শ্রাবণের পথ ধরে হেঁটে যায় নীরবতা,
দূরের মাঠে ধান পাকে, বাতাসে গন্ধ ছড়ায়—
আকাশে মেঘের ছায়া, স্নিগ্ধ সুরে বাজে
একটি অচেনা পাখি, শূন্যে তার পথ খুঁজে।

পৃথিবীর কোলে লেগেছে গোধূলির আলো,
চুপিসারে আসে সন্ধ্যার ছায়া, মৃদু রোদ্দুর।
পথের ধারে দাঁড়ানো গাছেরা নিশ্চুপ—
নিঃশব্দে ভেসে যায় শীতলতার মলিন ঢেউ।

পথের পাশে একটি বাড়ি, অশ্রু ভেজা তার জানালা,
সেই জানালায় দাঁড়ায় একাকী মানুষের ছায়া।
তার চোখে লেখা আছে পুরোনো দিনের কথা,
ম্লান স্মৃতির মত ঝরে পড়ে, নদীর কোল ঘেঁষে।

একবার বৃষ্টি এসে, মাটির ঘ্রাণ মেলে ধরে,
নিস্তব্ধতার মাঝে মিশে যায় হারানো স্বপ্ন।
পৃথিবীকে ছুঁয়ে যায় ক্লান্তি ভরা হাওয়ার পরশে,
প্রকৃতির নীরব গান—জীবনের একান্ত তপস্যা।

এই গাঁয়ের প্রান্তে ঝরে পড়ে পাতার নুপুর,
বসন্তের ঘ্রাণ এসে জাগায় এক নীরব আশা।
সেই আশার দিকেই তাকিয়ে থাকে সাদা পাখির ডানা,
তার ডানায় ভেসে যায় অচেনা কোনো অনন্ত কাহিনী।

এই মাটির বুকে জমা আছে অগণিত স্বপ্ন,
মৃত্যুরও পরশ ফেলে যায় জাগরিত ধ্রুপদ।
আলো আর ছায়ার খেলা শেষে, রাত্রি আসে—
তুমি হয়তো শুয়ে থাকো, দেখো আকাশের নক্ষত্র।

শরতের শেষ প্রান্তে দেখা মেলে এক চিলতে বসন্ত—
সে বসন্তে রোদ আসে, ধীরে ধীরে ছুঁয়ে যায়।
জীবনের প্রতিটি ক্ষণে, গভীরে লুকিয়ে থাকে আলো,
আলোর পথে হেঁটে যায় ক্লান্তি ভরা জীবনের পালক।

তবু দূরের আকাশে মেঘের প্রতিধ্বনি শোনা যায়,
মাটির নিচে হারিয়ে যাওয়া গানের সুরে।
সময়ের বুকে লেখা থাকে একটি ছোট্ট কবিতা—
প্রেম, মৃত্যু, আর বসন্তের দোলায়িত হাওয়া।

তোমার জীবন ছুঁয়ে আছে সেই বিস্মৃত দিনের স্পর্শ,
যা তুমি হারিয়েছিলে শ্রাবণের মলিন বুকে।
সেই স্মৃতি আজও রয়ে গেছে একটি নক্ষত্রের আলোয়-
যেন কোনোদিন তুমিও ফিরবে সেই চিরন্তন পথ ধরে।