এমন এক পৃথিবীতে দাঁড়িয়ে আছি,
যেখানে প্রতিদিনের আলো ম্রিয়মাণ—
তবু মেঘেরা ভেসে চলে নীরব আকাশের কোলে,
ঝরা পাতার মতো আমার স্বপ্নগুলোও কোথায় যেন হারিয়ে যায়,
ধূলোমাখা গলির ভাঁজে, মায়াবী রাত্রির স্নিগ্ধ বাতাসে।
তুমি কি দেখেছ, সেই প্রথম ভোরের আলো,
যখন পৃথিবী জেগে উঠেছিল,
আর আমরা ছিলাম একলা পথিক—
অচেনা রাস্তায় চলছিলাম চেনা মুখের খোঁজে।
সময়ের সাথে সাথে সবকিছুই যেন দূরে সরে গেছে,
কিন্তু প্রতিটি ক্ষণে, প্রতিটি নিশিতে তোমার স্মৃতিরা জেগে থাকে হৃদয় পুড়ে—
অন্ধকারের বুক চিরে কখনো তারা হেসে ওঠে,
কখনো বা কেঁদে।
পৃথিবীর পথে পথে আজও জমে আছে কালের গন্ধ,
যেখানে মানুষের চরণদাগে ফুটে ওঠে গল্পের দাগ।
জীবনের এই ক্লান্ত নদীটা আমাদের টেনে নিয়ে চলে দূরের দিকে,
কিন্তু আমার পথ কি সেখানেই শেষ হবে?
হয়তো না—
হয়তো একদিন থেমে যাবো কোনো অচেনা তটে,
যেখানে নদীর জলে মিশে আছে সময়ের স্তব্ধতা।
আমাদের শৈশব, যৌবনের সমস্ত সুখ ও বেদনা—
সবই যেন মিশে গেছে বৃষ্টির নরম স্পর্শে,
যে বৃষ্টি অন্ধকার রাত্রিকে স্নিগ্ধ করে তোলে নীরবে,
মাটির মৃদু ঘ্রাণে জেগে ওঠে সেই অচেনা দিনগুলি।
তোমার খবর আজও ভেসে আসে বাতাসে,
তোমার নিঃশ্বাসের কল্পনায় আমি হারিয়ে যাই বারবার।
তুমি কি জানো!
প্রতিটি রাত্রি, প্রতিটি দিন আমাকে ডাকে—
তোমার অনুপস্থিতিতে এই পৃথিবী যেন শূন্য,
তবু এই শূন্যতার মধ্যেই খুঁজে পাই এক অন্য জীবন,
যেখানে আমার সমস্ত যন্ত্রণা, সমস্ত ভালোবাসা মিশে আছে।
কতবার ভেবেছি, এ জীবন শুধু স্বপ্নের মতো—
তবু সেই স্বপ্নেও এক নতুন দিনের প্রতিশ্রুতি জাগে,
যেখানে তুমি হয়তো ফিরে আসবে একদিন—
আমার জীবনের সমস্ত আলো আর অন্ধকারের মাঝখানে।
তোমার একটুখানি স্পর্শে, পৃথিবীর রঙ বদলে যাবে—
ধূসর আকাশ আবার ফিরে পাবে নীলের পরিচয়,
আর আমি আবার নতুন পথে হাঁটব,
শতাব্দীর পুরোনো যন্ত্রণাকে পিছনে ফেলে,
অন্ধকার থেকে আলোয়,
বিষাদের কোল থেকে হাসির জগতে।
তোমার চোখে দেখব সেই নতুন সকাল,
যেখানে আমার প্রতিটি প্রতীক্ষা হবে পূর্ণ,
তুমি এসে মুছে দেবে সমস্ত ক্লান্তি, সমস্ত ভুলের দাগ।
জীবনের দুঃখগুলো তখন মধুর হবে—
এই পৃথিবী, যে এতদিন আমার কাছে অচেনা ছিল,
সে হয়ে উঠবে আমার আপন, তোমার উপস্থিতিতে।
আর আমি—
আমি শুধু দেখে যাবো সেই সুন্দর মুহূর্তগুলো,
যেখানে সময় থেমে যায়,
জীবনের আলো ঝরে পড়ে নীরবে,
আর পৃথিবী, তোমার ভালোবাসার স্পর্শে,
এক নতুন কবিতায় পরিণত হবে।।