নিজেই নিজেকে চিনতে পারছি না।
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দেখি,
চেনা মুখের মতোই কিছু একটা,
তবু যেন অচেনা—
চোখের গভীরতা মাপতে গিয়ে হঠাৎ হোঁচট খাই।
চোখ বলছে, এই আমি;
চোখই আবার পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয়—তুমি কে?
নিজের ছায়ার সঙ্গে কথা বলি,
ছায়া বলে, তুমি তো সেই আগের তুমি নও।
তোমার ভেতরে কিছু একটা ভেঙে গেছে,
তবু তুমি সাজিয়ে রেখেছ হাসির মুখোশ।
ছায়া যেন সব জানে—
আমার ভাঙা স্বপ্ন, হারিয়ে যাওয়া প্রেম,
ফেলে আসা দিনগুলোর বুকে জমে থাকা কান্না।
নিজেকে বুঝতে চাই, কিন্তু স্মৃতিগুলো হোঁচট খায়।
মাথার ভেতরে এক অদ্ভুত কোলাহলে,
যেখানে যুক্তি আর আবেগ লড়ে চলে অমীমাংসিত যুদ্ধে।
আমি কি সেই মানুষ,
যেন কল্পনায় বিশাল এক স্বপ্নরাজ্য গড়ে তুলেছিল?
যে ভাঙাচোরা রাস্তায় একা হাঁটে দিনের পর দিন?
নিজেকে বারবার দেখি চোখ তুলে, খুঁজি নিজেকে,
নিজের স্বপ্নে আঁকা ক্ষতচিহ্নগুলো গুনে রাখি।
প্রতিটি ক্ষত বলে একেকটা গল্প,
প্রতিটি গল্পে আমি একেকরকম।
তাহলে কে আসল?
সে কি এই মুখ, যা প্রতিদিন বদলে যায়?
নাকি সেই গল্পগুলো, যা ভেতরে ভেতরে পুড়ে যায়?
হয়তো আমি আসলে কিছুই না,
একটা শূন্যতার স্মৃতি, যার চারপাশে জমে থাকা ধোঁয়া।
নিজের ছায়ার সঙ্গে রাতভর কথা বলি,
ছায়া বলে, তুমি কি জানো,
তুমি আমাকে দেখতে পাচ্ছ কিন্তু ছুঁতে পারো না?
তোমার আত্মাও তেমনি—
সে তোমার ভেতরে আছে, কিন্তু তোমার নয়।
নিজেই নিজেকে চিনতে পারছি না।
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে থাকি ঘন্টার পর ঘন্টা।
হয়তো এটাই জীবন,
নিজেকে খুঁজতে খুঁজতে একদিন চিরতরে হারিয়ে যাব,
কিন্তু হারানোর মধ্যেই হয়তো লুকিয়ে আছে পাওয়ার আনন্দ।
তাই প্রতিদিন নিজেকে নতুন করে খুঁজি,
এই পরিচয়ের অন্বেষণই আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছে।