১. স্বাধীনতার সুর
বিচিত্র কুমার
স্বাধীনতা হলো সোনালী সূর্য,
যেমন রাতের আঁধারে একাকী পথচলা,
যেখানে হাওয়ার গতি আর বাতাসের শব্দ
স্বপ্নের মতো ভাসিয়ে নিয়ে যায় হারানো সময়।
স্বাধীনতার সুরে কেঁপে ওঠে হৃৎপিণ্ড,
যেমন নদী ও পাহাড়ের মাঝে যাত্রা শুরু হয় নতুন দিনের।
আজ, যে মাটি আমাদের সন্তান,
তাকে বলা হয় মুক্তির পথের সাথী,
যেমন ফুলের পাপড়ি, কেঁপে ওঠে বৃষ্টির স্পর্শে
আর মেঘের নিচে লুকিয়ে থাকা সূর্য
বিশ্বকে দেখায় তার সোনালী হাসি।
২. পাথরের হৃদয়ে স্বাধীনতা
বিচিত্র কুমার
স্বাধীনতা হলো পাথরের হৃদয়,
যেমন বালুতে আটকে থাকা একদিনের দান,
যেখানে রক্ত ও জল মিশে গড়ে উঠে এক নদী,
যেটি দূর হতে, শুধু মুক্তির গন্ধ নিয়ে আসে।
আমরা স্বাধীনতা খুঁজে পেয়েছি অতীতের ছায়ায়,
যেমন আকাশে ফেলা তারার মতো আলো,
মিশে গেছে রক্তে, স্বপ্নে, কান্নায়, এবং হাসিতে।
একটি মাটি, যে কখনও ছেড়ে চলে যায় না,
যেমন প্রেমের কবিতা, যা স্মৃতির গভীরে মিলে যায়,
তার পৃষ্ঠে অজস্র কষ্ট আর আশা,
যেমন চিরকালীন মুক্তির বার্তা।
৩. সিংহাসন থেকে স্বাধীনতা
বিচিত্র কুমার
স্বাধীনতা হলো সিংহাসনের সোনালী আসন,
যেমন সমুদ্রের বিশালতায় ভেসে ওঠা এক তেজী ঢেউ,
যেখানে প্রতিটি ঢেউ যেন বাঁধা ভাঙার আওয়াজ,
আর প্রতিটি পাথর যেন গড়ে ওঠে মুক্তির মূর্তি।
মুক্তি এসেছে, আমাদের আত্মার আঙিনায়,
যেমন আকাশে ঝকঝকে তারার মেলা,
যেখানে সব সীমা ছড়িয়ে পড়েছে,
এবং সীমান্তে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে
দেখা যাচ্ছে, দূর থেকে রক্তের পথ।
এখন আমাদের প্রার্থনা শুধু একটাই,
যেমন বর্ণহীন সূর্য আকাশে উঠবে
এবং আমাদের সশক্ত স্বাধীনতা
হবে অমর, কালো অন্ধকারের পর।
৪. মুক্তির সিঁড়ি
বিচিত্র কুমার
স্বাধীনতা হলো সেই সিঁড়ি,
যেমন রাতের আকাশে একটি নতুন তারার জন্ম,
যেখান থেকে আমরা দেখতে পাই ইতিহাসের প্রতিটি মুহূর্ত,
যেমন নদীর তীরে থাকা এক ফুলের প্রতিচ্ছবি
অবিরত বয়ে চলে নতুন আশার সুর।
আমরা বাঁচব, হাঁটব, এবং আমাদের দেশ,
যেমন নদী তার ধারা, শৃঙ্খলমুক্ত হয়ে যাবে।
স্বাধীনতা আমাদের পরিচয়,
যেমন চাঁদের আলো রাতে মিষ্টি হয়ে যায়,
এবং আগুনের তাপে ধূমায়িত প্রান্তরে
পৃথিবী যখন এক নতুন চিন্তা জাগায়।
স্বাধীনতা, যে মাটির কোলে ভর হয়ে উঠবে,
