে বৃষ্টির জলে কোন এক কুমারী মেয়ে হেসে কুটিকুটি
বন আর উপবনে ফুলে ফুলে ফুটন্ত কলি ও জানো এক পল্লবী।

বৃষ্টি ভিজা এমন এক উতলা দিনে উতলা মুহূর্তে
একঝাক প্রজাপতি ডানা মেলে অবিকল তোমার মতো,
ফুলে ফুলে মৌমাছিরা বসে আনন্দে মেতে মেঘের মতো
বন আর উপবনে কিম্বা মেঘের দেশে কতো।

তুমি বৃষ্টি হয়ে অঝরে ঝরো আকাশের সমস্ত শরীরে
সবুজ পাতার ফাঁকে হিজল বন তাকিয়ে তাকিয়ে দেখে,
নীল সাগরে হাবুডুবু খায় বৃষ্টি আর আকাশ চুপিচুপি
বিজুলি চমকায় আকাশের বুকে মেঘের ভিতর দিকেদিকে।

তোমার টানাটানা দুটি চোখ,কপালে নীল টিপ,নীল শাড়ীতে
সেই রোমান্টিক কবিতাটাই বলছে মেঘের গর্জনে মেঘলা দুপুর,
তোমার দীর্ঘলকালো চুলগুলো উড়ে উড়ে পড়চ্ছিলো
চেয়ে চেয়ে আকাশের চোখে মুখে পর।

দৈনিক যুগের আলো ২৫ এপ্রিল ২০২১ ইং

(০৪)
বৈশাখী

ভ্রমর গায় গুনগুনিয়ে ফুলের কানে কানে
বৈশাখী এসেছে নগর-গাঁয়ে,
নব বৈশাখের নতুন সাজে রঙিন শাড়িতে
রেশমি চুড়ি আর আলতা পরে পায়ে।
খোঁপাই বাঁধে রঙিন ফুল অচিনা এক পাখি
বাহারি সাজে ফুরফুর করে উড়ে রঙিন প্রজাপতি।

নতুন বন্ধুত্বে বৈশাখী মেলায় এক প্রবল উদ্বোধন
নতুন প্রভাতে আমন্ত্রিত এক ঝলক বৃষ্টি,
সাপের খেলা নাগরদোলা পুতুল নাচ বানোর নাচ
সুদূর থেকে আসে মিঠাই বাতাসা আচারের গন্ধ মিষ্টি।
রঙিন হাতপাখা লাল ফিতা মেহেদি রাঙানো ফুল
মনে পড়ে কিশোরী আগে তুমিও পড়তে কানে দুল।

শাড়ি পাঞ্জাবীতে কৃষ্ণচূড়া আর রঙিন রিক্সসাআলাও
প্রেমের বহমান নদীতে কিশোর-কিশোরী প্রতীক্ষায়,
কপোত কপোতীরা জোড়া জোড়া দলে দলে আসে
পান্তা-ইলিশ বটতলার নীচে এসে সবাই খায়।
এমন মধুর ক্ষণে রঙিলা বৈশাখে একদিন
আমরা দুজনেও ছিলাম গানে গানে।

দৈনিক ঘাঘট ১১ এপ্রিল ২০২১ ইং
বাংলাNews(কানাডা) ১৩ এপ্রিল ২০২১ ইং
দৈনিক যুগের আলো ১৪ এপ্রিল ২০২১ ইং
দৈনিক মানভূম সংবাদদ(ভারত)১৫ এপ্রিল ২০২১ ইং
সাপ্তাহিক জন্মভূমি(যুক্তরাষ্ট্র)১৫ এপ্রিল ২০২১ ইং

(০৫)
রঙিন এক বৈশাখে

বৈশাখতে তোমায় কিনে দিব হলুদ বর্ণের শাড়ি
কিনে দিব আলতা ফিতা রঙিন কাচের চুরি,
রঙিন পোশাক পরে দুজন করবো উড়াউড়ি
বৈশাখী মেলায় দেখা হলে তোর সাথে ও ছুড়ি।

