সেই কবে থেকে নিজে নিজে লিখি, কখনো সখনো নিজে নিজেই পড়ি কিংবা কবিতা বুজবে এরকম কাউকে পেলে দু-চার লাইন শুনিয়ে নিজে তৃপ্তি পাই । প্রচারের আলো ব্যতিক্রমী ছাড়া সকলেরই ভালো লাগে, আমারও ভাল লাগারই কথা, কিন্তু সেই প্ল্যাটফর্ম খুঁজে পাচ্ছিলাম না । যদিও তার অনেক কারন । বিস্তৃত ব্যাখ্যা করার কোন পরিকল্পনা নেই । তবে সাধারনতঃ পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি পরিবেশ, দারিদ্রতা, হীনমন্যতা ইত্যাদি কারনগুলো থাকতে পারে । অবশেষে বছর তিনেক আগে "বাংলা কবিতা" হাতের নাগালে পেয়ে, প্রচার যা খুশী হউক, চর্চাটা কিন্তু শুরু হয়েছে পুরুদমে, সেই সাথে আসরের কবিদের প্রেরণা, উৎসাহ ইত্যাদি দিনে দিনে স্বপ্ন দেখাতে শুরু করল । আসরের বাইড়ে স্থানীয় দু'চারটা ম্যাগাজিন, পত্রিকাতেই সীমাবদ্ধ ছিলাম এতদিন। আজকে এই ১৫ই সেপ্টেম্বর,২০১৬ ইং আমার যেন অভিষেক হল । বাড়ির কাছে এতকিছু আছে সে যেন জানাই ছিলনা না । মাস তিনেক আগে স্থানীয় একজন বিশিষ্ট কবি শ্রী গোপেশ চক্রবর্ত্তী দাদার সঙ্গে আলাপ হয় । সেই থেকে ধীরে ধীরে স্থানীয় কবি মহলে যেন প্রবেশ করতে শুরু করলাম । তারই সুবাদে আজ সিপাহীজলা জেলা ভিত্তিক বইমেলা উপলক্ষে আয়োজিত "কবি সন্মেলন" এ ডাক পরল, সুযোগ দেয়া হলো কবিতা পাঠের । আমার যে কি আনন্দ ! কি উদ্দীপনা ! সে বলে বুজাতেন পারব না । কবিতা পাঠ করলাম, আসরে প্রকাশিত "এ কোন সময়ে এলে তুমি" কবিতাটি হাতের কাছে ছিল বলে, এটাই পাঠ করলাম । প্রথম পাঠে প্রশংসা পাওয়া আমার এ যাবৎ শ্রমের স্বার্থক ফসল বলেই মনে করি । মাইকে ছেড়ে যখন মঞ্চের বাইড়ে আসছিলাম, একজন আমাকে ডাকলেন, নাম , ঠিকানা, পেশা জানতে চাইলেন । সব বলে যখন নীচে এসে বসলাম, আমার কবি বন্ধু রাজীব নাহা কানে কানে বলল, ভাই, তিনি কিন্তু প্রবীর চক্রবর্ত্তী, ত্রিপুরার বিশিষ্ট কবি । আরেকজন কবি বন্ধু কবিতা ভট্টাচার্য্য বলল, পরিতোষ দা লক্ষ্য করেছেন কি ? 'আপনার কবিতা পাঠের শেষেই কিন্তু সব চাইতে বেশি হাততালি পরেছে ।" সবশেষে এতক্ষন যেমন বসেছিলাম এবারেও বসেই আছি , কিন্তু শেষ যখন হয়ে আসছে অনুষ্ঠান, কবিগন আস্তে আস্তে বিদায় নিচ্ছেন । কিন্তু আশ্চর্য্য ! সবাই এগিয়ে এলেন, কি সুন্দর সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ ! সবাই করমর্দনে নিজের পরিচয় দিলেন, একে একে প্রবীর ভোমিক, অপাংশু দেবনাথ, আব্দুল আলীম প্রমুখ বিশিষ্ট কবিগন । সব শেষে প্রবীর চক্রবর্ত্তী দা কাছে এসে বসলেন, বেশ কিছুক্ষণ আলাপ করলেন, কিছুটা অনুযোগ জানালেন, আমি নিজেকে যেন আরো মেলে ধরি ।  সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে, মাইকে সভাপতি কবিতা নিয়ে ও পঠিত কবিতা নিয়ে আলোচনা করছিলেন, আমি গর্বিত বুকে, উল্লাস ভরা চোখে নেড়েচেড়ে দেখছিলাম, আজকের বরন ঢালার লাল গোলাপটিকে, দেখছিলাম কলমটিকে, বইটিকে ইত্যাদি সমস্ত কিছু দেখতে দেখতে একসময় আবেগে চোখের কোণ ভারি  হয়ে যাচ্ছিল । তখনই ঠিক করেছি, আমার আজকের এই স্মরনীয়  মুহুর্তটার কথা বন্দুদের সঙ্গে অবশ্যই শেয়ার করবো । কেননা, আমার আজকের এই যে মুহুর্ত্তটাকে আমি অভিষেক ধরেই যদি সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়াত পরিকল্পনা তৈরী করি, তবে যে সমস্ত ক্রেডিট এই "বাংলা কবিতা" আসরের এবং অতি অবশ্যই আসরের বন্ধুদের । মনের কথা নিজের মতো করে আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করলাম । সবাইকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ ।