মার্কেটের সিঁড়িতে হাঠাৎ দেখা, এ দেখা দীর্ঘ ১৫ বছর পর।
নাকের ডগা সমান একটা মেয়ে আর ৮/৯ বছরের ছেলে ছিল সাথে।
দেখে মনে হলো, তার বড় মেয়ে আর ছেলে। কথা হয়নি, শুধু চোখাচোখি।
কথা বলার ইচ্ছাও করেনি।
ভাল থাকবে বলেই আমাকে ছেড়েছিল!
আমারও বাধা দেওয়ার কোন যোগ্যতা ছিল না, আর সাহসও দেখাতে পারিনি।
সেই সুযোগে প্রবাসীকেই বিয়ে করে নেয়। বিয়ের পরেই জানতে পারলাম, সিদ্ধান্তটা নিতান্তই তার ছিল।
সুখে থাকুক এই প্রার্থনা করেই ভুলে যাচ্ছিলাম সব।
কিন্তু কিছুদিন পরেই শুনতে পেলাম, প্রবাসীর টাকা আর দেশে আসছে না।
ছেলেটির কেবল দের বছর, মেয়েটি যায় স্কুলে। সামান্য টিউশন করেই চলে সংসার।
সাহস করিনি, কেমন আছে জিজ্ঞাসা করার।
উপকার করতে যেয়ে আত্মসম্মান খোয়ানোর কোন ইচ্ছেই নেই আমার।
আত্মসম্মান ছাড়া মেয়েদের আর কোন বড় সম্পদ যে নেই। যেদিন শশুর বাড়ি চলে যাচ্ছিল; লুকিয়ে লুকিয়ে একটুখানি দেখেছিলাম।
আর আজ; দীর্ঘ ১৫ বছর পর আবার দেখা।
অবিকল মায়ের মতন শান্ত, পরিশুদ্ধ, মুখখানা দেখলাম তার মেয়ের।
কি নিষ্পাপ বিমুগ্ধ চাহনি। এমন মেয়ের, পশুর মতো পিতাও কি কারও থাকতে পারে? স্ত্রীর একটুখানি সুখে থাকার লাগি, নিষ্পাপ সন্তানের কষ্ট দেওয়া পুরুষদেরও আমি ঘৃণা করি।
হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়েছিলাম এতক্ষণ!
চোখ ফিরে তাকালাম চারপাশে। না, তাকে আর দেখা যাচ্ছেনা।
হয়তো অভিমানে নেই কোন অভিযোগ, এত বছর পর নেই রাগ-অনুরাগ-অনুনয়।
হয়তো চোখের কোনার এক ফোটা জলের আচ্ছাদনে, সমর্পণ করেছে নিয়তির।
কবি গুরুর এই লাইটি জপতে জপতেই জন অরণ্যে বিভোর হলাম।
এরা সুখের লাগি চাহে প্রেম, প্রেম মেলে না, শুধু সুখ চলে যায়। এমনি মায়ার ছলনা, এরা সুখের লাগি চাহে প্রেম, প্রেম মেলে না।