সমতলে হেঁটে হেঁটে জীবনানন্দীয় বোধে
আজ এতগুলো
বছরের পর যখন ঠোঁট রাখি জীবনের কার্নিসে  
চড়ুইয়ের
সহজাত কৌতূহলে-
আমি স্থির অনুসিদ্ধান্ত টানি- তুমিই ঠিক ছিলে
হেমন্ত-যৌবনে
মথিত হবার দুর্বার আকুলতায় যখন তুমি
আমার-ই
আগুনে দিতে পতঙ্গ-ঝাঁপ  
একটি গঙ্গাফড়িং ধরে দেবার জন্য তোমার
মানুষী খুনসুটিতে
যখন আমি বিমূর্ত সুখে
মরে যেতে যেতে গাঙচিল-সন্ধ্যা হতাম ; তখন তুমিই ঠিক ছিলে


কিছুই দেবার ছিলনা
আমার  তোমাকে নৈবেদ্য না আহামরি-দর্শন
দেহ-সৌষ্ঠব মাংসল-পেশি
যা দেখিয়ে
তুমি বান্ধবীদের কাছে করতে পারতে গৌরব
তোমাকে দেবার
মতো নিকোনো বেডরুমের নিকুঞ্জেরর-ফ্লাট
নিদেন পক্ষে রতন টাটার
গরিবি-ন্যানো
নূন্যতম ন্যায্য দাবি এসব আজ মধ্যবিত্ত
সমাজ-বাস্তবতায়
তুমি ঠিক-ই টের পেয়েছিলে প্রজ্ঞার প্রখরতায়
বড্ড আটপৌরে
মেধা আমার মগজের প্রকোষ্ঠে প্রকোষ্ঠে ; যুগযুদ্ধে বেমালুম বেমানান


আমি
কি-ই-বা দেবার ক্ষমতা ধরি  
তোমাকে অর্ঘ্য
আমাদের নড়বড়ে টিনের চালে ঝুম-বৃষ্টি এলে
তোমাকে
আধ-নরম সস্তার-ইলিশে খিচুড়ি রাঁধতে
বলতে পারতাম
গড়পড়তা টাঙ্গাইলের শাড়ীতে চন্দনের টিপ এঁকে
অফিস-ফেরতা আমার
বিপন্ন চোখের সামনে এসে দাঁড়ালে ; আমি সকল-কাঁটা
ধন্য করে লিখে দিতে
পারতাম দু'লাইন জাদুবাস্তব কবিতা কিংবা আমাদের
সংকীর্ণ পাক-ঘরে
তোমার রান্নার নুন-জল এগিয়ে দিতে দিতে
কোন এক
ঘামাচি জাগা দুপুরে তুমুল জমিয়ে দিতে পারতাম
আমাদের পান্তাফুরানো
সংসারের খুনসুটি ; কি-ই-বা স্বপ্ন-সম্ভব পারতাম আমি- এর বেশি


তুমি-ই
তাহলে ঠিক ছিলে
এইসব মানবিক বর্ষায় তুমি বেছে নিলে
মধ্যবিত্ত-ছাতা
আর আমি জল-পড়া টিনের ছাউনিতে- আজন্ম-ভূমিদাস।।


২২/১০/১৪
ঝালকাঠী।