চোখের গভীরে যেন মহা সমুদ্র—
নিশ্চুপ অথচ চলমান,
যেন সেখানে অশান্ত ঢেউয়ের মাঝে
লুকিয়ে আছে একাকী কোনো নাবিকের স্বপ্ন।
রাতের তারাগুলো তার আলো ছড়ায়
তাদের ম্লান নীল রঙে;
আর সেই রঙ মিশে যায় চোখের আভায়—
মনে হয়, যেন চিরন্তন কোনো মহাকাব্যের পান্ডুলিপি।
আবার সেই চোখের তলায় লুকিয়ে থাকা ব্যথা
কখনো কি এক ঝলকে পড়া যায়?
যে ব্যথা মহাসাগরের তলদেশে
পড়ে থাকা ভাঙা নৌকার মতোন,
কিংবা হারিয়ে যাওয়া কোন নাবিকের দীর্ঘশ্বাস
যা ঢেউয়ের শব্দে মিশে যায়।
কখনো কখনো চোখের এই গভীরতায়
ঝড় আসে—
যেন দিগন্তহীন সাগরের তীরে
আছড়ে পড়ে উত্তাল ঢেউ হয়ে।
কিন্তু এই গভীরতার নিচে এক শান্ত পৃথিবী,
যেখানে ছায়া আর আলো খেলে
একসাথে।
চোখের নিচের কালো ছায়ায় লেখা থাকে
হাজারো কবিতা—
অপূর্ণ কিছু প্রেমের গল্প,
অজানা কিছু আকাঙ্ক্ষা।
সেই গভীরে বসে থাকে অদৃশ্য চাঁদ,
যা কখনো পূর্ণিমার আলো ছড়ায়,
কখনো আবার ঢাকা পড়ে
কালো মেঘে।
তবু চাঁদ টিকে থাকে,
যেমন টিকে থাকে জীবন
তার সমস্ত রক্তাক্ত স্মৃতি নিয়ে।
চোখের গভীরতা শেষ হয় না—
তুমি যতই ডুব দাও,
ততই নতুন কিছু দেখতে পাও।
সেই গভীরতায় এক জাদুময় জগত,
যেখানে সময় থেমে থাকে,
যেখানে সবকিছু ভেসে ওঠে
অতীত আর বর্তমানের মাঝে।
তবু এই চোখের গভীরে যে সমুদ্র,
তার কোনো মানচিত্র নেই।
সেখানে হারিয়ে গেলে
ফিরে আসা কঠিন—
যেমন কঠিন কোনো স্বপ্নকে সত্যি করা।
তবু সেই গভীরতায় ডুবে যেতে চায় মন,
কারণ সেখানেই লুকিয়ে আছে
জীবনের সবচেয়ে বড় রহস্য।
চোখের গভীরে যেন মহা সমুদ্র—
নিঃশব্দ অথচ অশান্ত,
যেন প্রতিটি ঢেউ গোপনে বলে যায়
একটা গল্প,
যা শুনতে চায়,
তবে বলার নয়।