আজকে যেন রামধনুর প্রলেপে সেজেছে আকাশ।
ধুলো জমে থাকা গাছের পাতাগুলো ধুয়ে ফেলে
নিজেকে সাজিয়েছে নতুন পাতার মতো।
অদূরে কোনো ছেলের কাঁধে ব্যাগ,
সে স্কুল ফাঁকি দিয়ে দাঁড়িয়েছে রাস্তার ধারে,
বারান্দা থেকে বৃষ্টির গন্ধ টেনে নিচ্ছে ফুসফুসে।

এমন সুন্দর দিনগুলো আসে অল্প ক’দিনের জন্য,
যেন বৃষ্টি তার ঝরে যাওয়ার সময়টুকু হিসেব করে।
তারপর শুকনো আকাশের কাছে ফেরত দিয়ে যায় শূন্যতা।
কিন্তু আজ এই বিকেলে,
যেন সারা পৃথিবী তার সমস্ত রঙ খুলে দিয়েছে।
পাখিরা থেমে আছে কোনো গাছের ছায়ায়,
তারা জানে না কোন রঙে নিজেকে লুকিয়ে রাখবে।

পুকুরের পানি বৃষ্টির ফোঁটায় ফোঁটায় গান গায়,
তার সুর কোথাও থেমে থাকে না,
ধীরে ধীরে বিলীন হয়ে যায় মাটির ভেতর।
মেয়েটি যে ছাতাটা নিয়ে রাস্তায় নেমেছিল,
সেটা এখন ভিজে গন্ধ ছড়াচ্ছে—
নতুন বইয়ের পাতার মতো।
তার চোখের দিকে তাকালে
বৃষ্টি থেকে রামধনু খুঁজে পাওয়া যায়।

কোনো ঘরে মা পিঠা ভাজছে,
তেল-মশলার গন্ধ মিশে যাচ্ছে ভেজা মাটির গন্ধে।
বাবা সাইকেল নিয়ে ফিরছেন কাজ শেষে,
তার গায়ে মাটির গন্ধ, চুলে বৃষ্টির জল।
আর শিশু? সে লাফিয়ে লাফিয়ে
তার মাকে ডাকছে,
জলছবি আঁকা পুকুর পাড়ের দিকে তাকিয়ে।

এমন বিকেলে কথা জমে থাকে,
কিন্তু ভাষা হারিয়ে যায়।
কে বলে বৃষ্টি শুধু জল?
বৃষ্টি তো প্রেম, বৃষ্টি তো গান,
বৃষ্টি তো স্মৃতির ঘ্রাণ।
এই বিকেল, এই রামধনুর আকাশ,
যেন জীবনকে রঙিন করে তোলে।

আজ আকাশ মিশে আছে জমিনে,
আজ শব্দ মিশে আছে নীরবতায়।
বৃষ্টি ভেজা বিকেল,
যেখানে ছড়িয়ে আছে রঙ,
যেখানে জমে আছে অনন্তকালের স্বপ্ন।