যেমন পাখিরা স্বাধীনভাবে উড়ে চলে।
অবশ্যই, স্বাধীনতা দিবসের অনুভূতি আরও গভীরভাবে তুলে ধরে কবিতা লিখলাম:
৫. মুক্তির ঝর্ণা
বিচিত্র কুমার
স্বাধীনতা হলো একটি ঝর্ণা,
যেমন পাহাড়ের চূড়া থেকে বয়ে আসা অশ্রু,
যেখানে রক্ত ও জল মিলে এক সুর সৃষ্টি করে,
আর প্রাচীন দুঃখের ছায়া সরে যায় চিরদিনের জন্য।
অথবা পিপঁড়ের লড়াইয়ের মতো, নিঃশব্দে প্রবাহিত হয়,
যেখানে কষ্টের পাথরে হালকা নিঃশ্বাস হয়ে ওঠে চিরকালীন শান্তি।
আমাদের সংগ্রামের কথা লিখে গেল ইতিহাস,
যেমন চিরকাল বৃষ্টির টিপে লেখা কিছু শব্দ,
আর সে শব্দ আমাদের স্বাধীনতার সুর হয়ে
মহাকাল ধরে জাগ্রত থাকবে, সবার হৃদয়ে।
৬. আগুনের মধ্যে স্বাধীনতা
বিচিত্র কুমার
স্বাধীনতা হলো আগুনের মধ্যে জন্ম নেওয়া এক ফুল,
যেমন অন্ধকার রাত্রির মেঘের মধ্যে বিস্ফোরিত এক তারা,
যেখানে রক্ত আর ঘামের মিশেলে গড়া
এক শক্তিশালী জীবনশক্তি সৃষ্টি হয়,
আর তাতে উঠে আসে এক নতুন আলোর জ্যোতি।
মুক্তির কাঠামো যেন সেই আগুন,
যে আগুনে পুড়ে সৃষ্টি হয় মূর্তি,
এবং সেই মূর্তির মাঝে প্রতিটি প্রাণ
অক্ষয় একত্ব খুঁজে পায়।
এখন সেই আগুনে ফুটে ওঠা ফুলের মতো,
স্বাধীনতা হয়ে উঠেছে রঙিন দোলনা,
যেখানে প্রতিটি তীর, প্রতিটি শব্দ
কেবল একটাই প্রার্থনা— স্বাধীনতা।
৭. অন্তহীন যাত্রা
বিচিত্র কুমার
স্বাধীনতা হলো অন্তহীন এক যাত্রা,
যেমন দূরের পাহাড়ে একাকী পথিকের পদচিহ্ন,
যেখানে চোখে চোখ রেখে, মনের গভীরে
সামনে অপেক্ষা করছে এক নতুন ভোরের আলো।
মুক্তির ধ্বনি যেন সেই পথের প্রতিটি পাথরের আওয়াজ,
যেখানে পৃথিবী সমান, আর ন্যায়ের বাণী একাকী শোনায়।
আজ আমরা সেই পথে হাঁটছি,
যেমন ছায়া থেকে আলোতে আসার পথ,
এবং প্রতিটি পদক্ষেপে
নতুন এক রচনা তৈরি হবে ইতিহাসের পাতায়।
৮. স্বাধীনতার প্রতিধ্বনি
বিচিত্র কুমার
স্বাধীনতা হলো প্রতিধ্বনি,
যেমন পাহাড়ের কোলে ভেসে আসা একটি গান,
যে গান শুনতে পাওয়া যায় শুধুমাত্র
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতির গভীরে।
এটি প্রতিটি প্রাণের হাহাকার,
যেমন আকাশে উড়ে যাওয়া পাখির তীক্ষ্ণ ডাক,
এবং সেই ডাকের পরিসরে
অন্তহীনভাবে প্রতিধ্বনিত হয় মুক্তির সুর।
মুক্তি কখনও এক জীবনের গল্প নয়,
এটি অসংখ্য প্রজন্মের ইতিহাস,
যে ইতিহাসে গাওয়া হয় স্বাধীনতার গান,
