(০১)
চাঁদনী
-বিচিত্র কুমার

তোমার চোখের গভীরে আমি দেখেছি এক চাঁদনি রাত,
যেখানে নক্ষত্রেরা যেন নিঃশব্দে বুনে প্রেমের জাল।
তোমার পলকের প্রতিটি স্পর্শে এক অজানা আহ্বান,
যা আমাকে টেনে নিয়ে যায় এক অমোঘ স্বর্গীয় কাল।

তোমার হাসি যেন সাগরের ঢেউ,
যা প্রতিটি বালুকণায় আনে এক নিঃশব্দ সঙ্গীত।
তোমার হাসির ছায়ায় খেলে যায় আলো-অন্ধকার,
যেখানে আমার হৃদয় খুঁজে পায় তার নীরব প্রতীতি।

চাঁদনি রাত জানে, তোমার চুলের মৃদু ঘ্রাণে,
ঝরে পড়ে শরতের অচেনা ফুলের সুবাস।
তোমার চলার প্রতিটি শব্দ যেন বাতাসের বুনো সুর,
যা আমার বুকের গভীরে তোলে স্পন্দনের পরশ।

তোমার ঠোঁটের ধারে জেগে থাকে নীরব কবিতা,
যা উচ্চারণ না করেও ছুঁয়ে দেয় অন্তরের দহন।
তুমি কথা না বললেও আমি শুনি তোমার মনের স্রোত,
যেখানে ভেসে যায় হাজারো অজানা প্রণয়-মরণ।

তোমার অভিমানে আমি খুঁজে পাই বৃষ্টিভেজা মেঘের মাদকতা,
যা একদিকে ভাঙে, আবার অন্যদিকে বাঁধে।
তোমার দৃষ্টির গভীরতায় হারিয়ে যায় পৃথিবীর সমস্ত ব্যথা,
যা হৃদয়ের এক অচেনা তৃষ্ণাকে তৃপ্ত করে রাখে।

চাঁদনি রাতে তুমি এলে যেন সমুদ্র থেমে যায়,
আর ঢেউগুলো বুনতে থাকে নীরব প্রশান্তির কবিতা।
তোমার হাতের স্পর্শে আমার সমস্ত একাকিত্ব ভাঙে,
যেখানে পৃথিবীর সব রঙ এসে মিশে যায় একটি বিন্দুতে।

তোমাকে নিয়ে চাঁদনি রাত সুর তোলে বাতাসের কানে,
আর প্রতিটি আকাশের তারা হয়ে ওঠে প্রেমের সাক্ষী।
তোমার প্রতিটি স্পর্শে জাগে আমার সমস্ত ইন্দ্রিয়,
যা আমাকে নিয়ে যায় সময়ের অতীত ও ভবিষ্যৎ মানচিত্রে।

তুমি এলে রাত হয় এক প্রেমময় সুরভি,
তোমার কণ্ঠে লুকিয়ে থাকে নদীর অশ্রুত মর্মর।
তোমার প্রতিটি শ্বাস আমার বুকের গভীরতায় বাজে,
যেখানে পৃথিবী থেমে যায়, শুধু শোনা যায় প্রেমের কোলাহল।

তোমার ছোঁয়া ছাড়া চাঁদনি হয় রিক্ত,
তোমার চোখ ছাড়া জোছনার আলো হয় নিস্তেজ।
তুমি আমার পৃথিবী, আমার সময়, আমার আকাশ,
তোমার ছায়ায় আমি খুঁজে পাই জীবনের সমস্ত খোঁজ।

তোমার সাথে চাঁদনি রাতের প্রতিটি মুহূর্তে,
আমি হারিয়ে যাই এক মায়াবী জগতে।
যেখানে কেবল তুমি আর আমি—
আর বাকিটা শুধুই নীরব প্রেমের প্রতিধ্বনি।

তুমি চাঁদনি হয়ে ঢেকে রাখো আমার রাতের সমস্ত ঘুম,
তোমার ছায়ায় আমার দেহ, মন, আর আত্মা হয় পূর্ণ।
তোমার ছোঁয়ায় বাঁচে আমার প্রতিটি নিঃশ্বাস,
তুমি চাঁদনি, তুমি প্রেম, তুমি আমার সমস্ত আলোর উদ্ভাস।

