শ্বাশুড়ির কড়া চোখের দৃষ্টি,
আমার সমস্ত অস্তিত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করলো,
এই সমাজ কি বুঝে না,
এই লজ্জা তো নারীজাতির নয়?
প্রকৃতি যখন নিজে থেকে সেজে ওঠে,
তার রঙিন পরশে পৃথিবী নতুন প্রাণ পায়,
তবে কেন নারীকে লজ্জায় ভুগতে হবে,
নিজের শরীরের নিয়মে?
এই প্রশ্ন যখন মনকে ঘিরে ধরে,
আমার সত্তায় বিদ্রোহের আগুন জ্বলে ওঠে,
আমি চিৎকার করে বলতে চাই,
আমার শরীর আমার অধিকার, আমার গর্ব।
কিন্তু শ্বাশুড়ির সামনে সে কথা বলতে পারি না,
সমাজের বেঁধে দেওয়া নিয়মের শৃঙ্খলে বাঁধা,
আমি শুধু চোখের জল ফেলে চুপ করে থাকি,
মনে মনে ভাবি, একদিন তো পরিবর্তন আসবেই।
সেদিন মা বললো, "এই ঠান্ডায় স্নান কেন?"
আমার সমস্ত শক্তি সঞ্চয় করে বললাম,
"মা, আমি তো নারীর শরীরে বন্দী,
কেন আমাকে বার বার প্রশ্নবিদ্ধ করো?"
শ্বাশুড়ি চুপ করে রইলো, কিছু বললো না,
সমাজের নিয়ম ভাঙতে সাহস লাগে,
কিন্তু আমি জানি, আমার লড়াই শুরু হয়েছে,
এই লজ্জার অবসান করতেই হবে।
মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলাম,
এই লড়াই শেষ হবে না ততদিন,
যতদিন না সমাজ শিখবে, নারীও তো মানুষ,
তার শরীরের নিয়মে লজ্জার কিছু নেই।
আমি জানি, একদিন সবাই বুঝবে,
নারী শুধু সন্তানধারিণী নয়,
সে নিজের অধিকারে স্বাধীন,
তার জীবনে লজ্জার কোনো স্থান নেই।
ততদিন এই লড়াই চালিয়ে যাবো,
প্রতিটি মেয়ের মুখে হাসি ফোটাতে,
তার নিজের শরীরের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে,
আমার প্রতিজ্ঞা অটুট থাকবে।
মা আমার পাশে এসে বসলেন,
আঁচলের কোণে চোখ মুছলেন,
বললেন, "বুঝেছি, তুই যা বলছিস, ঠিক।
তুই যা অনুভব করছিস, তার মধ্যে কোনো ভুল নেই।"
শ্বাশুড়ি মাও অবাক হয়ে দেখলেন,
আমার সাহসিকতার প্রতিফলন,
ধীরে ধীরে বদল আসতে লাগলো,
বদল আসতে লাগলো তার মনেও।
মা আমাকে জড়িয়ে ধরলেন,
বললেন, "শরীরের নিয়ম মানতে শিখবো,
আমাদের লজ্জার অবসান করবো,
তোর এই সাহসের জন্য গর্ববোধ করছি।"
আমি বুঝলাম, আমার কথা পৌঁছেছে,
মনের গভীরে দাগ কেটেছে,
এই লড়াই একা নয়,
মায়ের সঙ্গও পেলাম আমি।
তবে সমাজের পরিবর্তন তো একদিনে হয় না,
তবুও আমি জানি, একদিন সব বদলাবে,
নারীর গলায় মুক্তির গান বাজবে,
লজ্জার পর্দা সরে গিয়ে, সাহসের আলো ফুটবে।
মা বললেন, "তুই তো আমাদের পরিবর্তনের আলো,
তোর সাহসে আমরা এগিয়ে যাবো,
এই পৃথিবীকে নতুন করে সাজাবো,
তোর লড়াই আমাদের গর্বিত করবে।"
আমি হাসলাম, চোখে জল এলেও,
মনে শান্তি পেলাম,
আমার লড়াই শুরু হয়েছে,
এই লড়াই একদিন সফল হবেই।
শ্বাশুড়ি মা ধীরে ধীরে শিখলেন,
নারীর শরীরের নিয়মে লজ্জার কিছু নেই,
শরীরের নিয়মে স্নান বা কোনো কাজেই বাধা নেই,
এই পরিবর্তনের পথে সবাই একসাথে চলবো।
আমার কথায় সাহস পেল অন্য মেয়েরাও,
তাদের মুখেও হাসি ফুটলো,
নিজেদের শরীরের অধিকার প্রতিষ্ঠার পথে,
তাদের লড়াইও শুরু হলো।
তাই বলি, সমাজের বাঁধন ভেঙে,
লজ্জার শৃঙ্খল ছিঁড়ে,
আমরা সবাই মিলে এগিয়ে চলি,
একটি সুন্দর, সমানাধিকার সমাজ গড়ি।
এই লড়াই দীর্ঘ হবে,
তবুও আমরা হাল ছাড়বো না,
আমাদের মনের শক্তিতে,
পৃথিবী একদিন নতুন আলোয় উদ্ভাসিত হবে।
মা বললেন, "তুই আমাদের পথপ্রদর্শক,
তোর সাহসে আমরা এগিয়ে যাবো,
এই পৃথিবীকে নতুন করে সাজাবো,
তোর লড়াই আমাদের গর্বিত করবে।"
আমি হাসলাম, হৃদয় ভরে গেলো,
এই লড়াই আমার একার নয়,
সবার সাথে মিলিত হয়ে,
আমরা গড়ে তুলবো নতুন পৃথিবী।