তোমার নামে একটা চিঠি এসেছিল,
শুনেছিলাম পাশের বাড়ির লোকমুখে—
একদিন পড়ে দেখব ভেবেছিলাম।
কিন্তু পথের ওপারে উঁচু উঁচু দেয়াল,
দেয়ালের গায়ে শ্যাওলা জমেছে,
নির্জন দুপুরে রোদ এসে খেলে যায়।
আমি জানি, ওই দেয়ালের ওপারে তুমি নেই—
তবু কি এক অদ্ভুত আকর্ষণে,
আমার চোখ দেয়ালের মাথা বেয়ে চেয়ে থাকে।
চিঠির কাগজে কি অক্ষরগুলি জ্বলজ্বল করে?
অথবা মেঘের ছায়ায় ঢাকা পড়ে থাকে?
তোমার হাতের ছোঁয়া আছে কি সেই কাগজে?
যদি হাত বাড়াই, কি চিঠি ছুঁতে পারব?
এ ভাবনা নিয়ে দিনের পর দিন,
আমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকি।
দেয়ালের ওপারে যাওয়া যায় না,
তবু কল্পনায় দেখি—
তোমার চিঠি হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছ।
তোমার চোখে কি এক অনন্ত অপেক্ষা,
আর আমি এইপারে,
তোমার কাছে পৌঁছানোর আকাঙ্ক্ষা,
আমার দেয়াল ভাঙতে শেখায় না।
আমি দেখি তোমার নাম লেখা খামে—
পত্রবাহক কি জানে না,
এই চিঠির প্রাপক কে?
হয়তো জানে, হয়তো জানে না,
হয়তো খুঁজে ফিরে দেয়ালের ফাঁকে—
আমার করুণ মুখ,
আমার অপেক্ষার ছায়া।
তবু একদিন আসবে,
যেদিন দেয়ালের মাথায় উঠে দাঁড়াব।
এক হাত বাড়িয়ে ছুঁতে চাইব চিঠিটা,
কিন্তু তখনও যদি জানি,
তুমি নেই—তোমার স্পর্শ নেই।
তাহলে দেয়ালের ওপারে যাওয়ার কি মানে?
তবু একবার চাই,
জানি না কেন,
আমার চোখের জল যেন শুকনো হয়ে যায়।
তুমি হয়তো জানো,
এই দেয়াল ভাঙা যায় না।
তোমার নাম লেখা চিঠি তাই পড়া হয় না।
কিন্তু শব্দগুলি, অক্ষরগুলি যেন
আমার হৃদয়ের গভীরে খোদাই হয়ে থাকে।
পড়তে না পারা চিঠির ভিতর লুকিয়ে থাকা,
তোমার নাম,
আমার অপেক্ষা,
আর দেয়ালের ওপারে অদেখা সময়।