(প্রিয় কবি অসীম সাহা'র মৃত্যুতে গভীর শোক ও বিনম্র শ্রদ্ধা)
আজ সারাদিনই কেন জানি
বুকের ভেতরটা বারবারই
কেঁপে উঠছিল, দুপুর গড়িয়ে
বিকেল হঠাৎ খবর পেলাম
তুমি নেই! তুমিতো কবি
আমাদের চেতনার দীপ্ত
মশাল, কারণে অকারণে কত
যে কথা, কত অভিমান
অনুযোগ, গল্প আড্ডা কবিতা
সবমিলিয়ে জীবন জয়ের
সংকল্প।
তুমি কবি কবিতার সাথে
মেলবন্ধন ছিল, ছিল প্রেমময়
প্রীতি, বড় অভিমান ছিল
তোমার বুকে, কবিতায়,
কবিতার শরীর ছুঁয়ে তুমি
অনুভব করতে দেশ,মানচিত্র,
এই বাংলা মা, প্রিয়তম দেশ
সোনালী ফসল, প্রান্তিক
জনপথ, প্রান্তিক মানুষ
আমারই সোনার বাংলা,
কি করে বিশ্বাস করি তুমি
নেই! তবে আজ সারাদিন যে
বুকের কাঁপন উঠেছিল তা
কি শুধুই তোমার চলে
যাওয়ার দূর আকাশে
তারই বার্তা
দিতে? নাকি তোমার প্রতি
আমাদের ভালোবাসাই
বুঝিয়ে দিয়েছি তুমি চলে
যাবে না ফেরার দেশে?
চব্বিশটি বছর আমাদের
পরিচয়, দুই যুগ আগে
আমাদের রাজধানী ঢাকায়
কবিতা উৎসবে; আপন
মহিমায় জড়িয়ে নিয়েছিলে
আমাকে ভালোবাসায়,
বিশ্বাসে আর জীবন জয়ের
গানে, কবিতা আমিও লিখি
যদিও তাকে কবিতা বলে
কিনা আমার তা জানা নেই!
সত্যিই জানিনা, আমাদের
প্রিয় সুনীলদা ( সুনীল
গঙ্গোপাধ্যায়) আমার পিঠে
তাঁর হাত চাপড়িয়ে আমাকে
বলেছিল: তুই পারবি বিক্রম,
সেই মধ্যে দুপুরে তুমিও
ছিলে।
কবি ও কবিতা মিলে যে
সত্যি উদ্ভাসিত হয় সেই
আলো থেকে আমাদের
বাঁচতে শেখায়, শেখায়
জীবন সংগ্রাম, তুমি সেই
মানুষ তাদের মধ্যে একজন,
জীবনের সূচনা লগ্নে সবাই
যখন অর্থবৃত্ত নিয়ে ব্যস্ত
থাকলো তখন তুমি হাতে
নিলে কলম লিখলে শত শত
কাব্য কবিতা, অথচ কি
অভিমানই ছিল
তোমার; আমি তা অনুভব
করেছি বারবার।
তুমি কবি জাগিয়ে জীবন
জয়ের গান আমাদের
করেছো যুথবদ্ধ, তোমার
গানে মিলিয়ে সুর আমি এবং
আমরা জয় করতে চেয়ে
জীবন ও জীবন সংগ্রাম,
তুমি নেই তাই বলে ভেবোনা
আমরা থমকে যাব! তোমার
অবিনাশী বাণী আমাদের
এগিয়ে নিতে যেন সারথি
হয়ে পাশেই থাকবে যা তুমিই
শিখিয়ে ছিলে।
তুমি নেই বলেই কবিতারা
আজ সারাদিন আকাশে
হারিয়ে গিয়েছিল! আকাশ
আজ সারাদিনমান একটানা
কেঁদেই চললো, শুধু তুমি নেই
বলেই কেঁদে উঠলো মন,
কবিতা ও কলম, সত্যি তুমি
নেই; একথা বিশ্বাস করিনি
এখনো! তুমি আছো প্রিয়
কবিদা আমাদের চেতনার
শানিত শক্তিতে, অবিনাশী
কবিতার সম্মিলিত উচ্চারণে
যার প্রতিটি চরণ জুড়ে তুমি
এবং তোমার প্রিয় স্বদেশের
চিন্তায়।
_____________
লালমনিরহাট
১৮.০৬.২০২৪
বিক্রমাদিত্য গুপ্ত