জীবন, যেন কেবল ব্যস্ততার এক অন্ধ মিছিল।
মৃত্যুর তুলনায় তা আরও ক্লান্তিকর,
আরও নিষ্ঠুর।
ঘুম ভেঙে উঠে দেখি মৃত্যু,
কিন্তু মৃত্যু তো বিশ্রাম,
মৃত্যু তো এক দুঃসহ ক্লান্তির অবসান।

তবুও, আমরা ছুটছি।
কোথায়, কেন—
সেই প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই।
পথের ধুলোয় মিশে গেছে
সব উত্তর, সব স্বপ্ন।

ব্যস্ততার এই নগরে,
প্রতিটি মুখ যেন
একটি সময়মাপনী যন্ত্র।
সেকেন্ডের কাঁটা ছুটে চলে
একঘেয়ে দৌড়ে,
আর আমরাও পেছনে পেছনে
নিজেকে হারাই।

তোমার ঘড়ির কাঁটা থেমে যায়,
তুমি বলো—
"এটাই মুক্তি।"
কিন্তু মুক্তি কোথায়?
মৃত্যু কি মুক্তি,
নাকি কেবল আরেকটি ব্যস্ততার ছদ্মবেশ?

ব্যস্ততা আমাদের গ্রাস করে।
আমরা ভুলে যাই প্রেম,
ভুলে যাই ক্ষণিকের নিঃশ্বাস।
শুধু মনে থাকে
সময়পঞ্জির শূন্য দিনগুলো।

যে জীবন মৃত্যুর চেয়েও ব্যস্ত,
সেই জীবন কি জীবনের যোগ্য?
কর্মস্থল থেকে ফেরার পথে
সন্ধ্যার ধূসর আলো বলে,
"তুমি তো আর বাঁচো না।"
তুমি উত্তর দাও না।

আমরা সবাই নীরব।
মৃত্যুর চেয়েও নীরব
আমাদের দিন,
আমাদের রাত।
আমাদের ঘুমহীন চোখের গভীরে
জমে থাকে এক অন্ধকার।

যেন মৃত্যুর চেয়ে ব্যস্ত জীবন।
মৃত্যু এসে বলে,
"তোমাকে তো ছুটি দিতে চাই,
তুমি কেন নিজেকে শৃঙ্খলে বাঁধো?"
তবুও, আমরা ব্যস্ত থাকি।

মৃত্যু ঘুম ভাঙিয়ে দেয়।
আমরা তাকে দেখে ভাবি,
এটাই বিশ্রাম।
তবুও, আবার দৌড়াই।
ব্যস্ততার শিকলে বাঁধা আমরা
তোমাকে চিনি না, মৃত্যু।

এই জীবনে আমরা বাঁচি না।
এই জীবন আমাদের বাঁচায় না।
শুধু সময়মাপনী যন্ত্রের
কঠিন শব্দ শোনায়—
"চল, থামিস না।"
আর আমরা চলি।

মৃত্যু আমাদের কাছে বিশ্রাম,
মৃত্যু আমাদের কাছে কেবলই
চিরন্তন সত্য
কিন্তু, তবুও,
আমরা ছুটে চলি
এই মৃত্যুর চেয়েও ব্যস্ত জীবনে।