মেহদী রাঙা হাতে হাত রেখে কথা হবে মুখোমুখী
বটের ছায়ায় বসে দুজন খাব বাদাম জালমুড়ি
বরই আচার মন্ডা মিঠাই চেটেপুটে খাব ঘুরি
ধুত্তুরি ছাই বুঝে নাকো খাব ডাল পুড়ি।

তখন ফিলিক্স পাখির ডানায় চড়ে যাব স্বপ্নপুরী
কচি ঘাসের বুকে উড়ে রঙিন প্রজাপতি,
নাগরদোলায় ঘুরে ঘুরে পাখিরা সব যাই বাড়ি
স্বপ্ন ডানা ভেঙ্গে তখন থাকবে শুধু তার মধুর স্মৃতি।

এই ওঠো দেখি অনেক বেলা হয়েছে রবি
এখন যেতে হবে বাড়ি,
কল্পনাতে ছিলাম দুজন ভীষণ বাড়াবাড়ি
দেখছি তোমার এখন খুব পাড়াপাড়ি।

বাংলাNews(কানাডা) ১৩ এপ্রিল ২০২১ ইং
দৈনিক মানভূম সংবাদদ(ভারত)১৫ এপ্রিল ২০২১ ইং

(০৬)
পড়শী

হলুদ রঙের শাড়ি পড়ে
কে তুমি কুমারী পুষ্প বনে,
হেসে কুটিকুটি ফুলের রানী
নিত্য আর গানে।

কী যে দারুণ লাগাচ্ছিল-
তার মুখশ্রীর এক ঝলক হাসি,
একঝাক প্রজাপতির মাঝে
একটা পুষ্প সাজে পড়শী।

কোকিলের কুহুকুহু কণ্ঠে
প্রেমের গান শুনি,
সুদূর থেকে ভেসে আসে
তার নূপুরের ধ্বনি।

দৈনিক মানভূম সংবাদ(ভারত)১২ এপ্রিল ২০২১ ইং

(০৭)
আগামী একটা বসন্তের জন্যে

তোমার চলে যাওয়াতে বেদনার ফুল ফোটে
ধমনীর ভিতরে শিরায় শিরায় হৃদয় চিত্রপটে,
রঙধনুর রঙ মুছে যায় নীল আকাশে
রঙিন স্মৃতিগুলো হারিয়ে যায় স্বপ্নের মাঠে।

শুধু থেকে যায় তোমার পদচিহ্ন নকশীকাঁথাতে
সুগন্ধী ফুলের সুবাস রয়ে যায় সাগর উপসাগরে
সুখ পাখিরা উড়ে যায় কথা দিয়ে
হাওয়ায় হাওয়ায় ভেসে অচিনপুরে।

আর আমি ঠিক যেন হাল ভাঙ্গা পাল ছেঁড়া নাবিকের মতন
কোটিকোটি বছর আগামী বসন্তের প্রতীক্ষায় বসে আছি,
হারিয়ে ফেলেছি আসল গন্তব্য আমি---

দুচোখের দৃষ্টি ঝপসা হয়ে গেছে
মাথায় এলোমেলো চুল,
বন উপবন ভিজিয়ে অশ্রু সিক্ত
কোথায় তুমি আগামী বসন্তের ফুল?

আমি প্রতীক্ষায় আছি শুকনো পাতার মর্মরধ্বনিতে
কিম্বা ঝরাফুলের মতো শুধু তোমার জন্যে,
কাটিয়ে দেব সময় উজ্জ্বল নক্ষত্রের পতনে
প্রতীক্ষা আর প্রতীক্ষা আগামীর একটা বসন্তের জন্যে।

দৈনিক ঘাঘট ১২ এপ্রিল ২০২১ ইং

(০৮)
নতুন ভোরে

নতুন ভোরে নতুন সুরে সুখ পাখিটা গায়
স্মৃতির পাতা ফেলে দিয়ে উড়াল দিতে চাই,
রঙিন এই পৃথিবীটা ঘুরে ঘুরে
আমিও দু-নয়ন মেলে দেখতে চাই।

