বাতাসে আজকাল কেমন মিষ্টি একটা গন্ধ—
নিভু নিভু আলোয় যখন শহরের ঘুম ভাঙে,
পায়ের শব্দ মিশে যায় কোনো এক মায়াবী গানে। পথের ধুলো জমে জমে,
এক একটা দিনের কঙ্কাল তৈরি করে,
আর আমি হাঁটি—
মাটির সাথে মিশে থাকা সেই কঙ্কাল ছুঁয়ে।
বৃষ্টির শেষে শহর জাগে একা একা,
গাছের পাতায় বয়ে চলে পুরোনো দিনের স্মৃতি,
আমি চেয়ে চেয়ে দেখি—
বেঁচে থাকা কী সহজ, অথবা কি কঠিন।
একদিন আমিও হয়তো ধুলো হবো,
পায়ের তলায় মিশে থাকা স্মৃতির কঙ্কাল হবো।
জীবনের এই আলোর ফালি ছুঁয়ে যেতে যেতে,
একটা কুয়াশা ভরা দিন ভেসে আসে,
আমি সেই দিনের ভিতরে মেঘের ছায়ায় জীবন দেখি,
অথচ মনে মনে ভাবি—
এই পৃথিবী আমার নয়, তবু কত আপন।
যেমন পাতাগুলো ঝরে পড়ার মতো,
আমার জীবনও ফুরিয়ে যাবে, কবে সে তো জানি না।
একটা সময় আসে,
যখন বেঁচে থাকা শুধুই এক অভ্যাস,
ঘড়ির কাঁটার সাথে মিলিয়ে নিজেকে হারিয়ে ফেলি বার বার,
তবু বুকের গভীরে জমে থাকে কিছু না বলা কথা,
যা রোজ রাতে চাঁদের আলোয় বেরিয়ে আসে—
আমার নিঃশ্বাসের সাথে মিশে যায়।
পথে পথে হাঁটতে হাঁটতে দেখি,
মানুষগুলো কত আলাদা, কত একা—
তাদের চোখের গভীরে লুকিয়ে আছে হাজার বছরের শূন্যতা।
তবু সেই শূন্যতার ভেতরও বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখে তারা। আমিও দেখি, তেমনই এক স্বপ্ন—
যেখানে কেউ নেই, শুধু আমি আর আমার গল্পগুলো।
একদিন হয়তো এই পথ ফুরাবে,
তখন আমার মনে থাকবে কিছু পুরোনো স্মৃতি,
কিছু পুরোনো দিনের রোদ, কিছু মেঘের ছায়া।
তখন হয়তো এই শহরটাও বদলে যাবে,
তবু বাতাসে ভেসে আসবে আমার কণ্ঠস্বর,
যা একদিন মিশে গিয়েছিলো রাত্রির নীরবতায়।
জীবন এমনই, হয়তো এই চলার শেষ নেই—
তবু প্রতিটা বাঁকে অপেক্ষা করে নতুন কিছুর আশায়,
একটা নতুন কবিতা, একটা নতুন মায়া।
তবু আমি বেঁচে থাকি, দিন কাটাই এই অন্ধকারে,
জানি না কবে শেষ হবে এই চলা—
তবু আমি হাঁটি, প্রতিটি দিনকে পেছনে ফেলে।