ছেড়ে যাওয়ার অধিকারের বড়াই করে
সেই যে ছেড়ে চলে গেলে—
অভিমানের ছোট্ট ডিঙি নৌকা করে
পাড়ি দিলে আমাদের ভালোবাসার ইংলিশ চ্যানেল। একা আমাকে ফেলে দিলে শূন্যতার আস্তাবলে।
আটকাতে পারেনি উপেক্ষার মহাপ্লাবন!
সেদিন মেনে নেওয়ার বিনয় টুকু ছাড়া তাই
আমার আর কিচ্ছু করার ছিল না।
আমার হৃদয় আঙিনায় এখন ভরা বর্ষাকাল।
অঝোর ধারায় ঝরছে হতাশার নোনাজল,
আকাশে অনেকটা যেন জোর করেই জেঁকে বসেছে
অপেক্ষার কালো মেঘ।
দুই চোখে দানা বেঁধে আছে বর্ণহীন কুয়াশা,
পৃথিবীর কোন রঙ তাই আমাকে রাঙাতে পারে না?
বিরহের অগ্নিকুণ্ডে পুড়তে পুড়তে
মৃতপ্রায় অনুভূতিরাও হারিয়ে ফেলেছে
স্বাদ আস্বাদনের ক্ষমতা।
সেই যে চলে গেলে, তার পর থেকে
এই জীবনে আর কখনোই বসন্ত—
চিরচেনা ফাগুনকে সাথে নিয়ে
আর হাজির হয় নাই...
তুমি ছিলে আমার হৃদয়-রাজপ্রাসাদের দেয়ালে
লাগানো সেই শেষ ইট—
নিজ হাতে, আপন মনে করে লাগিয়েছিলাম
স্বর্ণ-রৌপ্য, অনেকটা যত্ন আর ভালোবাসা দিয়ে।
তুমি থাকলে না। তোমার আকস্মিক বিদায়ের ঝাপটা
সহ্য করতে না পেরে, রানাঘাটের মতোই
ধসে পড়লো সে ইমারত।
চাপা পড়লো দু'চোখের কোণে জমে থাকা
অধরা স্বপ্নরা...
এখন চারদিকে শুধুই হাহাকার,
নীরবতা আর আক্ষেপের কালো ধোঁয়া।
একসময় তোমার উপস্থিতিতে চকচক করতো যে শহর,
সেখানে এখন মাঝেমধ্যেই হয় অনাকাঙ্ক্ষিত কষ্টের ধূলিঝড়।
জানা ছিল না, তুমি সেই ব্যস্ত ট্রেন—
যাকে সময়ের আগে গিয়ে ধরতে হয়।
শত চেষ্টা করেও তাই এই ছোট্ট জীবনে
আর কখনোই তোমাকে ধরতে পারবো না হয়তো ...
তবুও আশাহত হয়নি এখনো,
লাইনে বসে আছি আমি একা—অতি গোপনে।
এই পথেই আবার হয়তো তুমি আসবে কোনদিন!
অপেক্ষার রেড লাইট ভেঙেচুরে করবে খানখান, দেখবে সেদিন—
"তুমি ছাড়া আমি কতটা নিরুপায়..."