আমি তোমাদের মতোই একজন—
পথের ধুলো গায়ে মেখে প্রতিদিন হেঁটে যাই,
গোধূলির আলো যখন পাখির পালকে মিশে যায়,
আমি থেমে থাকি সেই মুহূর্তে, গাছের ছায়ায়।
তোমাদের মতো আমিও দেখি নীল আকাশের ঢেউ,
তবে আমার আকাশে মেঘেরা চুপিসারে থেমে থাকে।
তারা স্মৃতির ঢেউ তুলে—
চুপিচুপি হারিয়ে যায় বুকের গভীরে।

আমার কষ্টগুলো বুকের গহীন পাতালে লুকিয়ে রাখি।
তোমাদের কাছে আসি হাসিমুখে—
তোমরা সেই হাসি দেখো,
কিন্তু বুঝতে পারো না এর অন্তর্গত বেদনা।
আমার প্রতিটি হাসির আড়ালে ঢাকা থাকে
অগণিত রাতের একাকী কান্নার সুর।
যখন রাত নামে,
পৃথিবীর সব আলো নিভে যায়,
তখন আমি একা,
নিজের ছায়ার কাছে প্রশ্ন রেখে
অঝোর ধারায় কাঁদি।

তোমরা আমাকে দেখো দিনের আলোয়,
যেখানে জীবন সাজানো রংবেরঙের ফুলের মতো।
কিন্তু রাতের অন্ধকারে,
যখন পৃথিবী নিস্তব্ধ হয়,
আমি শুনি হৃদয়ের মর্মরধ্বনি,
যা চিৎকার করে বলে যায়,
“তুমি একা।”

আমি জানি,
পাহাড়ের ঢালে বয়ে যাওয়া নদীও
একদিন ক্লান্ত হবে।
আমি সেই নদীর পাশে দাঁড়িয়ে ভাবি—
পৃথিবীও কি আমাদের মতোই
তার বুকের গভীরে লুকিয়ে রাখে অসীম যন্ত্রণা?
আমার মনে হয়,
তারাও কাঁদে, চুপিসারে, অগোচরে।

তোমাদের দুঃখের ঢেউ আমার হৃদয় ছুঁয়ে যায়।
তোমাদের স্বপ্ন আমার চোখেও ভেসে ওঠে।
আমার কান্নাগুলো তোমাদের মতোই—
শুধু তার শব্দ পৌঁছায় না তোমাদের কাছে।
তবু আমি চাই,
তোমাদের মতো একদিন আমিও হাসবো।
অন্ধকার ভেদ করে আলোর পথে হাঁটবো,
এই পৃথিবীর বুকে চিরসুখের ছোঁয়া ছড়িয়ে দেব।
দুঃখী মানুষের হাত ধরে বলবো,
“আমি তোমাদের মতোই একজন।
তোমাদের ব্যথায় আমারও ব্যথা,
তোমাদের স্বপ্নে আমিও জেগে উঠি।”

তোমাদের ভালোবেসে,
তোমাদের ভাঙা সুরে আমার সুর মিশিয়ে,
এভাবেই বেঁচে থাকবো অনন্তকাল।