"শুভ জন্মদিন " প্রিয় কবি হেলাল হাফিজ।
কবি হেলাল হাফিজের প্রতি আমার লেখাঃ
বাংলা কবিতার উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম হেলাল হাফিজ।যিনি শুধু শিল্পের জন্য সমস্ত জীবন ত্যাগ করেন।
তিনি ১৯৪৮ সালের ৭অক্টোবর নেত্রকোনা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন।নেত্রকোণার মোগড়া নদীর হাওয়া ও বাতাসের মধ্যে দিয়ে তার বেড়ে উঠা।তিনি নেত্রকোনা দত্ত উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি দেন এবং পরবর্তীতে নেত্রকোণা সরকারি কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন।
বর্তমানে কবি যাপিত জীবনযাপন করছেন। জীবনের শেষ সময় কাটাচ্ছেন ঢাকায় তার এক ভক্তের বাসায় ।কবি গুরুতর অসুস্থ।
বাংলা কবিতা যখন পাঠক বিচ্ছিন্ন, বাংলা কবিতার যখন বেহাল দশা তখনই নতুনত্ব নিয়ে আর্ভিভাব দেশবরেণ্য কবি হেলাল হাফিজের।
"এখন যৌবন তার যার যুদ্ধে যাবার শ্রেষ্ঠ সময়
এখন যৌবন তার যার মিছিলে যাবার শ্রেষ্ঠ সময়"
তার এই নিষিদ্ধ সম্পাদকীয় কবিতা রাতারাতি সারা বাংলাদেশে কবি হিসেবে খ্যাতি এনে দেয়।
এবং"যে জ্বলে আগুন জ্বলে"কাব্যগ্রন্থ বাংলা সাহিত্যে সর্বোচ্ছ পাঠক প্রিয় একটি বই। যে বইটির লাখ লাখ কপি বিক্রি হয় বইমেলায়।
তিনি এখনও বৈবাহিক জীবন শুরু করেননি।যতদূর জানা যায় তার প্রেমিকা হেলেন কে না পাওয়া তার বিবাহ না করার কারণগুলির অন্যতম একটা।
হেলাল হাফিজকে উৎসর্গ করা "মন ধুয়ে নেই জলে" বইটিতে কবি তানভীর জাহান চৌধুরী লিখেছেন
"হেলেন এখন তোমার শহরে নাই
তোমার শহর হেলে আছে মগড়া নদীয় গায়"
তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একুশে পদক সহ অসংখ্য পুরস্কার এ ভূষিত হন।
অল্প লিখেই গল্প হয়েছেন কবি হেলাল হাফিজ। তার কবিতায় দ্রোহ ও প্রেম ফুটে উঠেছে। তিনি কষ্ট দিয়ে বপন করেছেন কবিতার বীজ। তিনি তার এক কবিতায় লিখেছেন
"দুঃখের অপর নাম হেলাল হাফিজ"।
তার লেখা বিখ্যাত বইগুলোর নামঃ
১.যে জ্বলে আগুন জ্বলে
২.কবিতা একাত্তর
৩.কষ্টের ফেরিওয়ালা
৪.বেদনাকে বলেছি কেঁদো না
প্রত্যেকটা বই বাংলা সাহিত্যের পাঠকদের হৃদয় বলা চলে।
তার কিছু কবিতার লাইন
" একজীবনে কতোটা আর নষ্ট হবে
এক মানবী কতোটাই বা কষ্ট দেবে"
"ভালোবেসে নাম দিয়েছি তনা
মন না দিলে ছোবল দিয়ে
তুলো বিষের ফণা"
কথা ছিলো একটি পতাকা পেলে
আমি আর লিখবো না বেদনার অঙ্কুরিত কষ্টের কবিতা
কথা ছিলো একটি পতাকা পেলে
ভজন গায়িকা সেই সন্ন্যাসিনী সবিতা মিস্ট্রেস
ব্যর্থ চল্লিশে বসে বলবেন,–’পেয়েছি, পেয়েছি’।
কথা ছিলো একটি পতাকা পেলে
পাতা কুড়োনির মেয়ে শীতের সকালে
ওম নেবে জাতীয় সংগীত শুনে পাতার মর্মরে।
কথা ছিলো একটি পতাকা পেলে
ভূমিহীন মনুমিয়া গাইবে তৃপ্তির গান জ্যৈষ্ঠে-বোশেখে,
বাঁচবে যুদ্ধের শিশু সসন্মানে সাদা দুতে-ভাতে।
কথা ছিলো একটি পতাকা পেলে
আমাদের সব দুঃখ জমা দেবো যৌথ-খামারে,
সম্মিলিত বৈজ্ঞানিক চাষাবাদে সমান সুখের ভাগ
সকলেই নিয়ে যাবো নিজের সংসারে।
বর্তমানে প্রিয় কবি শারীরিক ভাবে অসুস্থ আছেন,কবির সুস্থতা কামনা করছি। কবির প্রতি রইলো সম্মান, শ্রদ্ধা ও অবিরত ভালোবাসা।