যে গান আমাদের অন্তরে চিরকাল বেজে ওঠে।
৯. অগ্নিপথের স্বাধীনতা
বিচিত্র কুমার
স্বাধীনতা হলো অগ্নিপথের চিহ্ন,
যেমন যুদ্ধের রক্তে আঁকা একটি দীপ্ত সূর্য,
যে সূর্য জ্বলতে জ্বলতে একটি নতুন পথ তৈরি করে,
আর সেই পথে যায় সমস্ত মানবতা,
যেখানে আঁধারের বিরুদ্ধে উজ্জ্বলতার যাত্রা শুরু হয়।
মুক্তি হলো সেই অগ্নিপথের শেষ সূচনা,
যেখানে সব বাধা ও যন্ত্রণা একে একে হারিয়ে যায়
আর মুক্তির আলো সকলকে আলোকিত করে।
যতই সময় যাক, ততই তার বার্তা পৌঁছাবে
অন্তরে, গভীরে, হৃদয়ে,
যেমন এক আকাশের মধ্যে মিলিত হয় সমস্ত তারার আলোক।
১০. মাটির কান্না
বিচিত্র কুমার
স্বাধীনতা হলো মাটির কান্না,
যেমন ঝড়ে ভেঙে পড়া একাকী ফুলের আঙুল,
যে ফুল একসময় রঙে রাঙানো ছিলো,
আজ শুধুই মাটির ধূলায় মিশে গেছে।
মাটির কান্নায় বিলীন হয়েছিলো এক জাতির শ্বাস,
আর সেই কান্না মুক্তির আশায় বয়ে চলেছে নদী,
যেখানে বালুচরের প্রতিটি ঢেউ
একটির পর একটি স্বাধীনতা বার্তা নিয়ে আসে।
মাটি জানে, তার গভীরে কত রক্তের ইতিহাস,
আর সে ইতিহাস কখনও মুছে যাবে না,
যেমন প্রতিটি কণা তার নাম জানে—
এটি স্বাধীনতার আরাধনা।
১১. আলোয় রক্ত
বিচিত্র কুমার
স্বাধীনতা হলো আলোয় রক্ত,
যেমন ভোরের সূর্য আকাশে উঠে এসে
রক্তের সুর দিয়ে দিন শুরু করে,
আর প্রতিটি রশ্মি যেন আমাদের কষ্টের প্রতিধ্বনি।
আজকের সকাল, সে আমাদের স্মৃতি,
যেখানে প্রতিটি ঊর্ধ্বশ্বাসে স্বাধীনতার গন্ধ,
আর আমরা সেই আলোকে পুজো করি,
যে আলো সংগ্রামের শিখা,
এবং পৃথিবী জানে তার শক্তির নাম— মুক্তি।
রক্ত নয়, আলো আমাদের পথ দেখায়,
যে পথ একদিন আমাদের অন্ধকারে আলো দিয়ে
মুক্তির সুর গেয়ে গেছে।
১২. অস্থির সাগর
বিচিত্র কুমার
স্বাধীনতা হলো অস্থির সাগর,
যেমন প্রতিটি ঢেউ আছড়ে পড়ে বাঁধা উপকূলে,
আর সেখানে উঠতে থাকে বিপ্লবের ঝড়,
যে ঝড় দমন করার শক্তি রাখে না কোনো প্রাচীর।
আমরা দেখতে পাই সেই সাগরের দিকে চেয়ে
যেখানে ঢেউ তুলে আনতে থাকে স্বপ্ন,
যেখানে কষ্টগুলো শান্ত হয়ে যায় এক ছুটে আসা আশায়।
স্বাধীনতা হলো সেই সাগর,
যে সাগরের বুকে পাথরের টুকরো ভেসে থাকে,
আর একদিন সে পাথরগুলো
মুক্তির তীর হয়ে হয়ে ওঠে নতুন পৃথিবী।
১৩. প্রজন্মের প্রতিশ্রুতি
বিচিত্র কুমার
স্বাধীনতা হলো প্রজন্মের প্রতিশ্রুতি,
