প্রতিদিন প্রতি রাতে হৃদয়ের গহীনে অঝরে রক্ত ঝরে,
সুন্দর এই পৃথিবীর বুকে জেগে থাকে এক নীরব ক্ষরণ।
রক্তের স্রোতে ডুবে যায় অন্ধকারে ঢাকা স্বপ্নগুলো,
মাঝে মাঝে থমকে যায় আকাশের নীল জ্যোৎস্না।
এই পৃথিবীর সবুজ মায়া যেন একদিন
ধূলির আঁচলে মিশে যায়,
শহরের ব্যস্ত পথ ধরে হেঁটে যায় মানুষ,
তাদের ছায়ার নিচে জমে থাকে অগোছালো বেদনা।
বোধহীন এই জীবনের দীর্ঘপথে
আমরা কি কখনো বুঝতে পারি—
আমাদের অস্তিত্ব কেবল ঝরে পড়া পাতার মতো,
যে পাতায় সময়ের শুষ্ক বাতাস খেলা করে?
তবুও কোথাও, কোনো এক অরণ্যে,
অচেনা ফুলের গন্ধে জেগে ওঠে শ্যামলিমার গান।
আমরা কি আদৌ বাঁচতে শিখেছি?
নাকি প্রতিদিন মৃত্যুর কাছে মাথা নত করে,
অন্ধকারের পর্দা সরিয়ে দেখি
আলোর ম্লান ছবি?
শহরের অন্ধকারে ছড়িয়ে পড়ে এক দীর্ঘশ্বাস।
রাতের গভীরে থেমে যায় সমস্ত কোলাহল,
তখন নীরবতার বুক চিরে শুনি—
রক্তক্ষরণের সুরে মিশে গেছে
ভাঙা স্বপ্নের আহ্বান।
কেউ বলে, এ জীবন এক শূন্যতা।
কেউ বলে, শূন্যতার মাঝেই লুকিয়ে আছে
আলোর স্পর্শ।
তবুও, রক্ত ঝরে,
প্রতিদিন প্রতি রাতে।
চাঁদের আলোয় ঝলমল করে
রক্তের দাগ।
এক ঝাঁক পাখি উড়ে যায় অজানা দূর আকাশের সীমানায়—
তাদের ডানার শব্দে ভেসে আসে
নিস্তব্ধতার গান।
তুমি কি শুনতে পাও না?
আমার হৃদয়ের তলদেশে জমে থাকা
ব্যথার শব্দ।
অজস্র ভাঙন পেরিয়ে,
আমার জীবনের প্রতিটি রাত এক অন্ধকার পথে—
চলতে থাকে।
তবুও, ভোর আসে।
মাটির গভীর থেকে উঠে আসে
একটি নতুন কুঁড়ি,
যেন কুঁড়িতে জমে থাকে
নতুন আলোর প্রতিশ্রুতি।
আমরা কি তবে বাঁচতে শিখবো!
এই ক্ষরণ থেকে জন্ম নেওয়া প্রাণের গান দিয়ে?