নতুন রঙে নতুন করে আবার যেন
এ জীবন শুধু করতে চাই,
যেখানে সুখ ছাড়া দুঃখ কোন নাই
এমন একটা জীবন চাই।

দৈনিক গৌড় বাংলা,১০ এপ্রিল ২০২১ ইং
বাংলাNews(কানাডা) ১৩ এপ্রিল ২০২১ ইং

(০৯)
ভালোবাসা

ভালোবাসা একটা অনুভূতি
যা মনের সাথে মনের একটা টান,
ভালোবাসা সুখের একটা স্বপ্ন
কিম্বা বুকে লেখা কারু প্রিয় নাম।

ভালোবাসা যেন একটা উড়ন্ত প্রজাপতি
সুদূর থেকে দেয় শুধু হাতছানি,
দিবানিশি তার জন্য শুধু ছটফটানি
কিম্বা হঠাৎ আকাশের বুকে দুফোঁটা পানি।

ভালোবাসা হচ্ছে মনের মধ্যে লুকানো একটা স্বপ্ন
যা একজন লেখকের অপ্রকাশিত পাণ্ডুলিপির মত,
কেউ লাইফে প্রকাশ করতে পারে কেউবা পারে না
সবাই শুধু অনুভাব করতে পারে একান্ত।

(১০)
এক রক্তাক্ত বসন্তের স্মৃতি

কোন এক উতলা বসন্তের সকালে পুষ্পবনে
ফুটেছিল একটি টকটকে লাল গোলাপ,
তার সাথে হয়েছিলো দেখা প্রথম ফাগুনে
হয়েছিল দুজনার এ জীবনের আলাপ।

তারপর প্রতিটি শীতের ভোরে অনেক রোদের পরশ মেখে
ছুঁয়ে যেতে আমার বুকের বাঁপাশ শিশির রেখা,
তখন প্রতিটি ভোর হয়ে যেত ভীষণ রকম মিষ্টি
আর ছিলো শুধু বসন্তের ঘ্রাণ মাখা।

প্রতিটি সকালে একঝাঁক মায়াবী পাখি অনুভবের সব চুম্বন
চিকিমিকি রোদ্রে নিয়ে চলে যেত তোমার কাছে নীরবতায়,
তোমার চুলের স্নিগ্ধ ঘ্রাণে পাগল দিবানিশি
ভাসমান মেঘের মতোই উড়ে আসত আমার জানালায়।

প্রকৃতির নিয়মের মতো একদিন তাকেও
তুলে বিক্রি করা হলো কোন মালির দোকানে,
আমার অজান্তে গোপনে গোপনে-
অবশেষে,আমি টের পেলাম একটা দুঃস্বপনে।

রাহু গ্রাসে অন্ধ প্রেম আচ্ছন্ন হয় ঘন কুয়াশায়
স্বার্থহীনভাবে ভালোবেসেও হৃদয় আজ মরুভূমি
কথা ছিল যাবে নাকো আমায় ছেড়ে তুমি
জানি না,কোথায় আজ বন্ধু তুমি?

কখনো কখনো মনের বাসর সাজায়ে কেন
এ জীবন ধুধু মরিচিকা হয়,
কিসের অভাব আছে এই দুনিয়ায়
সত্যিকারের প্রেম কেন রাত্রি গভীরে কাদায়।

(১১)
ফিনিক্স পাখি

সবার কল্পনা জগতেই
একটা ফিনিক্স পাখি থাকে,
যে পাখির কখনো মৃত্যু নেই
মৃত্যুর পরও আবার বেঁচে উঠে
         অগ্নিদগ্ধ ভস্ম থেকে।

ফিনিক্স পাখির জীবন কাহিনী
ঠিক আমাদের স্বপ্নের মতো,
যাব কোন মৃত্যু নেই কখনো
মানুষের আত্মার মতো।

তুমি আমার জীবনে ঠিক
ফিনিক্স পাখির মতো রয়েছো,
আমার নিশ্বাসে প্রশ্বাসে হৃতপিণ্ডে
আনন্দ বেদনার রঙে বয়ছো।