যেমন সোনালি প্রহর একে একে আসবে,
আর সেই প্রতিশ্রুতি রাখবে সমস্ত দুঃখের প্রতিকার,
যেমন ধ্বংস হয়ে যাবে শত্রুর শ্বাস,
এবং আমাদের বুকের মধ্যে বাজবে মুক্তির সুর।
এই প্রতিশ্রুতি, যেমন একটি চিরকালীন ঢেউ,
যার প্রতিটি কাঁপুনি অমর হয়ে যাবে ইতিহাসের পাতায়।
আজকের প্রজন্ম জানে,
তাদের হাতেই থাকে স্বাধীনতার চাবি,
যেখানে সবার স্বপ্ন, একে একে বাস্তবতায় পরিণত হবে।
১৪. শোকের ফুল
বিচিত্র কুমার
স্বাধীনতা হলো শোকের ফুল,
যেমন একদা তাজা হওয়া ফুল আজ শুকিয়ে গেছে,
যেখানে রক্তে ভেসে গেছে অসংখ্য নাম,
আর তাদের শোক জানিয়ে যায় ইতিহাসের পাতা।
ফুলের মধ্যে বয়ে যায় তাদের সংগ্রামের গল্প,
যেমন প্রতিটি পাপড়িতে ফুটে ওঠে তাদের মুখ,
এবং শোকের জলে ভাসতে থাকে
মুক্তির প্রতিফলন, নতুন দিনের মুখ।
শোক নয়, এটি শ্রদ্ধা—
যে শ্রদ্ধায় স্বাধীনতা হয়ে ওঠে চিরকালীন সত্য।
অবশ্যই, এখানে কিছু আরও গভীর আবেগের সাথে লেখা কবিতা:
১৫. অম্লান মুক্তির পিপাসা
বিচিত্র কুমার
স্বাধীনতা হলো অম্লান মুক্তির পিপাসা,
যেমন একটি ক্লান্ত শরীর অবিরাম খুঁজে চলে
পানির সন্ধানে, সেই অমৃতের,
যে পানিতে চিরকাল শান্তি মিশে থাকে।
আমরা পিপাসিত, খুঁজে ফিরছি সেই জল,
যে জল আমাদের আত্মাকে নীরবতার গহ্বরে
অসীম শক্তিতে রাঙিয়ে ফেলবে।
মুক্তির তৃষ্ণা কখনও মেটে না,
যতদিন না চেতনার আকাশে সোনা রঙের সূর্য
সব পাপ ঝেড়ে ফেলবে, জ্বলবে নতুন এক পথ।
মুক্তি হলো সেই পিপাসা,
যে পিপাসা কখনও শেষ হয় না—
এটি আকাশের চাঁদ হয়ে থাকে,
যেখানে সন্ধ্যা ও সকাল এক হয়ে যায়।
১৬. রক্তে লেখা গল্প
বিচিত্র কুমার
স্বাধীনতা হলো রক্তে লেখা গল্প,
যেমন রাত্রির আঁধারে, নিঃশব্দে ছড়িয়ে পড়ে
যুদ্ধের অশ্রু, এক মহাকাব্য হয়ে।
প্রতিটি রক্তবিন্দু যেন এক নতুন ইতিহাসের
অক্ষর, যেগুলি ফোটা ফুলের মতো ফুটে ওঠে,
আর আমাদের বুকের মধ্যে এক স্বাধীনতা
শক্তি নিয়ে প্রতিটি আঘাতের পরও গর্বিত হয়।
এই রক্তের গল্প, যা কখনও শেষ হবে না,
এটি হবে বিজয়ের, বীরত্বের,
যে গল্প মুক্তির সুরে ভরে যাবে পৃথিবী,
আর প্রতিটি পদক্ষেপে ছড়িয়ে যাবে চিরকালীন বার্তা।
১৭. সংগ্রামের হৃদয়
বিচিত্র কুমার
স্বাধীনতা হলো সংগ্রামের হৃদয়,
যেমন একটি প্রতিধ্বনি, যা শোনে যায়
বিজয়ের মিছিল, সবার হৃদয়ে বাজে,
