বৈচিত্রতা আছে বলেই হয়ত জীবনটা এতো সুন্দর।।


তাই চাই বৈচিত্রতা, চাই আলাদা নির্দিষ্ট বিন্যস্ততা। যেমনি বিন্যাস্ত হয়ে গেছে জগত, প্রকৃতি এমনকি মানুষ ও।


যিনি কবিতা লিখেন তিনিই কবি। হুম ঠিক আছে, এদিক থেকে কবি ও কবিনী একই। যেমন যার মন আছে সেই মানুষ। কিন্তু যখন আমি ও আমার বোনকে আলাদা করতে যাই তখন ই হয়ে পড়ি নর ও নারী। তেমনি কবি তো দুজন ই ছিলাম কিন্তু যখনি আরেকটু স্পষ্ট করতে যাই হয়ে পড়ি কবি ও মহিলা কবি। আর এই মহিলা কবি কেই কবিনী করার জন্য আমার প্রয়াস। এখানে অনেকে বলতে পারেন মহিলা কবিতেই তো কাজ চলে। না ভাই সমস্যা আছে, কোন কবিতা লেখিকাকে (এখানেও কিন্তু লেখিকা, মহিলা লেখক নয়) সম্বোধন করে 'হে মহিলা কবি' বলা হবে কেমন শোনায়, এর চেয়ে 'হে কবিনী' অনেক অনেক উত্তম।


একজনকে কবিনী বলে অনেকটা বিব্রতই হয়ে পড়েছিলাম। তিনি বুঝতেও পেরেছিলেন তাকে কি বুঝাতে চেয়েছি। তার পরও এমন ভাবে পাল্টা একটা প্রশ্ন করে ফেললেন যেন তিনি শব্দটা কোনদিন শোনেনই নি, অথবা নিজেকে কবিনী মেনে নিতে পারছেন না। কিন্তু 'লেখিকা' বললে মেনে নেন... আবার কবিনীর ইংরেজি ভাষান্তর 'Poetess' বললেও বেশ খুশী। তাকেই যদি Poet বলা হত তবে ভুলটা তিনিই ধরিয়ে দিতেন।


'নী' প্রত্যয় যোগ করে লিঙ্গান্তর ব্যকরনে আমরা অনেক পড়েছি।। গোয়ালিনী, মালিনী, বাদিনী ইত্যাদি ইত্যাদি। এমনকি ইংরেজি কিছু শব্দেও আমরা 'নী' প্রত্যয় যোগ করে স্ত্রী করে ফেলেছি যেমন ডাক্তারনী/ডাক্তরনী (মুলঃ ডক্টর, রূপান্তরিতঃ ডাক্তার, বাংলাঃ চিকিৎসক) মাস্টারনী/মাস্টরনী (মুলঃ মাস্টার, বাংলাঃ প্রশিক্ষক, গুরু, পণ্ডিত) তবে কেন 'কবিনী' সমস্যা?


অনেকেই বলতে পারেন এ ধরনের কোন শব্দই হতে পারে না, পারে না বললে ভুল, অভিধানে নেই বললে ঠিক আছে, কিন্তু হতে কতক্ষণ। আজ হতে যদি চর্চা শুরু করি কাল হতে এটিই একটি শব্দ। তাছাড়া ভাষা কি সব সময়ই অভিধান মেনে চলে, নাকি ভাসার উপর ভিত্তি করে অভিধান গড়ে উঠে/রচনা করা হয়? একটা উদাহরণঃ 'গণ্ডগ্রাম' শব্দের আভিধানিক অর্থ বৃহৎ গ্রাম, প্রধান গ্রাম। কিন্তু বর্তমানে প্রচলিত অর্থ 'অজপাড়াগাঁ'। 'গণ্ডগ্রাম' অভিধান কে তোয়াক্কা না করে নতুন একটি শব্দ রূপে অভিভূত হয়েছে।


তাই আসুন নতুনকে গ্রহণ করি, বৈচিত্র্যতায় সারা দেই।


আশা করবো এখন হতে 'কবিনী' শব্দটি ব্যাপক হারে প্রচলিত হবে।


আপনাদের কারও মনেও যদি নতুন কোন শব্দের উদয় হয় প্রকাশ করে ফেলুন, এভাবেই বাংলা হবে আরও সমৃদ্ধ, বাড়বে এর শব্দ সম্ভার।