বাংলা কবিতা আন্তর্জাতিক কবি সম্মিলন - ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে গত ২৩ শে ফেব্রুয়ারী, এই আন্তর্জাতিক কবি সম্মিলনে কবি হিসেবে আমি ছিলাম একমাত্র ভারতীয় প্রতিনিধি আর আজকে তের দিন পর আলোচনার পাতায় কিছু প্রতিক্রিয়া দিতে বসলাম । এটা আসলেই একটা বিরাট বড় দুর্বলতা, তাই সকলের কাছেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি । এবারের কবি সম্মিলন যে, ভিন্ন মাত্রায় হবে সেটা শুরু থেকেই বুজা যাচ্ছিল, সে কারনেই শুরু থেকেই আমরা আগরতলার কবিতা অনুরাগীরা দল বেঁধে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, যদিও শেষের দিকে বিভিন্ন কারনে সংখ্যাটা কিছুটা কমে গেছে তবুও ৮ জনের একটা টিম যখন ২২ শে ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যা ৮ টার দিকে গিয়ে পৌছলাম, শুরুটাই ছিল চমকে ভরা । মূল উদ্যোক্তা প্রিয় ও শ্রদ্ধেয় কবি  কবীর হুমায়ূন ভাই, শ্রদ্ধেয় কবি খবির উদ্দিন, প্রিয় কবি মোজাম্মেল হোসেন অন্যান্য আরো কবিদের সঙ্গে নিয়ে ফুলেল অভ্যর্থনায় ক্লান্তি দুরে ঠেলে দিয়ে নানান ফলের সমারোহে শ্রান্তি -ক্ষুদা-তৃষ্ণা ভুলিয়ে একাত্ম হয়ে গেলাম কিছুক্ষণের জন্য । যদিও নৈশ ভোজনের জন্য বলেছিল কিন্তু সেদিনের মতো সেখানেই শুভরাত্রি বললাম । পরের দিন ঠিক সময় মতো সকাল বেলা যদিও কবি নন তবে কবিতা অনুরাগী একজন শিক্ষক মহাশয় আমাদের নিয়ে গেলেন সেই নির্দিষ্ট সম্মেলন স্থল ঢাকা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আ,ফ,ম,বাহাউদ্দিন নাছিম প্রশাসনিক ভবনের ৪ তলায় । আমরা যখন পৌছলাম ততক্ষনে সম্মেলন প্রায় শুরুর পথে । সসম্মানে স্থান দিলেন আমাদের সকলকে । কোরআন, গীতা, বাইবেল পাঠের মধ্যে দিয়ে শুরুটাও খুব সুন্দর ছিল, বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত হল, যদিও ভারতের জাতীয় সঙ্গীত আশা করেছিলাম তবে পরিবেশিত হয়নি । সুন্দর আলোচনার মধ্যে দিয়ে প্রথম পর্ব সম্পন্ন হয় । সর্বোপরি উদ্বোধক প্রফেসর ডঃ মোঃ শহীদুর রসিদ ভূঁইয়া এবং শ্রদ্ধেয় কবি ফারহাত আহম্মেদের আলোচনা সকলের মন কেড়েছে । যদিও ইত্যাবসরেই আমাদের সকালের নাস্তা, একটা সুর্দান্ত প্যাকেট ও ষ্ট্যান্ডার্ড খাওয়া হয়ে গেছে,  অতঃপর দুপুরে নামাজ এবং তারও পরে দুপুরের খাওয়া, সম্মেলন স্থলের বাইড়ের লনে উন্মুক্ত পরিবেশে বেশ উপভোগ করলাম, খাবার মান ও পরিমান ছিল অসাধারন সেই সঙ্গে প্রিয় কবীর হুমায়ূন ভাইয়ের আন্তরিকতায় (আমাকে নিজ হাতে কয়েক গ্রাস খাইয়ে দেওয়া) মন প্রাণ ভরে গেল সঙ্গে মিলি দি ও সেলিনা আপা ও রঞ্জু ভাইয়ের সকলের সঙ্গে আন্ত সম্পর্ক , আলোচনা ও তত্ত্বাবধান ছিল দেখার মতো তবে এই বাবদে বরাদ্দ সময়টা একটু বেশী হয়ে গেছিল বলেই মনে করি