আর প্রতিটি হৃদয়ে পুষ্পিত হয় অসীম ত্যাগ।
যেখানে রক্ত জমা হয় পাথরের মাঝে,
আর কাঁধে কাঁধ রেখে চলা মুক্তির সৈনিকেরা
একে একে জয়ের সিঁড়ি বেয়ে পৌঁছায় চূড়ায়।
এই হৃদয়ে রয়েছে যত যন্ত্রণা,
তার মধ্যেই রচিত হয়েছে আমাদের স্বাধীনতার গান।
হৃদয়ের গহীনে জমা শক্তি—
এটি কখনও হারাবে না, কখনও থামবে না,
এটি শেষ দিন পর্যন্ত ধ্বনিত হবে,
এবং আমাদের আশা হয়ে থাকবে।
১৮. আকাশে উঠা অগ্নি
বিচিত্র কুমার
স্বাধীনতা হলো আকাশে উঠা অগ্নি,
যেমন একটি বিশাল, চরম উত্তাপে
অদৃশ্য জ্যোতিষ্কের মত এক আগুন,
যে আগুনে পোড়া শরীরে চিহ্ন থাকে,
আর তার সাথে বয়ে আসে দুঃখ ও শক্তি।
তবে সেই আগুন একসময় সব বাধা পেরিয়ে
উজ্জ্বল হয়ে ওঠে আকাশের কালো রেখায়,
আর সেই আগুন এক নতুন পৃথিবী সৃষ্টি করে—
যে পৃথিবীতে কেবল শান্তি, কেবল স্বাধীনতা।
অগ্নিতে জ্বলতে থাকে মানবতা,
যেখানে দুঃখ ও ত্যাগের প্রতিটি মুহূর্ত
এক নতুন আলো ছড়িয়ে দেয় সবার মধ্যে,
আর স্বাধীনতার অগ্নি হয়ে ওঠে চিরকালীন সেলাম।
১৯. শোকের সমুদ্র
বিচিত্র কুমার
স্বাধীনতা হলো শোকের সমুদ্র,
যেমন গভীর অন্ধকারে ভেসে আসে একটি আলো,
আর তার সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে এক যুগের কান্না,
যে কান্নায় নুয়ে পড়ে সমস্ত পৃথিবী।
শোকের ঢেউ যেন আছড়ে পড়ে হৃদয়ে,
যেখানে গাওয়া হয় অশ্রু-বাঁধা গান,
আর সেই গান জানিয়ে যায় আমাদের
যুদ্ধের আর আমাদের স্বাধীনতার সত্যিকথা।
এটি একটি শোক নয়, এটি একটি আত্মত্যাগের গাথা,
যে গাথা কখনও ধ্বংস হবে না,
এটি মুক্তির এক অমর অন্বেষণ হয়ে থাকবে।
শোক নয়, এটি আমাদের ইতিহাস,
এটি আমাদের সংগ্রাম,
এটি আমাদের স্বাধীনতা।
২০. অশ্রু ও শঙ্খ
বিচিত্র কুমার
স্বাধীনতা হলো অশ্রু ও শঙ্খের মিশ্রণ,
যেমন এক অশ্রু শঙ্খের মতো সুর ভাঙে,
আর সেই সুর পৃথিবীজুড়ে প্রতিধ্বনিত হয়,
একটা জাতির কষ্ট, একটা জাতির দুঃখ।
অশ্রু চলে যায় মাটির গহীনে,
আর শঙ্খ হয়ে ওঠে সবার এক স্বপ্ন—
স্বাধীনতা, যার গম্ভীর আওয়াজ
সব কাঁপানো রক্তের ইতিহাস।
অশ্রু আমাদের চিরকাল তাড়া করে,
আর শঙ্খের সুরে সবার শরীরে
একবারে মুক্তির ছোঁয়া আসে,
যে ছোঁয়া ধরে রাখে চিরকাল—
এটি এক যুগের ইতিহাস,
এটি এক জাতির আত্মত্যাগ।
২১. নক্ষত্রের সংগ্রাম
বিচিত্র কুমার
