আলো নিভে গেছে দূরের জানালায়,
ঝুল বারান্দায় পড়ে আছে বিস্মৃত বিকেল,
তন্দ্রাহীন রাতের কোলাহলে—
ট্রেনের বাঁশিতে হারিয়ে যাওয়া শব্দ,
যেন লুপ্ত এক নগরীর নীরব হাহাকার।
কে শোনে আজ এই নৈঃশব্দ্যের ভাষা?
শুধু শব্দহীন দীর্ঘশ্বাসের ভারে
তলিয়ে যায় ক্লান্ত দিন, অবসন্ন রাত।
তবুও রয়ে যায়—
বৃষ্টিভেজা পাতার নিচে চাপা অশ্রু,
ধূসর কোনো ভোরের মতো
চুপচাপ শুয়ে থাকা ব্যথার দহন।
তোমার চোখের তারায় একদিন দেখেছিলাম—
তুষারের মতো জমে থাকা অপেক্ষা।
সে-ও হারিয়ে গেছে আজ,
যেভাবে শিশিরে ভিজে যায় কচি ঘাস।
সন্ধ্যারা ঘুমিয়ে পড়ে,
কিন্তু রাত কি ভোলে এই নীরবতা?
সেই যে নক্ষত্রেরা একা জেগে থাকে,
তাদের চোখে জমে থাকে আজও
অপ্রকাশিত আর্তনাদের ইতিহাস।
মনের অন্ধকার অলিগলিতে
নেমে আসে একটানা নীরবতা,
ভাষাহীন এক আক্ষেপের মতো—
যেন এই শহর দীর্ঘশ্বাসের সুরে বাঁধা।
তবুও রয়ে যায়—
ঝরা পাতার মর্মরে লুকিয়ে থাকা অভিমান,
দেয়ালে ঝুলে থাকা বিবর্ণ প্রতিচ্ছবি,
বুকের গভীরে জমা রাত্রির দহন।
তোমার ফিরে আসা হয়তো একদিন
ভাঙবে এই নৈঃশব্দ্যের মোহ,
সেদিন সন্ধ্যার রঙ ছুঁয়ে যাবে চোখের জল,
আকাশের শেষ তারাটি
ছড়াবে আলো,
শব্দহীন কান্নার বুক ছুঁয়ে
উঠবে নতুন দিনের রোদ্দুর।
তখন এই পাড়ার গলিতে
আবার শোনা যাবে কারো পায়ের শব্দ,
কোনো এক আগন্তুকের হাতে জ্বলবে আলো।
তুমি কি ফিরবে সেদিন?
নাকি এই বোবা কান্নারা—
এই নির্বাক অপেক্ষা,
চিরদিনের মতো
তমসার ছায়ায় ঢেকে যাবে?