(০২)
দূরের বন্ধু
-বিচিত্র কুমার

তোমার চোখ দু'টি ছিলো যেন নীলাভ সাগরের প্রান্তর,
যেখানে গভীরতা আর অসীমতা হাত ধরে ছুটে যায়।
প্রতিটি পলক যেন আলো-ছায়ার খেলা,
যা আমার একাকীত্বের শূন্য আকাশে রং ছড়িয়ে দেয়।
তুমি ছিলে যেন এক দূরপথের পথিক,
যার পায়ের ছাপ মুছে যায় বালিতে, কিন্তু থেকে যায় হৃদয়ের মাটিতে।

তোমার হাসি ছিলো সকালের প্রথম রোদ্দুর,
যা শিশির ভেজা পাতায় ঝিলমিল করে।
প্রতিটি শব্দে তুমি বুনে দিয়েছিলে এমন এক মায়া,
যা ছুঁয়ে দিয়েছিল আমার ভাঙাচোরা অনুভূতিকে।
তোমার উপস্থিতি, আমার অস্তিত্বের এক নিঃশব্দ পালক,
যা ঝরে পড়েও হৃদয়ের মায়াবী বাঁশির সুর হয়ে বেজে ওঠে।

তুমি দূরে ছিলে, তবু যেন সবসময় কাছে,
তোমার নাম ধরা থাকতো আমার প্রতিটি শ্বাসে।
তোমার কণ্ঠস্বর ছিলো বসন্তের কোকিলের গান,
যা শূন্য দুপুরে আমাকে নিয়ে যেতো শৈশবের গোপন বাগানে।
তুমি জানো কি?
তোমার স্পর্শ, আমার কল্পনায় মায়াবী জলতরঙ্গ,
যা ভাঙতে জানে না, শুধু গড়ে তোলে হৃদয়ের নতুন জগৎ।

তোমার চিঠি, ছিলো যেন শুকনো পাতায় লেখা বৃষ্টির কবিতা,
যার প্রতিটি শব্দে আমি খুঁজে পেতাম ভালোবাসার নদী।
তুমি লিখতে—‘আমি আছি,’
আর আমি পড়তাম—‘তুমি থাকবে চিরকাল।’
তোমার অক্ষরগুলো ছিলো দূর আকাশের জ্যোৎস্না,
যা ঝরে পড়ে আমার একাকী রাতের বুকে।

তুমি ছিলে এক আশ্রয়, এক আকাশছোঁয়া গাছ,
যার ছায়ায় আমার স্বপ্নেরা বিশ্রাম নিতো।
তোমার স্মৃতি, যেন কুয়াশায় ঢাকা শরতের ভোর,
যেখানে স্পষ্টতা নেই, তবু রহস্যের সৌন্দর্যে পূর্ণ।
তোমার প্রতিটি কথা, ছিলো যেন সন্ধ্যাকালের প্রদীপ,
যা এক অন্ধকার ঘরে আলোকিত করেছিল আমার অস্তিত্ব।

তুমি ছিলে এক অদৃশ্য নদী,
যার স্রোতে ভেসেছিল আমার ভাঙা মন।
তোমার দূরত্ব, যেন পাহাড়ের ওপারের অচেনা ভূমি,
যাকে আমি ছুঁতে পারি না, তবু দেখতে থাকি।
তুমি ছিলে আমার অনুভূতির এক অনন্ত ভূমিকা,
যা কখনো শেষ হবে না, শুধু গড়ে তুলবে নতুন অধ্যায়।

আজও তোমার অনুপস্থিতি কথা বলে,
যেন শুকনো নদীর তীরে পড়ে থাকা ভাঙা নৌকা।
তোমার ছায়া যেন সময়ের সঙ্গে লুকোচুরি খেলে,
তবু স্মৃতির রোদে বারবার দেখা দেয়।
তুমি ছিলে, আছো, থাকবে—
আমার হৃদয়ের এক মায়াবী দূরের বন্ধু।