স্বাধীনতা হলো নক্ষত্রের সংগ্রাম,
যেমন রাতের আকাশে তারা জ্বলে,
প্রতিটি নক্ষত্র নিজের জীবন দিয়ে
আলোকিত করে মানবতার অন্ধকার পথ।
একটি স্বাধীনতা, যা একটি ক্ষণিক জীবন,
কিন্তু তার প্রতিটি তেজে মিশে থাকে
অবিরাম সংগ্রামের রক্তিম আলো।
যতই ছিনিয়ে নেওয়া হয়,
ততই আরও উজ্জ্বল হয় সে তারকা,
যেমন একটি জাতি, যার শ্বাসে
তাড়া করে চিরকাল বীরত্বের সুর।
মুক্তি হলো সে নক্ষত্র,
যে কখনো মরে না,
সে তার আলো নিয়ে
জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত
আমাদের পথ দেখিয়ে চলে।
২২. সীমান্তের গান
বিচিত্র কুমার
স্বাধীনতা হলো সীমান্তের গান,
যেমন পাহাড়ের শীর্ষে বাতাসের সুর,
যেখানে মেঘ ঘনিয়ে আসে,
আর পথ দেখায় দুঃখের মিছিলে।
যেখানে সীমান্তের প্রতিটি রেখা
রক্তে রাঙানো, তবুও শান্তি চায়—
এটি এক গাথা, যার ভাষা হলো রক্ত,
আর তা শোনায় মুক্তির সুর।
আমরা এই সীমান্তের গান শিখেছি,
যেখানে চূড়ান্ত সংগ্রামের পর
আকাশে আলো রংধনুর মতো স্নিগ্ধ হয়,
আর পৃথিবী জুড়ে গুনগুন করে
স্বাধীনতার গান।
২৩. অশ্রু নদী
বিচিত্র কুমার
স্বাধীনতা হলো অশ্রু নদী,
যেমন অশ্রু গড়িয়ে পড়ে একের পর এক,
আর তার স্রোতে মিশে যায় শোক ও আশা।
যে নদী কখনও থামে না,
যে নদী অন্ধকার থেকে বেরিয়ে এসে
তাকে জল দিয়ে স্নান করায় শান্তি।
অশ্রু নদী বয়ে চলে মুক্তির দিকে,
যেখানে প্রতিটি জলবিন্দু
অবিরাম সংগ্রামের ইতিহাস।
এটি একটি গোপন ভাষা,
যে ভাষায় লেখা থাকে
এক জাতির আত্মত্যাগ।
আমরা এ নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে,
এই অশ্রু নদীকে শ্রদ্ধা জানাই—
এটি আমাদের মুক্তির পথ,
এটি আমাদের বিজয়ের নদী।
২৪. সংগ্রামের অগ্নিঝরা আকাশ
বিচিত্র কুমার
স্বাধীনতা হলো সংগ্রামের অগ্নিঝরা আকাশ,
যেমন আকাশে একদিন ডানা মেলে বিশাল অগ্নি,
যে অগ্নি পুড়িয়ে ফেলে সমস্ত অন্ধকার,
আর তাকে ছড়িয়ে দেয় আলোতে, জীবনে।
এই আকাশের দিকে তাকালে মনে হয়,
প্রতিটি শিখা এক জন সৈনিকের বুকের রক্ত,
এবং প্রতিটি অগ্নি আমাদের সংগ্রামের চিহ্ন।
এখানে মুক্তির কথা শোনা যায়,
এখানে যুদ্ধের জয়গান বাজে—
যেখানে আকাশের আগুন
ছড়িয়ে দেয় এক নতুন ভোরের সূচনা।
অগ্নিঝরা আকাশ আমাদের দেখায়
শক্তি, সাহস এবং সংগ্রামের সত্য,
এবং এই আকাশের তলে
আমরা চিরকাল এক হবো— মুক্ত!
