কবি হেলাল হাফিজ কে নিয়ে একগুচ্ছ কবিতা
১. হেলাল হাফিজের কলম- বিচিত্র কুমার
তোমার কলম যেন বিদ্রোহী তরবারি,
শব্দের বুকে আঁকে স্বাধীনতার আভা।
তোমার কবিতা বৃষ্টিস্নাত প্রান্তরের মতো,
যেখানে প্রতিটি শব্দ ফোটে শিউলির ঘ্রাণে।
তোমার কলম চির সবুজ বটগাছ,
যার ছায়ায় আশ্রয় পায় ক্লান্ত প্রেমিক।
তোমার শব্দ তরঙ্গময় নদীর মতো,
প্রতিটি ঢেউয়ে বাঁধা বেদনার গোপন কথা।
তোমার কলমের একটুকু ঝলকানি,
ভেসে যায় আকাশে, ঢেকে দেয় পৃথিবীর গ্লানি।
তোমার কবিতা ঝরঝরে বৃষ্টি,
যে বৃষ্টি সব ভুলে দিয়ে যায়, নতুন শুরু।
তোমার কলম যেন এক মুক্তি যোদ্ধা,
যার অস্ত্র হল রক্তের অক্ষর, অশ্রুপূর্ণ কবিতা।
তুমি জানো, স্বাধীনতার মন্ত্রে,
কলমের শক্তি থাকে অনন্তকাল ধরে।
---
২. নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়- বিচিত্র কুমার
তোমার কবিতা যেন ঝড়ের মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা প্রদীপ,
যা আলো দেয় স্বাধীনতার বুকে।
তোমার কলম তপ্ত মরুভূমির বৃষ্টি,
শুষ্ক আত্মায় আনে জীবনের সুর।
নিষিদ্ধ শব্দেরা আজ ঘুঙুর পরা নর্তকী,
তারা নাচে তোমার কাব্যিক মঞ্চে।
তোমার প্রতিটি চরণ হলো শঙ্খচিলের ডানা,
যা উড়ে যায় নীল আকাশের পানে।
তোমার কলমে লেখা হলো এক অজানা গল্প,
যা কাটিয়ে দেয় পৃথিবীর সব আন্ধকার।
তুমি যে লিখো, তা নিঃশব্দ বিপ্লব,
তোমার প্রতিটি শব্দ যেন অগ্নিসংযোগ।
তুমি শব্দের নিঃশব্দ যুদ্ধ,
যা খোঁজে স্বাধীনতা, বিচ্ছিন্ন পথের দিকে।
তোমার কবিতা দুঃখের আকাশ ছেঁড়ে যায়,
জন্ম নেয় এক নতুন পৃথিবী, যেখানে আশা রাজ করে।
---
৩. কবিতার সন্ন্যাসী- বিচিত্র কুমার
তুমি কবিতার নির্জন বাউল,
যার গানে মিশে থাকে শূন্যতার গন্ধ।
তোমার জীবন সুরের মেঘলা ভোর,
যেখানে একাকিত্ব খেলে সাদা মেঘের সঙ্গে।
তুমি যেন পাহাড়ের চূড়ায় একা দাঁড়ানো বৃক্ষ,
যার শিকড়ে মিশে আছে প্রেমের তৃষ্ণা।
তোমার প্রতিটি কবিতা সাগরের ঢেউ,
যা ছুঁয়ে যায় হৃদয়ের গোপন তীরে।
তুমি শব্দের সন্ন্যাসী, মন্ত্রের ধারক,
যার কবিতা ছেড়ে যায় চিরকালীন ধ্বনি।
তোমার কলম যেন অমরত্বের রচনা,
যে রচনার পাতায় প্রতিটি স্তবক গায়, যন্ত্রণা ও মুক্তি।
তুমি শব্দের তীর্থযাত্রী,
যার পদচারণায় পৃথিবী এক নতুন মুখে রূপান্তরিত হয়।
তোমার কবিতা, নীরবতা ও বিক্ষোভের মিশ্রণ,
একভাবে থাকে মর্মর ধ্বনি, একদিকে থাকে শান্তির অভিজ্ঞান।
---
৪. প্রেমের অগ্নিবাণী- বিচিত্র কুমার
তোমার প্রেমিক শব্দেরা দাউদাউ আগুন,
যা ছুঁয়ে যায় বিষণ্নতার শীতল হৃদয়।
তোমার কবিতা রক্তাক্ত গোলাপ,
যার প্রতিটি পাঁপড়িতে ফুটে আছে স্মৃতির দাহ।
তুমি শব্দের কারিগর, রাতের তারার মতো,
তোমার আলোয় জ্বলে উঠে প্রেমিকের চোখ।
তোমার কবিতা বেহালার সুর,
যা বাজে ব্যথিত হৃদয়ের গভীরতায়।
তোমার প্রেমিকা শব্দের খোঁজে,
যা আগুনে পোড়ে, তবুও ঝলমলে থাকে।
তুমি কবিতার আগুন, প্রেমের দাহ,
যা পুরো পৃথিবীকে এক মুহূর্তে জ্বালিয়ে দেয়।
তোমার প্রতিটি পংক্তি যেন অগ্নিস্মৃতি,
যার মাঝে জ্বলতে থাকে প্রেমের গোপন আগুন।
তোমার কবিতা একটা অমলিন শিখা,
যা রাত্রির অন্ধকারে জ্বলে থাকে, মিশে যায় প্রেমের অশ্রুতে।
