১. হেমন্তের মুখরিত ডাক- বিচিত্র কুমার


তুমি এলে যেন মাঠের শীষ, শীষগুলো ঝিরি ঝিরি বাতাসে দোলায়,
তোমার শীতল শ্বাসের কাঁপনে ঝরে পাতা, যেন শরতের বিদায়-বাণী।
দূরে ঝিলের উপর ভাসে সাদা মেঘের ছায়া, যেনো তোমার স্পর্শে আকাশ ঢলে পড়ে,
তুমি যখন আমার পাশে এসে বসো, পৃথিবীর এই নীরবতা কথা বলতে শেখে।
তোমার চোখে জ্বলে এক গভীর মায়া, যেনো শীতের পাখিদের পাখায় ভর করে উড়ে,
তোমার প্রতিটি কথা যেনো বন-বাঁশির সুর, হৃদয়ে ছড়ায় কোমল সজীবতা।


---

২. চাঁদনীর রূপে তোমার চোখ- বিচিত্র কুমার


তোমার চোখে জ্বলে চাঁদের মায়া, হেমন্তের নীলাভ আলোর ছোঁয়ায়,
নির্জন আকাশের তারারাও বোধ হয় কেবল তোমার দিকে তাকিয়ে থাকে।
তোমার হাসিতে রাত্রি যেন তার সমস্ত সৌন্দর্য ঢেলে দেয়,
তোমার কাছে এসে আকাশের জোনাকিরাও যেন গোপনে কেঁদে ফেলে।
চোখের ভেতর সেই আলো মিশে যায়, যেনো আকাশের গভীরতা,
তোমার চোখের নিচে ঝরে পড়ে স্বপ্নের ছায়া, হেমন্তের চাঁদের মতো।


---

৩. নিঃশব্দে ঝরে যায় প্রহর- বিচিত্র কুমার


তুমি এলে নীরবতা বয়ে, হাওয়ায় মিশে গেল স্রোতহীন নদীর স্পন্দন,
তোমার ঠোঁটে এক হাসি, যেন ফসলের ঘ্রাণে ভরপুর পৃথিবীর নিবেদন।
তোমার স্পর্শে প্রহর গুলোও মিঠে মধুর ছায়ায় ছেয়ে যায়,
তোমার অস্তিত্বে পৃথিবীর সমস্ত সুর যেনো এক সুরে বাজে।
তোমার পাশে বসে কেটে যায় রাত, যেন এক অনন্ত পরিভ্রমণ,
তোমার ছোঁয়া ভরে তোলে সমস্ত সময়, নিঃশব্দে গড়ে উঠে প্রেমের এক কাহিনী।


---

৪. রাতের শিশিরে ভেজা পথ- বিচিত্র কুমার


হাঁটছি রাতের শিশির ভেজা পথে, যেনো প্রতিটি কদমে তুমি ছোঁয়া দিচ্ছো,
কাঁচের মতো স্বচ্ছ সেই শিশিরের জলে তোমার ছায়া গলে গলে পড়ে।
শীতের প্রথম ঠান্ডা শীতে তুমি আমার হাত ধরে বলো,
এই পথ, এই রাত, যেনো আমাদের চিরন্তন সাক্ষী হয়ে থাকে।
চাঁদের আলোর নীচে ছায়ার মাঝে তোমার মুখের স্নিগ্ধতা যেনো জ্বলে,
তুমি আছো বলে রাতের আঁধারেও ফুলেরা উন্মুক্ত হয়ে ফোটে।


---

৫. হেমন্তের মেঘলা আলিঙ্গন- বিচিত্র কুমার


তুমি এসে বসলে যেনো মেঘের কোমল আলিঙ্গনে,
গোধূলি রঙের নীল-কমলা মিশে তোমার মুখে খেলছে আঁকিবুঁকি।
মেঘেরা তোমার ছোঁয়ায় সরে যায়, সূর্য ঢলে পড়ে তোমার শ্যামল মুখে,
তোমাকে ঘিরে থাকে এই সন্ধ্যা, যেনো কোন এক মায়াবী গল্পের দৃশ্য।
তোমার প্রতিটি কথা যেনো হাওয়ায় মিশে মৃদু সুরে বাজে,
তুমি আছো বলে সন্ধ্যার এই মায়া ও আলোর খেলা অনন্ত মনে হয়।


---

৬. হেমন্তের আলোর পরশ- বিচিত্র কুমার


তোমার আলোকিত উপস্থিতি যেনো হেমন্তের উজ্জ্বল দিনের ছোঁয়া,
মনের ভেতর আলোর রেখা আঁকে, যেনো প্রত্যেক শ্বাসে তুমি মিশে আছো।
তোমার হাসির আলোয় সূর্যেরও লজ্জা হয়, দিনের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে,
তোমার স্পর্শে যেন পৃথিবী ও আমি একই ছায়ায় বন্দী।
তোমার আলোর মাঝে মন যেন নিজেকে হারিয়ে ফেলে,
তুমি আছো বলে এই পথচলাও হয়ে ওঠে মুগ্ধতার এক মিছিল।