(১২)
প্রথম দেখা

বৈশাখতে প্রথম দেখা
উতলা ফাগুনে দু'জনার পরিচয়,
নীল আকাশের তারার সাথে রোজ
ফেসবুকেতে মনের কথা হয়।

ফুলের মতো কচিকাঁচা
তার মুখশ্রীর হাসি,
যেন লাল টুকটুক ফুটন্ত গোলাপ
ফুটচ্ছে রাশিরাশি।

তার বিরহে রাখাল বাজাই
ভালোবাসার বাঁশি,
মিটমিট করে জোনাক জ্বলে
গভীর সেই নিশি।

সেই সুরেতেই ফিনিক্স পাখি
মনে মনে রঙিন স্বপ্ন আঁকে,
ঝাঁকেঝাঁকে প্রজাপতি রঙছড়ায়
নীল আকাশের বুকে।

(১৩)
বসন্তের উৎসবে

মন ছুঁয়ে যায় বারবার আনন্দ কলরবে
গাছের ডালে কোকিল ডাকে মাঝেমাঝে রবে,
সারাক্ষণ অন্তরে বাজে অজানা একটা মিষ্টি সুর
আবির মাখা রঙিলা সেই বসন্তের উৎসবে।

লাল নীল হলুদ ফ্রেমে পরীরা গান করে
যৌবন দৈত্যদের বেভুল অসতর্ক প্রেমে,
বুলবুলিরা পাখাঝাপটায় নিত্য আর গানে
চৈত্রের কাটফাটা রৌদ্র কিম্বা প্রচণ্ড বৃষ্টিতে
                        রঙ্গমঞ্চ থাকে না যে থেমে।

ফুল দেয় নতুন জগৎ টাকা উড়ায় কোটিপতি
মৌমাছিরা গান ধরে তালি দেয় হাসিহাসি,
উড়ে আসে পাখি উড়ে যায় প্রজাপতি
বসন্তের উৎসবে শত রাশিরাশি।

দৈনিক ঘাঘট,০৮ এপ্রিল ২০২১ ইং

(১৪)
বসন্তেরকোকিল তুমি

তোমার দু-আঁখির গহীন অরণ্যে
একটা স্বপ্নের বহমান নদী রয়েছে,
তারই রেশ ধরে আমি হেঁটে চলি
অজানা বসন্তের পথে নীর উদ্দেশ্যে।

সে চলার কোন শেষ সীমা নেই
তাই আমার বিষণ্ণ একতারা সন্ন্যাস খুঁজে ফিরে ,
কবে তুমি বুঝবে অনুশ্রী মনের পর্দা খুলে
একুশ বসন্ত তোমার রঙছিটিয়ে যাচ্ছে অচিনপুরে।

এদিকে আমার দেহের প্রতিটি শিরা ধমনীতে প্রবাহিত হচ্ছে
তোমার ভালোবাসার একটু উষ্ণতা পাবার জন্যে,
শুধু অনুভবে তাণ্ডব উচ্ছাসিত হচ্ছে---

যেদিকে তাকাই ---
ফুলে ফুলে ভ্রমর গুনগুনিয়ে উড়েউড়ে পরে
বসন্তের কোকিল গান গায় নব বসন্তে,
তোমার দুই চোখে আমার একই ছায়া রয়ে যায়
উতলা ভালোবাসার সীমান্তে।

দৈনিক ঘাঘট,০৬ এপ্রিল ২০২১ ইং

(১৫)
আমি হিন্দু সম্প্রদায়ের কথা বলছি

আমি এক হিন্দু সম্প্রদায়ের কথা বলছি
আমি লক্ষ লক্ষ নির্যাতিত হিন্দু মানুষের কথা বলছি,
যারা তাদের মাতৃত্বের অধিকার হারিয়ে ফেলচ্ছে আস্তে আস্তে
আমি আত্মসম্মান হারা সেই লাঞ্চিত সমাজের মানুষের কথা বলছি।

যারা জীবন যুদ্ধে এ সমাজের কাছে পরাজিত এক সৈনিক
পরাজিত এক শ্রেণী,পরাজিত এক জাতি,পরাজিত এক সম্প্রদায়,
যারা এখনো বছরে পর বছর ধরে পাড়ি দিচ্ছে অন্য দেশে
কেউ কী কখনো জানতে চেয়েছে কীসে তাদের এত ভয়?