ফলে ২্য় পর্বে কবিদের কবিতা পাঠ ও শুভেচ্ছা স্মারক প্রদান এব্ং কাব্য সংকলন "অভিযাত্রিক" এর মোড়ক ঊন্মোচন  ইত্যাদি খুব দ্রুততার সাথে করতে হয়েছে । এখানে বলে রাখি (যদিও আমার ব্যক্তিগত মতামত) ভারত থেকে আসা সকল অতিথির অনুভুতি প্রকাশের মতো একটা পর্ব স্বল্প সময়ের জন্য হলেও রাখলে বোধহয় সম্মেলনের ষোলকলা পূর্ণ হতো তবে অতিথিগনের শুভেচ্ছা স্মারক ছিল অতি মনোহর । এভাবেই হই হই রই রই করে  নিজেরা ছবি তুলে, একে অপরের বই লেনদেন ইত্যাদি শেষে, কবি পলাশ দেবনাথ ও কবি নাজমূল হাসান, কবি বুলবুল হোসেন, কবি অবিরুদ্ধ মাহমুদ সহ আরো কিছু কবি (সকলের নাম হয়তো এক্ষুনি মনে আসছে না) সম্মেলনের খাবার দাবার সহ অন্যান্য বিষয়ে তদারকি সহ নিষ্ঠাবান দায়িত্বে   সম্মেলন শেষ করে যখন বেড়োতে যাচ্ছিলাম ঠিক তখনি কবি  
মিলি'দি মানে আমাদের প্রিয় কবি আফ্রিনা নাজনিন মিলি দিদি ধরে বসলেন আমাদের ভারতীয়দের নিয়ে একটা সুন্দর সন্ধ্যার আয়োজনে যাওয়ার জন্য । যেতে হলো ঢাকা শহরের এক অভিজাত রেষ্টুরেন্ট "ইমারসিয়া ডোসি" তে । সেখানে সত্যিই কবি খবির উদ্দিন, কবি মোজাম্মেল হোসেন, কবি জাহিদ হাসান রঞ্জু, সেলিনা খাতুন সহ অন্যান্য কবিদের উপস্থিতিতে নাচে, গানে, কবিতায় (সবকিছুই কবি সুলভ) এক নান্দনিক সন্ধ্যা উপভোগ সহ অপরূপ স্বাদের নৈশভোজন গ্রহন করলাম । প্রিয় কবি আফ্রিনা নাজনিন মিলির প্রানচঞ্চলতা আর উনার বন্ধু তথা রেষ্টুরেন্টের মালিক সাজু ভাই যিনি বাংলাদেশের মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের একজন মাননীয় এডভোকেটও বটে, উনার এবং উনার পরিবারের স্ত্রী-পুত্র সহ অন্যান্য উপস্থিতির আন্তরিকতা, আতিথেয়তা ও আপ্যায়নের মুগ্ধতার ভাষা ব্যক্ত  করার  সাধ্য আমার কলমে নেই । সেখানেই সুদুর অষ্ট্রেলিয়া থেকে শ্রদ্ধেয়  কবি ড. শাহানারা মশিউর -এর আমাদের জন্য পাঠানো মহামূল্যবান উপহার "সহমর্মিতার সংবেদন" গ্রহন করি । যদিও এই নান্দনিক সন্ধ্যায় কবীর হুমায়ূন ভাই ছিলেন না কিন্তু সর্বক্ষণ যেন আমাদের সঙ্গেই ছিলেন তিনি । কবি ফারহাত আহম্মেদ স্যারও বারবার আমন্ত্রণ জানাচ্ছিলেন উনার বাস ভবনে যাওয়ার জন্য । এভাবেই সেই প্রতিক্ষিত ২৩ শে ফেব্রুয়ারী সারাটা দিন উপভোগ্য হয়ে রইল আমাদের সকলের মনে প্রাণে । তবে এই সম্মেলনকে ঘিরে যে আরো অনেক চমক রয়েছে তা আন্দাজ করতে পারছিলাম কিন্তু এত সুন্দর তা কল্পনাও করতে পারিনি । এবারে ২৭ তারিখ পর্যন্ত শুধু এই আনন্দের স্বর্গরাজ্যে বাস করে এলাম, কবি ও কবিতার ভীরে । যদিও এই যাপিত আনন্দের ভীড়েও বড় সংসারের গতানুগতিক দুর্বলতার মতো নঞর্থক কিছু দৃশ্যও চোখে পরেছে তবুও একদিনে সবগুলো বিষয় বলতে গেলে গুলিয়ে যেতে পারে তাই বাকী সব রেখে দিলাম আরেকদিনের জন্য, এই আলোচনার ২্য় পর্বের জন্য ।