দুঃখের বন্দরে ফেলি নোঙর, নদীজল থেমে গেছে,
আকাশের রোদ্দুর হঠাৎ মিলায়ে যায়, চিরন্তন মেঘে—
মাটি তার সবুজ গর্ভে আগুন জমা রেখে দেয়,
ফুলেরা ফোটেনি আর, শুকনো ঘাসের বুকে কাঁদে।
তুমি কি চেয়েছিলে ফিরে আসবে সেই পুরানো পথ?
যেখানে জীবনের শব্দ ছিল অনন্তের সুরের মতো—
এখন সেই গলির মোড়ে কেবল নীরবতা মেশে,
চাঁদও দেখেনা সে গলি, কেবল মলিন রাতের কথা।
বাতাসে আজ কোনো সুর বাজেনি, কেবল দীর্ঘশ্বাস,
জীবনের পাতায় পাতায় জমেছে কষ্টের রঙ—
তুমি এসেছিলে কোনো এক ভোরে নীল আলো ছুঁয়ে,
ফিরে গেলে সেই পথে, যেখানে সন্ধ্যা ঢেকে যায়।
পাহাড়ের ঢালুতে আজ শুয়ে থাকে একটি উদাসীন বেলা,
নদীর বুকেও শুধু স্রোতের প্রতিধ্বনি কেঁপে ওঠে—
সময় থেমে গেছে এখানে, তুমি জানোনা কি সুখ ছিলো?
তবু দুঃখের পাখির ডানায় ঝরে যায় নিঃশব্দ আশা।
ফেলে এলাম একটি জীবনের নোঙর দুঃখের বন্দরে,
আলো জ্বালাতে পারিনি আর, রাত ঢেকে দিয়েছে চুপে-
তুমি কি দেখে গেলে সেই শূন্যতা, যার কোনো দিক নেই? এখানে স্মৃতিরা তবু জেগে থাকে অন্ধকারের মধ্যে।
ফুলেরা ফোটেনি আর, শেকড়ে জমেছে বিষন্নতা,
পথের ধারে একা দাঁড়িয়ে ছিলো সূর্যাস্তের ধুলো—
নোঙর ফেলে এলাম দুঃখের বন্দরে, চাঁদের আলো ম্লান,
তবু জীবন এখনো হাসে ক্ষত-বিক্ষত হৃদয়ের মাঝে।
এখানে যে রাত নামে, তার ডানায় ভর করে বিষণ্ণ স্বপ্ন,
তুমি কি জানো কোথায় হারিয়ে গেছে সুখের
প্রতিচ্ছবি?
এখানে কেবল রাতের গান, সময়ের ছায়া কাঁদে—
দুঃখের জোয়ারে জীবন ভাসে, নোঙর এখনো গভীর জলে।
কিছু কথা আর বলা হয় না, ছুঁয়ে যায় না প্রাণের ঢেউ,
এমনই একাকী নৌকো ভেসে থাকে দুঃখের বন্দরে—
শূন্য আকাশে কেবল ঝরে পড়ে মলিন একলা বৃষ্টি,
যা চুপে চুপে ভিজিয়ে দেয় জীবনের সব রঙিন স্বপ্ন।