---

৭. ঝরা পাতার নীড়ে বসে- বিচিত্র কুমার


তোমার সাথে বসি ঝরা পাতার নীড়ে, অমলিন শূন্যতা ভরিয়ে তোলে,
তোমার কণ্ঠের কোমল সুর, মনে হয় যেনো হারিয়ে যাওয়ার আহ্বান।
এই পাতাগুলোর মতোই আমরা কখনও এক হবো না হয়ত,
কিন্তু প্রতিটি পাতায় তোমার স্মৃতির ছোঁয়া রেখে যাই।
ঝরা পাতার সঙ্গেই একদিন স্মৃতির ধুলো জমবে,
তোমাকে পেয়ে যেনো আমি বয়ে চলি সেই মধুর ধূসরতায়।


---

৮. হেমন্তের নরম রোদের হাতছানি- বিচিত্র কুমার


তুমি আমায় বললে নীরবে, হেমন্তের নরম রোদ ঝরে পড়ল চুলে,
তোমার স্নিগ্ধ হাতের স্পর্শে শীতের প্রথম ছোঁয়াও যেন মিষ্টি মনে হলো।
তোমার ছায়া মিশে যায় রোদে, তোমার স্পর্শে সবকিছু হয়ে যায় স্নিগ্ধ,
তুমি আছো বলে শীতের কাঁপনও যেনো এক মধুর গান হয়ে ওঠে।
তোমার উপস্থিতি যেনো কোমলতার উৎস, যার ছায়ায় হারাই নিজেকে,
তোমার স্নেহের উত্তাপ, শীতের হিমশীতল বুকে এনে দেয় উষ্ণতা।


---

৯. ঝরা পাতার ধূসর স্মৃতি- বিচিত্র কুমার


তুমি আমায় ছুঁয়ে গিয়েছিলে এক ঝরা পাতার মৌনতায়,
মনে হলো, হেমন্তের প্রতিটি পাতা যেন তোমার স্পর্শের স্মৃতি বয়ে নিয়ে চলে।
ধূসর পাতার ঝরে পড়া প্রতিটি মুহূর্তে তুমি আছো,
তোমার ছোঁয়ার কোমলতা এখনো হৃদয়ে মৌন সুর তোলে।

সেই মুহূর্তগুলো, যেন এক এক করে ঝরে পড়ছে পাতার মতো,
তুমি ছুঁয়ে গেলে, ধূলির মতো মিশে গেলো আমার সকল অপেক্ষা।
তোমার স্পর্শে ঝরা পাতার নীরবতাও কথা বলত,
তোমার উপস্থিতিতে মৌনতা পেলো ভাষা, আর আমার হৃদয় পেলো স্বপ্নের পথ।

আজও সেই ধূসর স্মৃতিগুলো ভাসে,
ঝরা পাতার শূন্যতায় তোমার ছায়া মেলে ধরা।
তুমি আমায় স্পর্শ করে গেলে, যেন একটা অনন্ত প্রতীক্ষায় বেঁধে গেলে,
তোমার সেই অনুপম ছোঁয়া এখনো আমায় মৌনতায় ভরিয়ে রাখে,

এই ঝরা পাতার ধূসরতার মাঝেই তুমি আছো,
তোমার স্মৃতির গুঞ্জনে হৃদয়ের প্রতিটি কোণ ঝরে যায় নীরবতায়।
তুমি আমায় ছুঁয়ে গিয়েছিলে, আর আমি সেই ছায়ায়,
হেমন্তের প্রতিটি ঝরা পাতায় তোমাকেই খুঁজে ফিরি।



১০.শেষ বিকেলের আলোয় তুমি- বিচিত্র কুমার

হেমন্তের শেষ বিকেলের আলোয়, তুমি এলে চুপিসারে,
নিঃশব্দের ভেতর বাজলে সুর, যেন একটি হারানো স্বপ্নের সন্ধানে।
তোমার মিষ্টি হাসিতে আমার নিঃস্ব হেমন্তের ঝরা পাতায় প্রাণ ফিরে আসে,
তোমার ঠোঁটের কোণে হাসির রেখা, যেন আকাশের শেষ সোনালি আভা।

তুমি এলে, সন্ধ্যার চাঁদ উঠল আরেকবার নতুন আলোয়,
তোমার ছায়া মেখে আলোর পরশে এই পৃথিবী হয়ে উঠল নূতন,
যেন হেমন্তের শেষ বাঁশির সুরে মিশে আছে তোমার কোমল হাতের স্পর্শ,
আমাদের মিলনের শেষ রাত্রি যেন নক্ষত্রের সাথে আলিঙ্গনে বাঁধা।

হৃদয় জুড়ে জমে থাকা কথাগুলো বলে যেতে চাই,
তুমি আছো বলে এ জীবন যেন পূর্ণ, আর কিছুই চাই না,
তোমার কাছে এই বিকেল, এই ঝরা পাতার মৌনতা রেখে,
আমি হেমন্তের মায়াবী ছায়ায়, ভালোবাসার ছন্দে হারিয়ে যাই।


---

নামঃ বিচিত্র কুমার
গ্রামঃ খিহালী পশ্চিম পাড়া
পোস্টঃ আলতাফনগর
থানাঃ দুপচাঁচিয়া
জেলাঃ বগুড়া
দেশঃ বাংলাদেশ

https://www.facebook.com/profile.php?id=100014642137028&mibextid=ZbWKwL