ও মাঝি, আমায় আর ডেকো না কাছে,
আমি তো ভেসে গেছি বাতাসের ভেতর,
অশরীরী এক ছায়া, জলরেখায় মিলিয়ে।
তুমি ডাক দিলে, ঢেউগুলো কেঁপে ওঠে—
তবুও আমি থামি না, ফিরে আসি না আর।

ও মাঝি, আমি তো হারিয়েছি আঁধারের ঘ্রাণে,
জলকাদার সোঁদা গন্ধে মিশেছি গভীরে।
সেই যে ভাঙা পালতোলা নৌকাখানি,
দৃষ্টির প্রান্তে ঝাপসা হয়ে মিলিয়ে গেল—
আমি তাকিয়েছিলাম, দেখিনি কিছুই।

তুমি আর বোলো না ফিরে আসার কথা,
এই পদ্মার জলে ছড়িয়ে আছে আমার ছায়া,
তবুও আমি নেই— শুধু কুয়াশার মতো
ভাসি, ভাসি, মিলিয়ে যাই দূরের ভাটিতে।

ও মাঝি, জানো কি?
এই স্রোত, এই জলরেখা আমায় ডাকে—
ডাকে তমসা ভেদ করে আলোয়,
আমি কি ফেরার নৌকা?
আমি তো ছায়া হয়েছি পদ্মার বুকে।

তবুও মাঝি, কেন ডাকো বারবার?
জলরেখায় কি আজও আমার স্মৃতি পড়ে থাকে?
আমি কি সেই পুরনো সুর,
সেই ভেজা কদম পাতার গান?

ও মাঝি, আমায় আর ডেকো না কাছে,
আমি তো তলিয়ে গেছি নির্জনতার স্রোতে,
জীবনের তীরে আর নেই প্রতীক্ষা—
আমি যে হারিয়ে গেছি তোমারই ডাকে।