হেমন্তের সকালটা নীরবে এলো,
আকাশের বুকে জমে থাকা সব মেঘ,
যেন ক্লান্তি ঝরিয়ে দিয়েছে রাতে।
নীরবতায় ভরে ওঠা শহর ধীর পায়ে জাগে,
তোমার অভিমানের কুয়াশা বুকে নিয়ে হাঁটি,
তুমি যে আর এ পথে আসবে না—
সে কথা জানি, তবু পথের ধারে অপেক্ষা আমার,
একা দাঁড়িয়ে থাকা সেই গাছের মত,
যার পাতা ঝরে গেছে বহুদিন আগেই।
তোমার স্পর্শের উষ্ণতা এখন হিমেল বাতাসে মিশে যায়,
আর আমি বুকের গভীরে জমা করি শূন্যতার গান,
তুমি দূরে, খুব দূরে—
অন্তহীন এক প্রান্তরে দাঁড়িয়ে আছো,
যেখান থেকে আর কোনো সাড়া আসে না।
তবু আমি সেই অতীতের মায়ায় ভেসে যাই,
তোমার হাসির কোলাজে বাঁধা প্রতিটি মুহূর্ত
বারবার বেঁচে ওঠে আমার স্মৃতিতে,
হয়তো এটাই নিয়তি—
ভালোবাসার প্রতিটি চিহ্ন মুছে ফেলার আগে
প্রত্যেকটি স্মৃতি আরও গাঢ় হয়ে আসে।
হেমন্তের এই নিস্তব্ধতা আমায় নিয়ে যায় সেই দিনগুলোতে,
যখন তোমার হাতে হাত রেখে চলেছিলাম,
অনন্ত সম্ভাবনার পথে, যেখানে সময় থেমে ছিল না।
আজ সময় থেমেছে, শুধু কুয়াশার মত স্মৃতি ভাসছে,
তোমার ছোঁয়াতে যে শিউলি ফুল ফোঁটেনি,
সে ফুল আজ ঝরে পড়ে বিনা শর্তে।
তুমি বলেছিলে, এ শহর আমাদের,
এই আকাশ, এই বাতাস, সব কিছুই আমাদের;
কিন্তু আজ বুঝি, কিছুই ছিল না আমাদের।
সব ছেড়ে চলে গেছে, ঠিক যেমন তুমি।
তোমার পথে একলা দাঁড়িয়ে থাকা সেই গাছের মত, আজ আমিও নিঃশব্দে ঝরছি।