জীবনের শেষ প্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছি,
নিঃশব্দের আলপথে, একাকীত্বের ছায়ায় ঘেরা।
আকাশের গায়ে ঝুলে থাকা রোদ্দুরও
তেমন জ্বালাতন করে না আর এখন,
সমস্ত ক্লান্তি যেন বুকে জমে আছে নীরব এক পাহাড়ের মতো।
পায়ের নিচে শ্যামল ধরণী,
তাতে শুকনো ঘাসের গন্ধ,
মাথার উপর মেঘেরা ভাসে কিন্তু বৃষ্টি আসে না।
হৃদয়ের অভিমানের আকাশে মেঘের ছায়া,
যেন সে-ও অপেক্ষা করছে অজানা কোনো ডাকের জন্য।
তবুও সময় তো থামে না।
পালকগুলো ঝরে পড়ে গাছের মতো,
ফিরে আসে না সেই পলকগুলি আর।
গহন অরণ্যের মধ্যে দিয়ে এক নদী বয়ে যায়,
তার প্রতিটি ঢেউয়ের আঘাতে হৃদয়ের কোলাহল।
নদীর গর্জন শুনে মনে হয়,
আমার দিন শেষ, পথে পথে অপেক্ষা।
বেদনার এই দীর্ঘশ্বাস জমে থাকা কোনো এক
তৃষ্ণার্ত মাটির মতো, যা বৃষ্টি পায় না কখনো।
তবু, জীবন তো চলেই যায়।
মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যেতে যেতে
হঠাৎ থেমে যায় ঘড়ির কাঁটা।
অন্ধকারে নিমগ্ন সেই ধোঁয়ার শিকল,
যা বেঁধে রেখেছে আমাকে কালের স্রোতে।
কেন জানি মনে হয়,
এ পৃথিবী যেন ভেঙে পড়েছে আমার হাতে,
জীবনের রক্তিম শূন্যতায়।
স্মৃতির মাঝে খুঁজে পাওয়া ছোট্ট একটি
শান্তি, যা হারিয়ে গেছে নক্ষত্রের মতো।
এখানে থামার কোনো অবকাশ নেই,
শুধু শূন্যতার হাতছানি।
আমার অপেক্ষার ক্ষণগুলো,
এ যেন অন্তিম পূর্ণতার ছায়া।
আলোর পথে হেঁটে যাওয়ার সময় হয়েছে,
অন্ধকারে বাঁধা থাকা সমস্ত কল্পনা মুছে দিয়ে।
শেষ কথাগুলো জমা রেখে যেতে হবে এখানে,
যেখানে সব কিছুর পরেও দাঁড়িয়ে আছে প্রকৃতি।
শেষ প্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছি,
এখানেই হয়তো খুঁজে পাব সেই শান্তি,
যা এতদিন আমার কাছে অধরা ছিল।