রাত তো অনেক হলো,  
এখনো জেগে আছো যে?  
ঘুম আসছে না। কেনো?  
তোমাকে মনে পড়ছে। আমাকে!  
হ্যাঁ, তোমাকে।  

কই, বাইরে তো কোনো বৃষ্টি হচ্ছে না,  
জানো? আজকের রাতটা না—  
একটু বেশিই নীরব, নিস্তব্ধ।  
কই, ঐতো দূরে কোথাও কুহক ডাকছে,  
সে তো রোজ ডাকে— রোজ।  

তুমি কি রোজই রাত জাগো নাকি?  
না, না— ঠিক তা না।  
হুম, মিথ্যেটাও ঠিকঠাক বলতে পারলে না!  
আচ্ছা, তোমার ঘরে কোনো বাতি নেই কেনো?  
অন্ধকার আর ভয় পাও না?  

অন্ধকার কোথায়?  
আমিতো সব স্পষ্টই দেখছি—  
কিভাবে? আমি তো কিছুই দেখি না!  
ঐ তো টেবিলের এক কোণে তোমার দেয়া  
রূপোর হাতঘড়িটা জ্বলজ্বল করছে।  

গোপনে কেঁদে কেঁদে চোখের রং হারিয়ে ফেলেছো—  
হবে হয়তো। তুমি জানলে কেমন করে?  
আমি এখন চোখ দেখলেই সব বলে দিতে পারি,  
মন পড়তে পারি— কোনটা দুঃখের হাসি,  
কোনটাই বা সুখের। তাও বলে দিতে পারি!  

এতোকিছু শিখে গেছো!  
আগে তো কোনো কিছুই বুঝতে চাইতে না...  
এদিকে তাকাও— আচ্ছা, তোমার চোখ দুটো  
এত লাল কেন? আগে তো এমন ছিল না।  
দেখছি, আজকাল অনেক কিছুই তোমার মনে থাকছে না।  

মিথ্যে বলো না— অভিনয়?  
সেটা তোমাকে দিয়ে কোনোদিন সম্ভব না।  
আমার ঠিক মনে আছে...  
আচ্ছা, বাদ দাও— তুমি ঘুমাবে না? ঘুমাও!  
যাও, ঘুমাও তুমি। আমি কিছু অঙ্ক কসবো।  

অঙ্ক মানে কি?  
অন্ধকারে কেউ আবার অঙ্ক করে নাকি?  
মানুষকে হাসাতেও শিখে গেছো দেখছি!  
ও, তুমি বুঝবে না— যাও ঘুমাও,  
তোমার আবার দেরি হয়ে যাচ্ছে...  

আচ্ছা, আমি যদি আকাশ হতাম,  
তুমি কি মেঘ হতে?  
মেঘ না— আমি নদী হতাম।  
নদী সে তো সাগরে গিয়ে মেশে।  
তুমি বৃষ্টি ঝরাতে না?  

তখন তো শুকিয়ে যেতে!  
কেন? তোমার কাছেই তো উবে যেতাম...  
ভোর হতে চললো, আমাকে আবার ঘুমাতে হবে।  
একটু দাঁড়াও— আর কিছুক্ষণ গল্প করি!  
কই গেলা, কই রে তুমি? দাঁড়াও—  
আর একটু দাঁড়াও, আজ তো আর ঘুম হবে না।