(০৩)
ভালোবাসার স্মৃতিসৌধ
-বিচিত্র কুমার

তোমার চোখ যেন এক অজানা সমুদ্র,
যার গভীরতা মাপার সাহস করে না পৃথিবীর কোনো নাবিক।
প্রতিটি পলক এক একটি ঢেউ,
যা এসে ভাঙে আমার অস্তিত্বের নির্জন সৈকতে।
তোমার দৃষ্টিতে আমি দেখি চির বসন্ত,
যেখানে রঙের কোলাজে হারিয়ে যায় সময়।

তোমার হাসি যেন প্রথম ভোরের রোদ্দুর,
যা ছড়িয়ে দেয় উষ্ণতা আমার শীতল অস্তিত্বে।
তোমার ঠোঁটের কোণে জমে থাকা ক্ষুদ্রতম হাসিটিও
জ্যোতির ঝলক হয়ে আলো দেয় আমার ভাঙা স্বপ্নগুলো।
তুমি যে সঙ্গীত, শুনলে ভাঙে সমস্ত পাথর,
তুমি এক জোড়া পাখির গান, যা ছুঁয়ে যায় আকাশের কিনারা।

তোমার কণ্ঠস্বর যেন বর্ষার রিমঝিম ধারা,
যার প্রতিটি শব্দ হৃদয়ে বাঁধে সুর।
তোমার প্রতিটি কথা একেকটি উপকথা,
যা জন্ম দেয় চন্দ্রহারা রাতের গল্প।
তুমি জানো কি? তোমার একবার ‘ভালোবাসি’ বলার শব্দে
পৃথিবী বদলে দেয় তার নিজস্ব অক্ষ।

তোমার চুলের গন্ধ নিয়ে আসে ঋতুর পরিবর্তন,
তোমার প্রতিটি স্পর্শে নতুন জন্ম নেয় আমার সমস্ত অনুভূতি।
তুমি ছুঁলে গাছেরা আরও সবুজ হয়,
তোমার উপস্থিতিতে শুকনো পাতাও রঙ পায়।
তুমি আমার পৃথিবীর মেঘলা দিন,
যার মাঝে রোদের টুকরো খুঁজে পাই আমি।

তোমার ভালোবাসা যেন এক মহাকাব্য,
যার প্রতিটি পঙক্তিতে লেখা রয়েছে জীবনের গভীর দর্শন।
তুমি সেই কবি, যার তুলিতে আঁকা প্রতিটি রেখা
জন্ম দেয় মহাকালের এক অসীম সৃষ্টি।
তুমি ছাড়া আমি শূন্য,
যেন দিগন্তের কাছে গিয়ে থেমে যাওয়া নদীর স্রোত।

তোমার অভিমান যেন নির্জন রাতের ঝড়,
যা ভাঙে আমার ঘুমিয়ে থাকা স্বপ্ন।
তোমার আদর যেন শিশিরে ভেজা পাপড়ি,
যা জীবনকে শেখায় কোমলতার সংজ্ঞা।
তোমার হাত ধরে হাঁটতে গিয়ে অনুভব করি,
জীবনের সমস্ত দুঃখ এক নিমেষে উড়ে যায় বাতাসের মতো।

তোমাকে নিয়ে গড়েছি এক স্বপ্নের রাজপ্রাসাদ,
যার প্রতিটি ইটের গায়ে লেখা রয়েছে ভালোবাসার ইতিহাস।
তুমি সেই মায়া, যে মায়ায় হারিয়ে যায় দিন আর রাত।
তুমি সেই আলো, যার সামনে সূর্যও ম্লান হয়ে যায়।

তোমার চোখের তারা দিয়ে বুনেছি আকাশের নক্ষত্রমালা,
তোমার প্রেমে স্নান করে জীবনের প্রতিটি ক্ষত হয়েছে সার।
তোমার ছায়া থেকে রচনা করেছি এক স্মৃতিসৌধ,
যা হাজার বছর ধরে কেবল ভালোবাসার গান গাইবে।
তুমি-ই আমার শেষ গন্তব্য,
তুমি-ই ভালোবাসার চিরন্তন স্মৃতিসৌধ।

