মাত্রাবৃত্ত ছন্দেঃ ৬+৬+৬+২
নিশুতি রাত্রি প্রগাঢ় হচ্ছে রাতচরা প্রাণী জেগে,
কেচর-মেচর শব্দ খেপন করছে উচ্চ বেগে।
যুবক বৃদ্ধা সাথিহীন পেঁচা নিরবতা ভাঙে রোজ,
নিষ্ঠুর সেই লাশের সমাজে রাখনি বিন্দু খোঁজ।
 
ওই সমাজে‌‌র কত বসতির কান্নায় কাঁপে বায়ু,
শাস্তির ঝড়ো তৃব্রতা দেখে কম্পিত হয় স্নায়ু।
দায়হীনভাবে ধসে গেছে  কত শক্ত বাঁশের ফালি,
অর্জিত পাপ উজ্জ্বল মুখে মেখে দিছে চুনকালি।

রাতের আকাশে চন্দ্রটা যেন দানবের এক চোখ,
জ্বলজ্বল করে দৃষ্টি রেখেছে দেখতে মৃত্যু শোক।
দূর-দূরান্তে ভেসে আসে ওই কান্নার আহাজারি,
সেই সমাজের নাগরিকদের চলে না খবরদারী।

তুলতুলে দেহ মাটিতে খেয়েছে খসে রয় হাড়গোড়,
বিলাসবহুল জীবন গড়েছে ক্ষমতা ছিল তুখোড়।
আযান ছাড়ায় যেই মুসল্লি নিয়াত বেঁধেছে মনে,
মুক্তির রাহে সিজদায় পড়ে কাঁদতো ঘরের কোনে।

নির্জন রাতে লাশের সমাজে বিচরণ কালে ঘামি,
দাঁড়ি পাকা ওই কত মুরব্বি কাঠগড়ার আসামি।
সূক্ষ্ম নয়নে চেয়ে দেখি আমি তাঁদের মুখের দিক,
কত ইজ্জত করেছে দাফন রাখোনি হিসাব ঠিক।

একশের চালে তিনশের নিতো সুদের হিসাব কষে,
পাহাড় সমান গুনাহ কামিয়ে পুণ্য ভুমি গেছে ধসে।
নাপিত বুড়োর হয়নিতো জেল দেয়নি কর্মে ফাকি,
লবন আনতে পান্তা ফুরাতো ইবাদতে নেই বাকি।

ঘুষের টাকায় হজ্জ্ব করে যে ধরছেন হাজীবেশ,
খবর রাখোনি একটিবারও অনাহারে কাঁদে দেশ।
এমন হাজীরা দেশের মাটিতে খেলছে লুটতারাজ,
বোধের সূর্য উঠবে তখন দেখলে লাশের সমাজ।

আযানের ধ্বনি কর্ণকুহরে পৌঁছাতেই উঠি জেগে,
লাশের সমাজের এমন স্বপ্ন রবে অন্তরে লেগে।

পর্তুগাল থেকে