প্রথমেই কবি দেবাশিস সেনের মৃত্যুতে জানাই গভীর শোক এবং শ্রদ্ধাঞ্জলী। তার মত একজন কবিকে হারিয়ে (যার ৩৬১ টি কবিতা এই আসরে প্রকাশিত হয়েছে) আমরা কতটা বেদনাহত তা এই আসরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট না থাকলে বুঝতেই পারতাম না। বাংলা কবিতা হারাল তার এক সৃষ্টিশীল সন্তানকে। আমরা হারালাম একজন বড় মাপের কবিকে। কবিতার আসর হারাল ফুটন্ত বাগানের সুন্দরতম ফুলকে। সেই সাথে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি এই ভেবে যে আমি এই আসরের একজন কবি। নাই বা হলাম নিয়মিত, অনিয়মিত হলেও আমি একজন কবি বাংলা কবিতার আসরে- এটাই আমার অহংকার।
অনেক দিন আলোচনা সভা থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলাম। নাগরিক জীবনের নানা ব্যস্ততায় কবিতার আসরেই নিয়মিত আসা হয় না, আর আলোচনা সভা তো অনেক দূরের কথা।কিন্তু আজ এই সভায় আসার লোভটুকু সামলাতে পারলাম না।
কবি দেবাশিস সেনের মৃত্যু নাড়িয়ে দিয়ে গেল আমাকে ভীষন ভাবে। মৃত্যু আমাদের জীবনে অবধারিত সত্য, তারপরও মৃত্যুকে মেনে নেয়া জীবনের সব থেকে কঠিণতম কাজ।
কবি দেবাশিস সেনের মৃত্যু যেভাবে আমরা-এই কবিতার আসরের কবিরা জানলাম, অন্য কোন কবি যদি চলে যায় কখনও আমরা কি জানতে পারব?
প্রশ্ন জাগে মনে।
মাঝে মাঝে মনে হয় এই আমি যদি না আসি কবিতার আসরে কখনও কেউ কি ভাববে কেন আমি আসলাম না। যদি নিঃশ্বাস টুকু বন্ধ হয়ে চলে যাই না ফেরার দেশে কখনও কেউ কি জানতে পারবে আমার না আসার কারণ?
হয়তো আমার চেনা-পরিচিত অনেকেই জানবে আমার পরপারে চলে যাওয়ার কথা। কিন্তু বাংলা কবিতার আসরের কবিরা জানবে কি সে কথা, মনে রাখবে কি আমায়, খুব মনে হয় আজকাল।
সময় হলে সবাইকে চলে যেতে হবে।এটাই নিয়ম।
জন্মের সাথে সাথে মৃত্যুও অবধারিত। তাইতো কবি বলেছেন-'জন্মিলে মরিতে হবে'।
কেউ কেউ বড্ড অসময়ে চলে যায় কবি দেবাশিস সেনের মত সেটা মোটেও কাম্য নয় । পৃথিবীকে দেবার থাকে অনেক কিছু । দিয়ে যেতে চাই।
হে বিশ্ব মাতা তোমার জন্য করতে চাই অনেক কিছু।
বেঁচে থাকতে চাই।
বিশ্বকবি রবি ঠাকুরের সঙ্গে কন্ঠ মিলিয়ে বলতে ইচ্ছে করে- 'মরিতে চাহি না আমি সুন্দর ভূবনে।'