সন্ধ্যা যখন ঘনিয়ে রাত্রি নামালো  
রৌদ্রজ্বল দিনের পশ্চিম দিগন্তে  
তড়িঘড়ি সূর্য ডুবল সমুদ্রের নীল জলরাশিতে।  
ঝকঝকে আকাশকে ঢেকে দিল  
প্রগাঢ় কালো, কুচকুচে, কুৎসিত অন্ধকারে।  

রাত—একটি সুদীর্ঘ রাত।  
নীরবতা আর নীরবতা; নিঃশব্দে থেমে গেছে  
সেকেন্ডের ব্যস্ত কাঁটা। দীর্ঘশ্বাসের মিষ্টি মোহ  
ব্যথায় তলাবিহীন গভীর কূপে ফেলে দিলে।  

কলাপাতায় মোড়ানো পূর্ণিমার চাঁদ,  
তারকারাজি অচেনা কোনো এক কারণে  
হারিয়ে ফেলেছে তাদের সব আলো।  
রাত—একটি সুদীর্ঘ রাত।  

তুমি নেই কতকাল, কত রাত—  
অপেক্ষা শুধুই অপেক্ষা।  
এই রাত যেন আর শেষ হবার নয়,  
এই অন্ধকার যেন ইচ্ছে করেই  
আলোর মুখ দেখতে চায় না।  

এবেলার সময় পৃথিবীর কোনো নিয়মকেই  
যেন তোয়াক্কা করে না।  
এই একটি রাত কেন জানি  
আমার জীবনে বারবার ফিরে আসে।  

আমি কতটা নিরুপায়, নিঃসঙ্গ,  
কতটা অসহায়—তা কেবল জানে  
বালিশের ডান পাশে পড়ে থাকা মোটা ডায়েরির পাতা,  
তোমার কলমের কালোতে খামে বন্দী চিঠিগুলো,  
ডায়েরির এক কোণে জমে থাকা গন্ধহারা গোলাপের পাপড়ি।  

ভয় করো, কাউকে অভিযোগ করব না।  
আমি শান্ত, ভীরু, গোবেচারা গোছের—  
তা পারবও না কোনোদিন।  
তোমার ছায়া ঠিকই সর্বক্ষণ  
চোখে-চোখে রাখছে আমাকে।  

রাত—একটি সুদীর্ঘ রাত।  
এ রাত আর শেষ হবার নয়...