সে আসে ভোরের আবছা আলোয়,
শহর তখনও ঘুমে আচ্ছন্ন,
কাঁধের ঝোলানো ব্যাগে ভরে নেয় স্মৃতির ধুলো,
কোন কবির রাত জেগে লেখা,
হারিয়ে যাওয়া গল্পের ছেঁড়া পাতা।

পথের ধারে পড়ে থাকা খবরের কাগজ,
কেউ পড়ে না, তবু সে তুলে নেয়,
হাত বুলিয়ে দেখে, বুঝতে চায়—
কোন কথা চাপা পড়ে আছে তার ভাঁজে?

শিরোনামহীন কাগজের পাতায়
মিশে থাকে হারানো স্বপ্ন,
স্মৃতিস্তম্ভের মতো জমে থাকে
সভ্যতার বিস্মৃত ডাক।

সে জানে না, তার কুড়ানো কাগজে,
লুকিয়ে আছে ইতিহাসের গল্প,
ভুলে যাওয়া কবিতার শব্দরা
তার হাতের ছোঁয়ায় খুঁজে পায় নতুন প্রাণ।

অথচ গলি থেকে গলিতে, দরজা থেকে দরজায়,
তার পদচিহ্ন রেখে যায় অতীতের ছাপ।
সে চলে যায় নিঃশব্দে,
শহরের কোলাহলে মিলিয়ে যায় একদিন।

তবু তার ছোঁয়ায় কাগজেরা বাঁচে,
পায় নতুন গল্প, নতুন ভাষা,
আর আমরা দেখি, তার গল্পের ভাঁজে
জীবনের এক অন্য মানে।

তার পায়ের শব্দে জাগে নিঃশব্দ কোলাহল,
বাতাসে ভাসে পুরোনো কাগজের গন্ধ।
কে জানে, কোন গল্প হারিয়ে গেছে
সে ছুঁয়ে দেখে হলুদ পাতার ভাঁজে?

তার হাত বুলিয়ে যায় ইতিহাসের পাতায়,
কেউ পড়ে না যে শব্দহীন বর্ণমালা।
পৃথিবী তখন ব্যস্ত নতুন খবরের।

নিঃশব্দে সে মিলিয়ে যায় কুয়াশার ভিড়ে,
তার চোখে জমে থাকে ছেঁড়া কাগজের ছায়া।
সে চলে যায়, রেখে যায় শুধু এক প্রশ্ন—
আমরা কি সত্যিই বুঝি তার গল্প?