আমার যখন পাঁচ কি ছয় , পিশির তখন তেরো
আমার পা আঙিনায়, পিশির পাড়ায় গেড়ু
তিড়িং তিড়িং প্রজাপতি ফুলের পাপড়িতে
ইচিং বিচিং বিকেলে , পড়ার টেবিলে রাতে ।
দুই বিনুনি দুলতো পিশির সকাল সন্ধ্যা মাঠে
কাজল কালো চোখ দুটো তার পটল যেন হাটে ।
হাসত সদা দুধ সাদা দাঁত যেন বিজ্ঞাপন
হাসির জেরে পরত ঝরে চাঁদ যখন তখন ।
পিশির বুকে নাচত সুখে টেথিস সাগর হিমালয়
পাড়ার লোকের মুখে মুখে বিয়ের বছর বরাভয় ।
ঝিঙ্গে মাচান ঝিমিয়ে গেছে ফিঙ্গে আমি লেজঝোলা
পিশি এখন শশুর বাড়ি সংসারে মন হরভোলা ।
আস্ত সুরুজ কপালের টিপ আলতা রাঙা পা
ঘোমটা মাথায় গ্রাম্য বধূ পরচুলাতে খোপা ।
এখন পিশি ব্যস্ত বেশী বড্ড বেশী সংসারী
সাত পাঁকেতে এল শুধু ভাইপো বড় আদরী ।
সেই থেকে স্বদেশ ছেড়ে আমার স্বপ্ন সাকার
ভুলেই গেছি বাল্যকাল স্বজন আকার প্রকার ।
আজ বিকেলে কোয়ারেন্টাইনে ব্যালকনিতে একা
দুই বিনুনি দুলিয়ে মেয়ে আসলো কাছে "ইউরেকা"।
এতো আমার সেই পিশিগো তেরোর গেড়ু পাড়ায়
দুচোখ ভরে জল এলো পিশির মুখটা আয়নায় ।
কেমন আছো পিশি তোমি কেমন তোমার দিন
ভাইপো তোমার বড্ড বেঈমান 'বড়' স্বজন হীন ।