একটু পর ভোর হবে।
সূর্যের আলোয় হারিয়ে যাবে,
রাতের নির্জন অন্ধকার-

এই শহরটা-
শহরটা আবারও কোলাহলে পরিপূর্ণ হবে।
জীবিকার তাগিদে সবাই বেরিয়ে পরবে কর্মস্থলে।
কেউ গলায় টা-ই ঝুলিয়ে,
কেউ বা গামছা-

কিন্তু,
কিন্তু অসলেই কি অন্ধকার কেটে যায়?  
নাকি আরো গভীর অন্ধকারে নিয়ে যায়?  

যে পুরুষটা-
অফিস শেষ করে রাত্রিতে বাসায় ফিরে
বেলকনিতে একা দাঁড়িয়ে,
দুর আকাশের পানে তাকিয়ে
জলন্ত সিগারেট হাতে নিয়ে,
পাওয়া না পাওয়ার হিসাব কষতে থাকে,
তার-ও কি নির্জন অন্ধকার আসলেই কেটে যায়?

যে প্রেমিক-
তার না হওয়া শুদ্ধতম প্রেমিকা কে ভেবে
ছাঁদের কার্নিশে বসে,
বিষন্নতার ভেলায় করে
একমনে কল্পনার জগতে পারি জমায়,
তার-ও কি নির্জন অন্ধকার আসলেই কেটে যায়?  

এইতো সেদিন-
বেলকনি হতে কান্নার আওয়াজ।
খেয়াল করে দেখলাম কৃষ্ণ বর্ণের একটা মেয়ে  দাঁড়িয়ে।
গায়ের রং দুধে আলতা না বলে
একটা ঘর বাঁধা হচ্ছে না -
ভোর হলে তার-ও কি এই নির্জন অন্ধকার
আসলেই কেটে যায়?

যে বেকার ছেলেটা-
একটা চাকরির জন্য
অসুস্থ মায়ের ঔষধ না নিয়ে
রাত্রি তে বাড়ি ফিরে,
তার-ও কি এই নির্জন অন্ধকার আসলেই কেটে যায়?

যে মা-
তার বুকের মানিক কে হারিয়ে
তাহাজ্জতে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদে,
সে মায়ের-ও কি আসলেই
রাতের নির্জন অন্ধকার কেটে যায়?

যে বাবা-
বারান্দায় দাঁড়িয়ে ঝাপসা চশমা মুছতে মুছতে ভাবতে থাকে, হয়তো-
হয়তো সন্তানদের শখ পূরণ করতে পরলে
আমিও হয়ে উঠতাম পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বাবা,
সে বাবার-ও কি এই নির্জন অন্ধকার আসলেই কেটে যায়?

নাকি,
নাকি শহরের কোলাহলে,
জীবিকার তাগিদে,
বুকের ভিতর ঢাকা পরে যায়
রাতের নির্জন অন্ধকার!  

আর,
আর তারা অপেক্ষা করতে থাকে,
রাতের নির্জন অন্ধকার ফিরে আসার।
আবারও তারা নিজেকে হারিয়ে ফেলে
পাওয়া না পাওয়ার বা হারিয়ে ফেলার
বিধ্বস্ত এক মহাবিশ্বে!  

আসলে-
এসব নির্জন রাত্রির অন্ধকার
তাদের কখনোই কাটে না-
কেবলই মাত্র সূর্যের আলোয়,
পাখিদের কিচিরমিচির শব্দে,
শহরের যান্ত্রিক কোলাহলের ভিড়ে
চাপা পড়ে যায়,
বুকের গভীর থেকে গভীরে..!!