২৫. মুক্তির সুরে জীবন
বিচিত্র কুমার
স্বাধীনতা হলো মুক্তির সুরে জীবন,
যেমন প্রতিটি শ্বাসের সঙ্গে
এটি এক নতুন চেতনা সৃষ্টি করে,
এটি একটি শঙ্খের ধ্বনি,
যে শঙ্খ পৃথিবীকে জানিয়ে দেয়—
মুক্তি এখন মানুষের আত্মায় প্রবাহিত।
এই সুরে মিশে থাকে আশা,
মিশে থাকে স্বপ্নের তাজা ফুল,
আর তা আমাদের প্রতিটি পদক্ষেপকে
নতুন শক্তিতে পূর্ণ করে দেয়।
মুক্তির সুরে প্রতিটি জীবন
চিরকাল এক নতুন উৎসব হয়ে ওঠে,
যে উৎসবে কেবল উল্লাস,
আর জয়, চিরকালীন স্বাধীনতার জয়গান।
অবশ্যই, এখানে আরও কিছু গভীর আবেগের কবিতা রইল:
২৬. জাতির আত্মবিস্মৃতি
বিচিত্র কুমার
স্বাধীনতা হলো জাতির আত্মবিস্মৃতি,
যেমন এক শহীদ, যার শেষ শব্দ ছিলো না
তবু তার আত্মা ভাসে আকাশের এক কোণে,
যেখানে কোনো সীমা নেই, কোনো বাধা নেই।
প্রতিটি শ্বাসে তাঁর আত্মত্যাগ,
প্রতিটি পদক্ষেপে তাঁর ত্যাগের রক্ত।
স্বাধীনতা হলো সেই আত্মার চিরস্থায়ী প্রতিধ্বনি,
যে প্রতিধ্বনির মধ্যে খুঁজে পাওয়া যায়
এক জাতির মুখের অশ্রু, আর বুকের দৃঢ়তা।
জাতি ভুলে গেলে, ইতিহাস মুছে গেলে,
তবুও এই আত্মত্যাগের আভা থাকবে,
এবং চিরকাল জীবন যাবে,
যে জীবন আত্মার গর্জনে জ্বলবে,
যে স্বাধীনতা হারাতে দেবে না কখনো।
২৭. শাপমুক্তির তন্ত্র
বিচিত্র কুমার
স্বাধীনতা হলো শাপমুক্তির তন্ত্র,
যেমন এক মন্ত্রে, এক আগুনে পুড়ে যায়
শতাব্দীর বেদনা, শতাব্দীর শ্লেষ।
যেখানে প্রত্যেক প্রজন্মকে
ভুলিয়ে দেওয়া হয় নিকৃষ্ট শোকার্ত দিনগুলি,
আর নতুন সূর্য ওঠে হৃদয়ে—
এক নতুন বেলাভূমিতে মুক্তির চিহ্ন হয়ে।
শাপমুক্তির তন্ত্র শিখে আমরা
জীবনের গভীরে অতীতের কষ্ট ভুলে
বাহিত হই এক সুমধুর গান দিয়ে—
যে গান বয়ে আনে শান্তির মহাশক্তি।
শাপমুক্তির তন্ত্রে আলো জ্বলে,
আর তাতে ঘৃণা বা ত্যাগ হারিয়ে যায়।
এটি এক নতুন প্রেরণার দ্বার,
যে দ্বার ঘিরে মুক্তির লক্ষ্যে ছুটে চলে সমস্ত জাতি।
২৮. পদ্মফুলের চিহ্ন
বিচিত্র কুমার
স্বাধীনতা হলো পদ্মফুলের চিহ্ন,
যেমন একটি শুদ্ধতা, এক পূর্ণতা,
যা জলে ফুটে ওঠে, অথচ মাটির সংস্পর্শে থাকে না।
পদ্মফুলের মতো, স্বাধীনতা ত্রাসের বিরুদ্ধে
