ডঃ তানভীর একজন তাত্ত্বিক পদার্থবিদ।  তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানীরা প্রকৃতির বিভিন্ন বিষয়কে ব্যাখ্যা করেন । মজার ব্যাপার হচ্ছে তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞান প্রাকৃতিক ঘটনার ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণ ও ভবিষ্যৎদ্বাণী করে থাকে।

ডঃ তানভীর সময়, স্থান, এবং মহাবিশ্বের জটিল সব সমস্যা নিয়ে গবেষণা করতে করতেই একদিন তিনি আবিষ্কার করলেন এক অদ্ভুত তত্ত্ব চতুর্থ মাত্রা।  আমরা পৃথিবীর প্রাণীরা ত্রিমাত্রিক ভুবনে বসবাস করি । এই তিনটি মাত্রাকে সাধারণত দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, উচ্চতা বলা হয় ।আমরা  সাধারণত দৈনন্দিন জীবনে তিনটি মাত্রা অনুভব করি।

কিন্তু চতুর্থ মাত্রা, যেটি সময় এবং স্থানকালের চতুর্থ ধারা হিসেবে ধরা হয়, তা নিয়ে ডঃ তানভীর গবেষণা করে পৃথিবীকে তাক লাগিয়ে দেয়।

ডঃ তানভীরের তত্ত্ব অনুযায়ী, তিনি মনে করেন যদি আমরা কোনোভাবে চতুর্থ মাত্রায় প্রবেশ করতে পারি, তাহলে আমরা  সময়কে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো অথাৎ সময়কে দেখতে পাবো, অনুভব করতে পারবো, এমনকি তার মধ্য দিয়ে চলাচলও করতে পারবো।

তবে চতুর্থ মাত্রায় প্রবেশ করতে হলে একটি বিশেষ ধরনের ডিভাইস দরকার। সেই ডিভাইস তৈরির জন্য ডঃ তানভীর তার পুরো জীবন  নিজেকে উৎসর্গ করে কাজ করতে থাকেন।
কয়েক বছর পরে, তিনি অবশেষে সফল হন।

তার ডিভাইসটির নাম দেন 'আয়না'। এই ডিভাইসটি দেখতে সাধারণ আয়নার মতো হলেও এটি ছিল এক জাদুকরী যন্ত্র, যেটা দিয়ে  চতুর্থ মাত্রার দরজা খোলা যেত। প্রথমবার ডিভাইসটি চালানোর সময়, ডঃ তানভীর দেখতে পান যে তার সামনে একটি অদ্ভুত দরজা খুলে যাচ্ছে। দরজার ওপারে সবকিছু অস্পষ্ট, তার মধ্যে দিয়ে তাকাতেই তিনি দেখতে পান তার নিজের অতীত ,শৈশবকালে ঘটে যাওয়া তার সমস্ত ঘটনা । কিন্তু এটা ছিল শুধু শুরু।

ডঃ তানভীর জানতে পারেন এই চতুর্থ মাত্রা শুধু অতীত বা ভবিষ্যৎ দেখার জন্য নয়, বরং এটি পুরোপুরি একটি নতুন বাস্তবতা, যেখানে সময় একদম ভিন্নভাবে কাজ করে।

তিনি আরও খেয়াল করেন চতুর্থ মাত্রার ভিতরে ঢুকলে পৃথিবীর নিয়ম এখানে কাজ করে না। এখানে সময় স্থির, সবকিছুই একসাথে ঘটে। অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ সব একসঙ্গে কাজ করে ।

কৌতূহল বসত একদিন, ডঃ তানভীর সেই আয়নায় প্রবেশ করেন। সেখানে তিনি দেখতে পান অদ্ভুত আকৃতির প্রাণী ,যাদের কোনো নির্দিষ্ট আকার নেই।

তারা সময়ের ভেতর দিয়ে চলাচল করে, তাদের কাছে অতীত বর্তমান ভবিষৎ বলতে কিছু নেই । তারা মুহূর্তের মধ্যে কোটি কোটি আলোকবর্ষ পথ অতিক্রম করতে পারে ।

ডঃ তানভীর তাদের কাছ থেকে জানতে চায় চতুর্থ মাত্রার ভুবন কিভাবে কাজ করে,তারা তাকে জানায় ,আমাদের কাছে কোনো সময়ের সীমাবদ্ধতা নেই, আমরা ভবিষ্যতে কি ঘটবে বর্তমানে কি ঘটবে এবং অতীতে কি ঘটবে সব ঘটনাগুলো আমরা একসঙ্গে দেখতে পাই এবং একই সময়ে সব ঘটনাতে আমরা উপস্থিত থাকতে পারি ।

ডঃ তানভীর একটি বড় প্রশ্নের সম্মুখীন হয় এই চতুর্থ মাত্রার জ্ঞান পৃথিবীতে নিয়ে আসলে তা কি ভালো হবে, নাকি মানুষের জন্য বিপদজনক হবে?

ডঃ তানভীর চতুর্থ মাত্রার জগতে প্রবেশ করে বুঝতে পারেন,পৃথিবীর মানুষ এত বড় শক্তির জন্য এখনও প্রস্তুত নয়। চতুর্থ মাত্রার ডিভাইস আয়নাটি ব্যাপারে যদি পৃথিবীর মানুষকে জানাই,তাহলে সময়ের নিয়ম ভেঙে যেতে পারে,ফলে মহাবিশ্বের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

শেষ পর্যন্ত, ডঃ তানভীর তার আবিষ্কারটিকে গোপন রাখার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি 'আয়না' ডিভাইসটিকে এমন এক জায়গায় লুকিয়ে ফেলেন যেখানে কেউ খুঁজে পাবে না। তিনি জানেন, মানবজাতি যখন সময়ের সঙ্গে খেলা করতে শিখবে, তখন হয়তো তারা চতুর্থ মাত্রার দরজা খুলতে পারবে। তখন হয়তো পৃথিবীর মানুষ প্রকৃতির রহস্য ভেদ করতে পারবে ।