আনুষ্ঠানিক ভাবে আমাদের "বাংলা কবিতা আন্তর্জাতিক কাব্য বাসর ও কবি সম্মিলন - ২০২৩" শেষ হয়ে গিয়েছে । মন থেকে রেশ যায়নি, স্মৃতির ঘোরে দিন যাপনের এক পর্বে কিছু লিখব বলে বসা । কিন্তু কি লিখি ! কোনটা ফেলে কোনটা লিখব ! এই অনুষ্ঠানের প্রতিটি পল আমার মনকে দোলা দেয় প্রতিনিয়ত । চোখ মুদলেই ভেসে উঠে চোখের সামনে উপস্থিত সব কবিদের হাসি মাখা মুখ । অজানাকে জানার উৎসুক ভরা দৃষ্টি , প্রিয়জনকে কাছে পাবার অনাবিল আনন্দের ধারা, নব্য কবিদের  প্রাথমিক সঙ্কোচতা, উৎসবের কলেবরে নিজেকে সম্পৃক্ত করার স্পৃহা, তৃপ্তির হাসি ইত্যাদি ইত্যাদি । চোখে ভেসে উঠে উদ্যোক্তাদের চোখের শঙ্কা । তবে সব মিলিয়ে এক স্বপ্নের সুন্দর সমাপ্তি । উৎকণ্ঠা, ভয় কোনটাই কম ছিলনা আমারও ।খামতি ছিলনা সার্বিক প্রচেষ্টার । লক্ষ কোটি জল্পনা আর কল্পনার ফসল আমাদের এই কাব্য বাসর । শুরু থেকেই মাথার উপর গুরুজনদের আশীর্বাদ আর উপদেশের বোঝাটা বেশ ভারী ছিল বলেই আজকের ঠোঁটে হাসির রেশ । কিছু কিছু ত্রুটি আগামীদিনের পথ মসৃণ করবে বলেই মনে করি । তবে বার বার স্থান বদলের বিষয়টা অনেক বেশী পীড়া দিয়েছে ; তবুও  জেনে বুঝে প্রতিকূল পরিবেশে পা বাড়ানোটা খুব রিস্কি ছিল । প্রতিকূল পরিবেশ কেন বলেছি (!) আপনারা যারা আমাকে জানেন ভাল বুজবেন । শেষ পর্যন্ত সাফল্য অর্জন করা গেছে বলেই মনে করি তবে আরো অনেক ভালোর অবকাশ র‍য়ে গেছে নিজের অজান্তেই । প্রথমেই জানিয়ে রাখি শুধুমাত্র স্থান পরিবর্তন জনিত কারনে আমাদের একদিনের ইনডোর প্রোগ্রামকে দুদিনে ভাগ করতে হলো ।
     কিছু কিছু সদস্য যারা সাংস্কৃতিক সমারোহকে নিছক গান বাজনার আসর বলে কটুক্তি করেছিলেন , আশাকরি অনুষ্ঠান শেষের এই লগ্নে এসে প্রয়োজনীয়তা এবং প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে আর কোন দ্বিধা থাকবে না কেননা শুরু থেকেই আমি জানতাম দুই বাংলার কাছে বিশেষ করে আমাদের এই বাংলা কবিতা ডটকমের সদস্যদের কাছে এই ৩য় বাংলা বা আগরতলা নিতান্তই অজানা এক শহর তাই এই শহর ও রাজ্যের ভাবমূর্ত্তি আপনাদের সামনে তোলে ধরা আমার কর্তব্য বলে মনে করেছি । তবুও আক্ষেপের সুরে এক লাইন লিখতেই হয়, আমরা যারা লিখি আমাদের মননে আজকের এই সমাজে ও পরিবেশেও যদি যারা নৃত্য প্রদর্শন করে তাদেরকে "নর্তকী" বলার মতো রুচিবোধ থাকে, আর যাই হোক তাকে অন্তঃত গুনমান বা রুচিবান সম্পন্ন বুদ্ধিজীবী বলা যায় না বা বলা ঠিক হবে না । তবুও তারাও আমাদের সমাজেরই লোক, এই আসরেরই সদস্য । আমার শ্রদ্ধা সকলের প্রতিই সমান ভাবে বর্ষিত হোক ।
  যেভাবে কবিদের উপস্থিতির নামের রেজিষ্ট্রেশান হয়েছিল সেভাবে বা সেই পরিমানে উপস্থিত না হওয়ার ফলে আমাদের কিছু ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে বটে কেননা সমস্ত আয়োজন উপস্থিতির পরিমানের উপর ভিত্তি করেই বরাদ্ধ করা হয়েছিল । বিশেষ করে বাংলাদেশের একটা বিরাট অংশের কবি আসবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে শেষ বেলায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ।
   এই স্বল্প পরিসরে প্রোগ্রাম নিয়ে লেখা সম্ভব নয় । আরেকদিন বিস্তৃত বলার ইচ্ছা রেখে আজকে এখানেই শেষ করলাম । এই শেষাংশে আরেক বার সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী সকল কবিবৃন্দকে আমার অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে শ্রদ্ধা, শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি ।
   হ্যাঁ, আমাদের এই সম্মিলনের আরেকটি বিশেষ আকর্ষন "ত্রিপুর কাঞ্চন" নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রিয় কবি সমীর প্রামাণিক যদিও লিখেছেন , আমি নিজেও এই স্মারক গ্রন্থ সম্পাদনার অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি পর্ব লেখার ইচ্ছে রয়েছে ।