রাত্রি গভীর, বাতাসে সুর ভাসে নীরবতা নিয়ে,
চাঁদের আলোয় মিশে যায় পুরনো স্মৃতির ছায়া,
অরণ্যের ছায়াপথে ঝরে পড়ে রোদ্দুরের স্মৃতি,
অবেলার আলোয় ঢেউ তোলে ভুলে যাওয়া স্বপ্নের কাহিনী।
দিগন্তের ওপারে কোথাও বাজে ম্লান এক শঙ্খধ্বনি,
নির্জন নদীর কূলে ছুঁয়ে যায় আগাছার ঝর্ণাধারা।
পাহাড়ের ঢালে ভেসে আসে দুঃস্বপ্নের আভাস,
নক্ষত্রেরা মুছে দেয় হারিয়ে যাওয়া দিনগুলোর ক্ষত।
দূরের গ্রাম জেগে ওঠে ভুলে যাওয়া গান নিয়ে,
আকাশে মেঘের আঁচল মুছে দেয় বিষাদের রেখা,
কোনো এক হারানো বীণার সুরে গড়ে ওঠে মন্থর গাথা,
রাত্রির আলোকচ্ছটায় গাছেরা দাঁড়িয়ে থাকে নিঃশব্দ হয়ে।
সেই পুরনো মাঠে আজও ফুল ফোঁটে একাকী,
যেখানে তুমি আমি একদিন কাটিয়েছি নীরব সন্ধ্যা,
রূপকথার গল্পগুলো বয়ে গেছে কালের স্রোতে,
তবু আজও শুনি, বাতাসে ভেসে আসে সেসব মুহূর্তের কাব্য।
নির্জনে বসে শুনি, শালবনের মাথায় মৃদু হাওয়া,
আকাশের গায়ে বয়ে যায় ভাঙা রাতের আলোকরেখা,
পৃথিবী ঘুমায়, আর স্বপ্নেরা ভাসে জলের ওপারে,
তুমি আমি কোথায় হারালাম, শুধু অজানা স্মৃতির কারাগারে।
পাহাড়ি নদীর ঢেউগুলো তবু কথা বলে থেমে থেমে,
জীবনের চক্রে ফিরে আসে কেবল সেই মধুর ক্ষণ,
রাতের গভীরে হারায় ধীরে ধীরে সবকিছু,
মিশে যায় ধূসর আলো,
কিন্তু একাকী মন খুঁজে চলে সেই হারানো কালের নৌকা।
রাতের শেষে সূর্য ওঠে, ছুঁয়ে দেয় বনের কোল,
তুমি আমি জানি, এই আলো ভাঙবে একদিন সময়ের বাঁধ,
আবার ফোটাবে নতুন ফুল, কবি নতুন কাহিনী রচনা করবে, তবু আজও সেই পুরনো রাত্রির কথা মনে হয়,
যখন তুমি আমি ছিলাম স্বপ্নের বুননে গাঁথা,
এক অদৃশ্য সুরের বাঁধনে।
এইভাবে রাত্রির সুরে আমরা মিশে গেছি দুইজন,
রূপকথার ছায়ায় আজও দাঁড়িয়ে আছে স্মৃতিরা—
কোনোদিন হয়তো খুঁজে পাবো সেই দিনের পথে ফেরা,
অথবা রাত্রির শেষে ফোটাবে নতুন কোনো প্রভাতের ফুল।