অটুট থাকে, প্রগতি ও শান্তির পক্ষে থাকে।
যে পদ্মফুল সারা পৃথিবীতে
মুক্তির সুগন্ধ ছড়িয়ে দেয়,
যে সুগন্ধ আমাদের বিশ্বাসের গভীরে
বসন্তের মতো নতুন জীবন নিয়ে আসে।
প্রতিটি পদ্মফুলের রঙের মধ্যে
স্বাধীনতার ইতিহাস চিরকাল বয়ে চলে—
যতই পাঁপড়ি ঝরে, ততই আমাদের পথ
নতুন আলোয় রাঙিয়ে যায়।
২৯. শিখার উড়ান
বিচিত্র কুমার
স্বাধীনতা হলো শিখার উড়ান,
যেমন একটি পাখি, যা আকাশে ঘুরে চলে
তার চোখে থাকে স্বপ্নের বিশালতা।
শিখার মতো একদিন আমরা উড়েছিলাম
ভয়-ভীতির পার করতে, কাঁটাতে,
আর আকাশে নিজের পরিচয় খুঁজে পেতে।
এটি এক দীর্ঘ পথ,
যেখানে চলতে চলতে একদিন
সব সংকটকে পেছনে ফেলে
আমরা শিখার চূড়ায় পৌঁছাবো,
আর তখন সকল বাঁধা ভেঙে
পৃথিবী জুড়ে থাকবে মুক্তির গাথা।
আমাদের পাখির মতো উড়ান
চিরকাল শিখার গহীনে ছড়িয়ে পড়বে,
যতদিন না পৃথিবীর বুকে
একমাত্র স্বাধীনতা বজায় থাকবে।
৩০. জমাটবাঁধা ভ্রান্তি
বিচিত্র কুমার
স্বাধীনতা হলো জমাটবাঁধা ভ্রান্তি,
যেমন মেঘের মধ্যে ভেসে থাকা অন্ধকার,
যেখানে আমরা আবদ্ধ, তবু মুক্তির চেষ্টায়।
এটি সেই মেঘ, যা একদিন তছনছ হয়ে
প্রকৃতির অজানা আকাশে ছড়িয়ে পড়বে।
আমরা এগিয়ে চলেছি, প্রতিটি পদক্ষেপে
প্রকৃতির শক্তির উপর বিশ্বাস রেখে,
আর মেঘের অন্ধকারে হালকা আলো খুঁজে
স্বাধীনতার পথের গতি খুঁজে বের করি।
স্বাধীনতা হলো সেই জ্ঞান,
যেখানে জমাটবাঁধা ভ্রান্তি খুলে যাবে,
আর সত্যের সূর্য উঠবে নতুন দিনে।
স্বাধীনতা, যেমন আকাশের প্রতি আমাদের বিশ্বাস,
এটি আমাদের সাহস এবং স্বপ্নে পূর্ণ হবে,
এবং একদিন সব ভ্রান্তি ঘুচে
এক চিরন্তন জয় হাসবে।
৩১. কান্নার ফুল
বিচিত্র কুমার
স্বাধীনতা হলো কান্নার ফুল,
যেমন একটি ফুল, যা কাঁদতে কাঁদতে
জীবনের রঙে আলোকিত হয়।
কান্না হতে পারে বেদনা,
কান্না হতে পারে শক্তি,
যেখানে প্রতিটি অশ্রু মিশে
নতুন জীবনের সুবাস এনে দেয়।
ফুলের পাপড়িতে এই কান্না
অপূর্ব এক সুরের মতো
মুক্তির অঞ্জলি হয়ে রূপ নেয়।
কান্নার ফুল এই জাতির শোকের প্রতীক,
যতক্ষণ না তারা স্বাধীন হয়ে উঠে,
ততক্ষণ এর সুর বয়ে যায়—
এটি চিরকাল থাকবে।
দুপচাঁচিয়া,বগুড়া।