সেদিনও এমনই এক দুপুর ছিল—
তোমার জানালার পাশে দাঁড়িয়ে,
নিঃশব্দ হাওয়ার মাঝেও যেন শব্দেরা ভাসছিল,
মেঘের মতো ধীর, শান্ত,
অলক্ষ্যে ছড়িয়ে পড়ছিল এক অদৃশ্য সুর।

তোমার চোখের জলে
ভিজে গিয়েছিল কবিতার সমস্ত শব্দ,
দৃষ্টিতে এক গভীর স্রোত—
যেন প্রেমের সমস্ত সংকোচ ধুয়ে গেছে,
সব অব্যক্ততা থেমেছে নিঃশব্দ নীরবতায়।

জানালার পাশে দাঁড়িয়ে দেখেছিলাম—
দূরের কৃষ্ণচূড়ার নিচে বসে আছে ব্যথাতুর বিকেল,
নীলচে ধুলো মেখে নিথর আকাশ,
হয়তো তোমার চোখের জলেই
আকাশও নীরব হয়ে গিয়েছিল।

আমি তখন শব্দ খুঁজছিলাম—
তোমার ঠোঁটের কোণে জমে থাকা
অভিমানের সেই অসমাপ্ত কথাগুলো,
তোমার বিষণ্ন কণ্ঠের গভীরে
লুকিয়ে থাকা অশ্রুবিন্দুগুলো,
যা কখনো উচ্চারিত হয়নি,
শুধু নীরবে জমে থেকেছে।

সেই বিকেলে—
যখন ক্লান্ত পাখিরা ফিরছিল নীড়ে,
আমি ভেবেছিলাম—
এই ব্যথা কি শুধুই হারিয়ে যাওয়া?
নাকি এক নতুন কবিতার জন্য,
যেখানে শব্দেরা ভিজে যায় নোনাজলে?

তুমি কি জানো?
সেই জানালার ছায়ায় দাঁড়িয়ে—
আমি নিজেকেই দেখছিলাম ধীরে ধীরে ভেঙে যেতে,
একটা ঝরা পাতার মতো—
নিঃশব্দ সুর হয়ে।

হয়তো সে সুর,
হয়তো সে অশ্রু,
হয়তো সে নিঃশব্দ সন্ধ্যে—
সবই যেন কবিতা, তবু যেন কিছুই নয়।

সেদিন—
তোমার চোখের জলে ভিজে গিয়েছিল আমার সমস্ত কবিতা,
তবু আমি লিখে গিয়েছিলাম—
একটা অসমাপ্ত বৃষ্টির গল্প,
যেখানে তুমি ছিলে,
আমি ছিলাম,
আর ছিল এক নীরব জানালার ছায়া।