আমরা তো সব সময় সাম্যের কথা শুনি সম আধিকারের শুনি
সরকারের মুখে মিডিয়াতে টেলিভিশন রেডিও পত্রিকার পাতায় পাতায়,
কিন্তু আমাদের লাঞ্চনার কথা উপর তলার মানুষের চোখে পরে না
আমরা নিচ তলার মানুষগুলো শুধু এর ফল ভোগ করি আত্মরক্ষায়।

নির্জন বনে যেমন সিংহ মামা শাসন করে তেমনি আমাদের শাসন করেকিছু মুখোশধারী লোক
এদেশের বৃহত্তম সম্প্রদায়ের
মনে হয় এরা রাজাকারের বংশধর স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি নয়
বিচার সালিশ চলা অবস্থায় অন্যায় ভাবে হাত উঠায়।
তার কোন প্রতিবাত নেই তার কোন বিচার নেই
আমি সেই সব লাঞ্চিত সমাজের মানুষের কথা বলছি।

বটবৃক্ষ তো শুধু স্বার্থহীন ভাবে ছায়া দিয়ে যায় প্রকৃতির বুকে
কিন্তু ছায়ার নিচে যে অনিয়ম ঘটে সেটা বটবৃক্ষের অগচরেই থেকে যায়
আমি সেই বটবৃক্ষের নিচে ঘটা অনিয়মের কথা বলছি।

একদিন যে বটবৃক্ষের নিচে আমাদের পূর্ব পরুষেরা স্বাধীন ভাবে বসবাস শুরু করেছিলো
সেখানে আজ অসুরের রাজ্যাংশে পরিমিত হয়েছে,
দিনেদিনে নদী ভাঙ্গনের মতো এক বাড়ি দুই বাড়ি করে কমছে আর কমছে
সমগ্র গ্রাম দাবানলের মতো পুড়েপুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে।

হয়তো বা একদিন আমাদের অস্তিত্ব আর টিকে থাকবে না এ স্বদেশে
হয়তো বা চিরিয়াখানাতে বাঘ সিংহ এর মতো দেখা যাবে আমাদের বংশধরদের
তখন হয়তো কারু মুখে শুনা যাবে এরা হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক ছিলো
আমি সেই সব অসহায় সমাজের মানুষের কথা বলছি।

যে ব-দ্বীপের বুকে এখন আমরা বসবাস করছি
সেই ব-দ্বীপের শাখা প্রশাখা  যদি আমাদের তাদের আহার বানায়
তাহলে আমরা এখন কোথায় যাব বলতে পারেন?
আমি সেই সব লাঞ্চিত সমাজের মানুষের কথা বলছি।

দৈনিক আজকের প্রত্যাশা, ১৯ মার্চ ২০২১ ইং

(১৬)
তুমি
-বিচিত্র কুমার

স্বাধীনতা যুদ্ধ জয়ের মহান নেতা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান,
তুমি চিরদিন থাকবে বাংলা বুকে
স্মৃতি হয়ে বহমান।

উনিশ'শ একাত্তরে ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে তুমি
অবিস্মরণীয় যে কবিতা বজ্রকণ্ঠে আবৃত্তি করেছিলে,
যা বাঙালির জাতির দীর্ঘদিনের বেদনার আত্মসংগীত
আমাদের মাথা তুলে দাঁড়াতে শিখিয়ে ছিলে।

সেই আহবানেই পাকবাহিনীর ষড়যন্তের নীলনকশা
ভেঙ্গে ফেলেছিলো ঐক্যবদ্ধ মুক্তিবাহিনী,
ত্রিশলক্ষ শহীদ আর দুইলক্ষ মা বোনের সংযমে
কোনদিন ভুলবনা আমরা সেই হিংস্রতার কাহিনী।

বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই সেই সব বীর শহীদের
যারা উনিশ'শ একাত্তরে দিয়েছিল তাজা প্রাণ,
তোমাদের বীরত্বগাঁথা নিয়েই এত আয়োজন
আমাদের এই স্বাধীনতার জয়ও গান।

দৈনিক মানভূম সংবাদ(ভারত)২০ মার্চ ২০২১ ইং

(১৭)
কোথায় আমাদের সভ্যতা

এখনো হয়নি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন
নিত্যদিন হচ্ছে নির্মম ধর্ষণ,
প্রতি সেকেন্ডে প্রতি মিনিটে প্রতি ঘণ্টায়
প্রতিদিন শুনছি মিডিয়া পত্রিকার পাতায় পাতায়।

স্বাধীন দেশে ওরা কারা কুকুরের বাচ্চা,
মানে না এখনো আইনের বাঁধা,
শিব লিঙ্গ কেটে দিতে হবে ওদের
এটাই হবে প্রাপ্য সাজা।

বলতে পারেন কোথায় আমাদের সভ্যতা?
কোথায় আমাদের সংস্কৃতি?
রাম রাম ছিঃ ছিঃ
পান্তা ভাতে পচা ঘি।

মনে মনে অঙ্কিত বিত্র
কখনো হবে কী আমাদের পবিত্র?

দৈনিক মানভূম সংবাদ(ভারত) ১৬ মার্চ ২০২১ ইং

সভ্যতার কারিগর
-বিচিত্র কুমার

কাঠফাটা রৌদ্র জ্বলেপুড়ে চামড়া
দিন রাত কাজ করে স্বপ্নচারীরা,
মুষ্টিবদ্ধ শত হাতে কত তার জীবিকা
গড়ে তোলে স্বপ্নের পৃথিবী অট্টালিকা।

দুর্বোধ্য পথে থামা নেই মৃত্যুর ভয় নেই
ওদের হাতুড়ি কাস্তের ক্ষয় নেই ক্ষয় নেই,
যুগে যুগে ওরা বিলিয়ে দিচ্ছে যৌবন আত্মা
শুধু এই ক্ষুধার্ত পৃথিবীকে দিতে সুখের বার্তা।

দৈনিক ঘাঘট ০১ মে ২০২১ ইং
দৈনিক কালের চিত্র ০১ মে ২০২১ ইং
পাক্ষিক প্যারিস টাইমস(ফ্রান্স)০১ মে ২০২১ ইং
দৈনিক আলোকিত সকাল ০১ মে ২০২১ ইং
দৈনিক যুগের আলো ০৩ মে ২০২১ ইং
দৈনিক ফুলকি ০৩ মে ২০২১ ইং
সাপ্তাহিক ঠিকানা(যুক্তরাষ্ট্র) ০৫ মে ২০২১ ইং
দৈনিক ঊষার বাণী ০৬ মে ২০২১ ইং
দৈনিক মানভূম সংবাদ(ভারত) ০৭ মে ২০২১ ইং
দৈনিক সংগ্রাম ১১ মে ২০২১ ইং

পরমবন্ধু
-বিচিত্র কুমার

গাছ  হলো আমাদের পরমবন্ধু,
ছাতার মতো সবসময় ছায়া দিয়ে যায়,
ফুল দেয় ফল দেয় জালানি কাঠ দেয় আরো
জীবন রক্ষার নানা সামগ্রী দিয়ে পাশে দাঁড়ায়।

অক্সিজেন জোগান দিয়ে বাঁচায় প্রাণীকুল
দূষণযুক্ত পৃথিবীকে দূষণমুক্ত করে,
শোষণ করে গ্রীনহাউস গ্যাস সূর্যরশ্মি
সুন্দর একটা পৃথিবী গড়ে।

সবুজ-শ্যামল গাছগাছালি স্বস্তি আনে প্রাণে
সেই কথাটাই বলে গেলাম আমি গানে গানে।

দৈনিক চাঁপাই দর্পণ ০৬ জুন ২০২১ ইং
দৈনিক ফেনী ১০ জুন ২০২১ ইং