নীলিমা, আজও সেই পুরনো দুপুরের রোদ্দুরে
ঢেউ খেলিয়ে যায়। শহরের একাকী রাস্তায়
হাঁটতে হাঁটতে মনে হয়, কত যুগ আগেই
একান্তে দুঃখেরা জমা পড়েছিলো
এই পিচঢালা পথে। আমি দেখেছি রোদের কাঁপন,
বাতাসের শীতলতা, আর অন্ধকারের নরম
পরশে ঢেকে থাকা মানুষের অন্তর্জগৎ।
প্রতিদিন তারা আসে, যায়, ফিরে আসে।
শহরের বুকে হাহাকার লেগে থাকে—
অথচ তাদের গল্প কেউ শোনে না।
পথে পথে হাঁটা আর হেঁটে চলার মধ্যে
তবুও লুকিয়ে থাকে কিছু স্মৃতি, কিছু কথা—
যা কেউ জানে না, কারো জানা হয় না।
নীল আকাশের নিচে পায়রার মতো
ঝাঁক বেঁধে উড়ে যায় সেই অব্যক্ত প্রশ্নগুলো,
যে প্রশ্নের উত্তর জানে না কেউ।
অথচ সন্ধ্যা নামার আগেই সব কিছু
থেমে যায়। মনে হয়, এ শহরের গভীরে
কত রকমের গল্প রয়েছে—যেগুলো কখনো
লেখা হবে না।
আজকাল রাতের বাতাসে চাঁদের আলোও
নিস্তব্ধ হয়ে আসে, তারারাও যেন
ক্লান্তির ছোঁয়ায় মলিন হয়ে যায়।
আমি সেই মলিনতার মাঝেই জীবন খুঁজি।
জীবনের চেহারা দেখা যায় না—
তা হয়ত কোথাও হারিয়ে গেছে।
নদীর ধারে ঘাসের উপর বসে ছিলাম একদিন,
মনে হয়েছিল, নদী তার নিজের মতো
কথা বলে চলে। সেই কথাগুলো শুনতে শুনতে
মনে হয়, জীবনানন্দ দাশও হয়ত
এমন কোন নদীর ধারে বসে
শুনেছিলেন অদ্ভুত কিছু সুর—
যা আমাদের কানে কখনো পৌঁছায় না।
সেই সুরের মাঝেই তো বাঁধা আছে
সময়ের ইতিহাস। তবুও চলতে হবে।
চলার মধ্যে লুকিয়ে থাকে
বেঁচে থাকার এক নৈঃশব্দ্য।
সেই নৈঃশব্দ্য কোথায় পৌঁছে যাবে,
আমি জানি না। হয়ত কোন একদিন
সন্ধ্যার শেষে নক্ষত্রের আলোয়
থেমে যাবে সব নৈঃশব্দ্যের আরাধনা।।