---
৫. নক্ষত্রের কবি- বিচিত্র কুমার
তুমি নক্ষত্রের কবি, আকাশের লেখক,
তোমার শব্দেরা চাঁদের আলোয় সিক্ত।
তোমার কলম পাহাড়ি ঝর্ণা,
যা বয়ে যায় সময়ের বুক চিরে।
তুমি যেন মরূদ্যানের শান্তি,
যেখানে আশ্রয় খোঁজে ক্লান্ত পথিক।
তোমার কবিতা হেমন্তের শিশির,
যার প্রতিটি বিন্দুতে জমে থাকে আকাশের কান্না।
তুমি আকাশের কথা, নক্ষত্রের কণ্ঠ,
যার কবিতা শুধু রাতের গল্প নয়,
বরং এক দীর্ঘযাত্রার সঙ্গী,
যা শেষ হয় না কখনো, শুধুই চলতে থাকে অন্ধকারে।
তোমার কবিতা মেঘের গুনগুন,
যা বাজে আকাশে, পৃষ্ঠে পড়ে মাটির ভাষা।
তুমি কবিতার নক্ষত্র, রাত্রির পথিক,
যার আলো ছড়িয়ে যায় পৃথিবীর গভীরতম কোণে।
---
৬. শব্দের পবিত্র প্রেমিক- বিচিত্র কুমার
তুমি শব্দের পবিত্র প্রেমিক,
তোমার কলমের কালি যেন কালো রাত্রির নক্ষত্র।
প্রতিটি চরণে তুমি এঁকে যাও জ্যোৎস্নার রূপকথা,
যেখানে বেদনার কাঁটা ফুল হয়ে ফুটে।
তোমার কবিতা বৃষ্টি, যা জাগিয়ে তোলে মৃত প্রকৃতি,
তোমার শব্দ বয়ে আনে প্রেমিক হৃদয়ের কান্না।
তুমি যেন অমর একটি নদী,
যার প্রতিটি ঢেউতে বাঁধা আছে অশ্রু আর আশা।
৭. তোমার শব্দের আগুন- বিচিত্র কুমার
তোমার শব্দ আগুন, যা পোড়ায় না—
বরং তাতে জীবনের কুয়াশা গলে গিয়ে উষ্ণ আলো ছড়ায়।
তোমার কবিতা একখণ্ড রক্তাক্ত পাখি,
যার ডানায় জমে থাকে স্বপ্নের রং।
তুমি লিখতে জানো ব্যথার গোপন ভাষা,
যে ভাষায় প্রেমিকেরা জীবনের মানে খুঁজে পায়।
তোমার প্রতিটি চরণ ঝড়ের মধ্যে আশ্রয়,
তোমার কবিতা এক বুক নিঃশ্বাস।
৮. হেলাল হাফিজ, তুমি অনন্তের কবি- বিচিত্র কুমার
তুমি অনন্তের কবি, সময় তোমার নাম মুখস্ত বলে।
তোমার কবিতা এক শঙ্খের ধ্বনি,
যা হারানো পথিকের কানেও পৌঁছে।
তোমার প্রতিটি শব্দ যেন কুয়াশায় ঢেকে থাকা প্রভাত,
যেখানে সূর্যের কিরণ খুঁজে পায় জীবনের মানচিত্র।
তুমি লিখতে জানো প্রেমের সেই গান,
যা বিরহের রাতেও হৃদয় ভরিয়ে রাখে।
তুমি যেন শব্দের মেঘ, যা ঝরে পড়ে প্রজাপতির ডানায়,
তোমার কবিতা আকাশের নীলতায় লুকানো একটি সূর্য।
৯. কবিতার নির্জন পাখি- বিচিত্র কুমার
তুমি কবিতার নির্জন পাখি,
তোমার ডানা মেলে ধরো আবেগের অরণ্যে।
তোমার প্রতিটি শব্দ যেন হারিয়ে যাওয়া নৌকার পাল,
যা একদিন ফিরে আসে কল্পনার তীরে।
তোমার কবিতা ঘুম ভাঙায় মৃত হৃদয়,
তোমার চরণে জেগে ওঠে বিষণ্নতার ফুল।
তুমি কবিতা দিয়ে জোড়া লাগাও ভাঙা আকাশ,
তোমার শব্দেরা বাঁচতে শেখায়, মরতেও শেখায়।
১০. তুমি জীবন, তুমি কবিতা- বিচিত্র কুমার
তুমি জীবন, তুমি কবিতা,
তোমার শব্দে মিশে থাকে আকাশ আর মাটির মেলবন্ধন।
তুমি লিখলে অশ্রু, যা পড়ে হৃদয়ের বইয়ের পাতায়,
তুমি লিখলে প্রেম, যা ফুল হয়ে ফোটে।
তুমি শূন্যতার গভীরে এঁকে যাও আশা,
তোমার কলমের আঘাতে বেদনারও অর্থ জাগে।
তুমি হেলাল হাফিজ, শব্দের রাজা,
তোমার কবিতায় পৃথিবী নতুন করে বাঁচে।
নামঃ বিচিত্র কুমার
গ্রামঃ খিহালী পশ্চিম পাড়া
পোস্টঃ আলতাফনগর
থানাঃ দুপচাঁচিয়া
জেলাঃ বগুড়া
দেশঃ বাংলাদেশ
https://www.facebook.com/profile.php?id=100014642137028&mibextid=ZbWKwL