আাষাঢ়ের একরাত
পান্না আকন্দ
আষাঢ়ের স্রোতে ভেসে গেছে বিকালের ঝলমলে রোদ,
নতমুখী গ্রামে সন্ধ্যা নামে নিরিবিলি জলের ঐকতানে।
আকাশটা নূয়ে পড়ে নদীর উজানে,
গুড়ুম গুড়ুম শব্দে ঢাক বাজায় ঠাঁইহীন মেঘ।
বৃষ্টির সঙ্গীতে উন্মাতাল টিনের চাল,
বিদ্যুৎ চমকানিতে চিন্ চিন্ করে মাটির মোলায়েম বুক
একাকিত্বে প্রবাসীর স্ত্রী আঁকড়ে ধরে শিমুল তুলোর বালিশ,
গর্জে উঠে উব্দাখালী,পাড়ের সীমানা পেরিয়ে পানি
উপচে পড়ে গাঁয়ের উঠানে। তখনো রাত দুপুর।
নীরব রাতে বৃষ্টির শব্দ ভেদ করে ভেসে আসে ছোট শিশুর কান্না,
অধৈর্যভরে অপেক্ষা একটা ভোরের,
ক্রমশই পানি উঠোন পার হয়ে বারান্দায়, অতঃপর ভিটেতে।
যেন সদ্য বিবাহিত কন্যা সানন্দে বাপের বাড়ি পৌছালো।
ঝড়ো হাওয়ায়,প্রকৃতির সুবর্ণ বিন্যাসে পানি তখন আয়ত্তের বাইরে
গাঁয়ের স্বপ্নচ্ছাসিত রাত কেটে গেলো রাতভর পানিতে দাঁড়িয়ে
সাপের ছুবলে মারা গেলো বসির শেখের মেয়ে,ঘরছাড়া বিধবা রাহেলা।
অনেকের ঘরের চাল ভাসছে উব্দাখালীর ঢেউয়ে।
আষাঢ়ের একরাত কারো মৃত্যুর সাক্ষী, কারো শোকার্ত আর্তনাদের।
৩০ জুন ২০২০