কর্ণমুনি হাঁসদা নাম —
খন্নাণের এক বর্ধিষ্ণু গ্রাম ।
বছর তিনেক বয়স হবে,
স্বামীর গলায় মালা পড়াবে..... !
ভাবতে কি আর কেউ পারে --!!
কেবল টিভি, মোবাইল ফোন
খন্নাণের ঘরে ঘরে সর্বক্ষণ ।
আধুনিক বিশ্ব পড়েছে ঢুকে
তবুও বিশ্বাস করে ঝাড়ফুক তুকতাকে l
এখনো দেখি কু-সংস্কার মানে যত সাক্ষরে --!!
হঠাৎ জ্বরে কর্ণ কাবু
ভয় পেলেন মা, শিউরে ওঠেন মানিক বাবু
ডাক্তার, কোবরেজ সারায় জ্বর
তবুও মনের মাঝে থেকে যায় মহাডর
কিকরা যায়, কি হবে এখন --
গ্রামের মোড়ল আসেন তখন ।
অনেক ভেবে, অনেক বুঝে দিলেন তিনি বিধান ---
কুকুরের সাথে হবে বিয়ে তবে খুব সাবধান ---
নয়তো মরবে এ মেয়ে মাথায় পড়ে বাজ ---
ছুটলেন মানিকবাবু ফেলে সব কাজ ।
দিনক্ষণ স্থির হল —
যথা সময়ে পাত্র পাওয়া না গেল ।
কেউ দিলনা পোষা কুকুর, কেউ দিলনা খবর --
কি হবে এখন ! হয় না যে আর সবুর ---
রাত হয়, লগ্ন যে যায়, যায় ---
আত্মীয়-পরিজনেরা করে হায়,হায় ---
অবশেষে, পাড়ার মোড়ের মাথায়
ভোলা থাকে, পড়ল মনে কথায়, কথায়
সবাই ছোটে তরতরিয়ে
ভোলা যে সেখানে সটান শুয়ে
“ভোলা” পাড়ার এক কুকুর ---
সব শুনে রাজী হল, মনটা হল ফুরফুর।
এখন, পাড়ার জামাই বলে কথা
শ্বশুর থাকতে হাঁটবে কেন অযাথা ---
উঠলো ভ্যানে খোঁসমেজাজে
ওদিকে কর্ণ তৈরি কনের সাজে ।
মাদল বাজে,পাঁচুই বাজে, বাজে ঢাকঢোল
বর এলো, উলু দিল, মহাশোরগোল ।
কনের পাশে বর বসে মাথায় দিয়ে টোপর
সামনে পুরোহীত মন্ত্র ভাঁজে,ছড়িয়ে গেল খবর ।
মন্ত্র শেষে সাত পাক
পরিজন, প্রতিবেশীরা শুনেতো অবাক
আঁচল বেঁধে নোংরা লেজে
ভোলা ঘোরে স্বামী সেজে ।
শুভদৃষ্টির কালে
ভোলা চোখ টেপে মুখ তুলে ।
যাইহোক গভীর রাতে বিয়ে হল সারা
শ্বশুরের এক বেচাল দেখে ভোলা করলো তাড়া
অনেক বলে, অনেক বুঝিয়ে সবাই করলো শান্ত
ভোলা ভাবে: অনেক হল পাগলামী, এবার আমায় ছাড়োতো......
রাত গিয়ে দিন এলো
গ্রামের সব দেখতে এলো ---
মোড়ল এলো, বিধায়ক এলো,এলো সাংবাদিক ---
কোথায় গেলো জামাই মোদের, সবাই ছোটে চারদিক ---
সাংবাদিক: কি হয়েছিল কাল রাতে ?
মোড়ল: বিয়ে দিয়েছি কুকুরের সাথে ।
মানিকবাবু: আমার কর্ণ থাকবে দুধে-ভাতে।
বিধায়ক: ভোটের জন্য রাগাই না, সবাই থাকুক শান্তিতে।