(০৪)
তোমার অপেক্ষায়
-বিচিত্র কুমার

এখনো আমি একগুচ্ছ গোলাপ নিয়ে দাঁড়িয়ে,
তোমার অপেক্ষায় এই সন্ধ্যার নিস্তব্ধতায়।
বাতাসে ভাসছে শুকনো পাতা আর
অন্ধকারে ডুবছে দূরের শহর।
তোমার স্পর্শহীন স্মৃতিগুলো আজ
আমার হাতে ধরা গোলাপের কাঁটা হয়ে,
রক্তের মতো ভালোবাসার রঙ ছড়িয়ে দিচ্ছে।

তুমি কি জানো,
এই গোলাপগুলো শুধু তোমার জন্য,
তাদের সুবাস শুধু তোমার নাম ধরে ডাকে।
প্রতিটি পাপড়িতে লুকানো রয়েছে
আমার হাজারো নীরব কথার ছায়া।
তুমি না আসলে,
এই গোলাপগুলোও হয়তো শুকিয়ে যাবে,
আমার মতো।

রাতের আকাশে জ্বলজ্বলে তারাগুলো
আমার একলা হৃদয়ের আকাশ ভরিয়ে রাখে।
তুমি কি কোনো একসময় ভেবেছো,
আমি কেনো এইভাবে দাঁড়িয়ে থাকি?
কেনো প্রতিটি সন্ধ্যায়
তোমার ছায়ার পথ খুঁজি?
তোমার সান্নিধ্যের আশায়,
আমার হৃদয় এখনো ঝরে পড়া শিশির হয়ে
তোমার পায়ের নিচে বিছিয়ে যেতে চায়।

আজ যদি তুমি আসো,
এই গোলাপগুলো তোমার হাতে তুলে দেবো।
তোমার চোখে মিশে যাবো আমি,
তোমার হাসিতে লুকিয়ে থাকবো।
তোমার কণ্ঠে শুনবো সেই সুর,
যা আমাকে বারবার বাঁচতে শেখায়।

তুমি কি জানো,
তোমার না আসার কষ্ট আমাকে ভেঙে দেয়?
তবু আমি প্রতিদিন এই পথে ফিরে আসি।
গোলাপ নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকি,
তোমার অপেক্ষায়।
তুমি না এলে,
এই কাহিনী হয়তো অপূর্ণই থেকে যাবে।
কিন্তু আমি দাঁড়াবো,
যতদিন আমার হৃদয়ে
তোমার ভালোবাসার স্পন্দন বেঁচে থাকে।

(০৫)
ঘোমটা পড়া হলুদ পরী
-বিচিত্র কুমার

হলুদ পরীর শাড়ি, তাজা সরিষা ফুলের গন্ধে মাখা,
তাদের চোখে খোলামেলা চাঁদের আলো, যেন রহস্যময় চাহনি।
যেন তারা শস্যক্ষেতের মাঝখানে দাঁড়িয়ে, কোমল চরণে নাচে,
গাইছে প্রেমের সুর, হৃদয়ের গভীরে এক সুগন্ধি পাখির বাস।

প্রতি প্রতিটি হলুদ ফুল, এক এক রূপসী মায়াবী পরী,
গাঢ় শীতে এসে জানিয়ে দেয়, প্রেমের আবহাওয়াতে স্নেহের ছোঁয়া।
তারপর ফুলের হাসি, ঝরনার মতো সুরে গড়ে,
আকাশে মেঘের সাথে মিশে, এক-একটি প্রেমের চিঠি পাঠায়, পানে।

মাঠের মাঝখানে, সেই ফুলের দুলুনি যেন মহাকাব্যের গান,
প্রকৃতি সারথি, তার কোমল হাত ধরে এক নৃত্য শিখায়।
তারা বলে, ‘‘প্রেম তো এমনই—এক দৃষ্টি, এক হেসে হাসি,
এমন মধুর আত্মা, যে শূন্যতার মাঝে বার বার জন্ম নেয়।’’

