আমি আমার কিডনিগুলো দিয়ে দিলাম,
লিভারটাও রেখে এলাম হাসপাতালের শীতল ঘরে।
ফুসফুস দুটো তুলে দিলাম এক সিগারেটবিহীন মানুষের হাতে,
যে হয়তো বাঁচবে, হয়তো না।

আমি শুধু আমার হৃদয়টা রেখেছি,
গোপনে, খুব গোপনে,
তোমার বিষাক্ত ছুরির নিচে রক্তাক্ত হয়ে পড়ে থাকা হৃদয়টা।
তুমি দেখলে না, তুমি দেখবেও না,
কারণ তোমার চোখে আলো কমে আসছে,
তুমি অভ্যস্ত কেবল নিজেকে দেখতে।

আমি আমার চোখের জলগুলো দান করে দিলাম,
কেউ যেন খরায় মরে না যায়,
আমার রক্ত দান করে দিলাম,
যেন পৃথিবীর কোনো শিশুর শরীরে একটু উষ্ণতা বাঁচে।

আমি আমার স্বপ্নগুলোও দিয়ে দিলাম,
একজন দরিদ্র কবির হাতে,
যে হয়তো রাত জেগে লিখবে আমার অপূর্ণ স্বপ্নের গল্প।
আমি আমার হাসিটাও দিয়ে দিলাম,
এক পথশিশুর মুখে,
যে খুঁজে পাবে নতুন সকালের মানে।

আমি আমার হাতের আঙুলগুলো দিয়ে দিলাম,
এক চিত্রশিল্পীর তুলির সঙ্গে,
সে হয়তো এঁকে দেবে আমার মুখ,
একটা চিরস্থায়ী ক্যানভাসে,
যেখানে তুমি নেই, যেখানে তোমার ছায়াও পড়বে না।

আমি আমার কণ্ঠস্বরও দান করে দিলাম,
এক নীরব প্রতিবাদীর হাতে,
যে আমার মতো হারিয়ে যাবে না শব্দহীন রাত্রিতে।
আমার স্মৃতিগুলো দান করে দিলাম,
এক বুড়ো মানুষের ফাঁকা জীবনে,
যেন সে ভুলে না যায় ভালোবাসার উষ্ণতা।

শুধু একটা জিনিস আমি রেখে দিলাম,
আমার হৃদয়,
সেই ক্ষতবিক্ষত, রক্তাক্ত হৃদয়,
যা তুমি ছিঁড়েছ, তুমি পুড়িয়েছ, তুমি ফেলে দিয়েছ,
তবু সে বেঁচে আছে,
তোমার দেওয়া প্রতিটি ক্ষতের সাক্ষী হয়ে।