তাদের চোখের পাতায় ফুটে ওঠে শুকনো অঙ্গনে,
শুধু খুঁজে চলে এক স্নিগ্ধ আলোর অমলিন পথ।
যতবার তারা চলে, সারা মাঠে ছড়িয়ে পড়ে এক নতুন চুম্বন,
এক বন্ধন—যতবার ঘাসে, তারা পথ মুছে দেয়, হৃদয়ের ক্ষত।

প্রতিটি হলুদ পরী, যেন জীবনের এক অমোঘ নিয়ম,
এঁরা ভালোবাসার পুরাণ, মনের দোরে হেসে বলে, ‘‘মেনে নাও এই সুগন্ধ,
এটাই তৃষ্ণা, এটাই সিক্ততা, এটা প্রেমের মূল, যে থাকে সর্বদা।’’

(০৬)

প্রেমের মৃত্যু ঘণ্টা
-বিচিত্র কুমার

তোমার চোখের দিকে তাকিয়ে মনে হতো, যেন এক চাঁদের পুকুরে জ্যোৎস্নার ঢেউ খেলে যাচ্ছে।
আমার হৃদয় ছিল সেই পুকুরের একলাসী মাছ, তোমার আলোয় বাঁচতাম।
তুমি বলেছিলে, "এই প্রেম চিরদিন থাকবে, আমাদের মাঝখানে কিছুই বাধা হতে পারবে না।"
আমি মুগ্ধ হয়েছিলাম, যেন বৃষ্টিভেজা আমের ডালে প্রথম কুঁড়ির ঘ্রাণ।

কিন্তু সেই দিন—
যখন তোমার কণ্ঠস্বর গভীর রাতে ঝড়ের মতো হয়ে উঠল,
তুমি বললে, "এই শরীর আমাদের প্রেমের প্রতিজ্ঞার শেষ প্রমাণ।"
আমি ভেবেছিলাম, শরীর কি এতটাই জরুরি, যেখানে আত্মা বুনে আছে প্রতিটি কথায়?
তুমি কাছে এলে, যেন নিস্তব্ধ সন্ধ্যার দিকে ধেয়ে আসছে কালবৈশাখীর প্রথম ঝাপটা।
আমাদের অঙ্গগুলো মিশে গেল,
জ্যোৎস্নার পুকুরে যেন কালো কাদার ঢেউ লেগে গেল।

সেই রাতের পর, তোমার চোখগুলো পাল্টে গেল।
জ্যোৎস্না মুছে গিয়ে সেখানে আগুনের লেলিহান শিখা।
আমার হৃদয় বুঝলো, এই আগুন প্রেম নয়,
এটি সেই আগুন যা বনভূমিকে পুড়িয়ে সাফ করে দেয়।

প্রেম—
যা ছিল নদীর ধারায় বয়ে চলা নির্মল স্রোত,
হঠাৎ হয়ে উঠল বিষাক্ত ধোঁয়ার মতো।
তুমি দূরে সরে গেলে,
আমাদের কথাগুলো ঠুনকো হয়ে গেল,
কথা বলতেও কষ্ট হত, যেন মরুভূমির শুকনো হাওয়া শ্বাসকে ছিঁড়ে দিচ্ছে।

আমি জেনেছিলাম, বিয়ে আগে যা হয়েছিল, তা আমাদের সম্পর্ককে পবিত্র নয়,
নোংরা এক খেলার মতো করে দিয়েছে।
প্রেমের মৃত্যু হলো সেদিন,
যেদিন আমাদের আত্মার জায়গায় আমাদের শরীর প্রাধান্য পেল।

তুমি আমাকে ছেড়ে গেলে,
আমি তাকিয়ে থাকলাম সেই শূন্যতায়, যেখানে একদিন স্বপ্ন ছিল।
প্রেম তখন মৃত,
ঘণ্টার মতো ধ্বনিত হলো আমার হৃদয়ের গভীরে—
শেষ বারের মতো।

দুপচাঁচিয়া,বগুড়া।