সব কিছু জুড়ে যায়
হা হওয়া পায়ের ক্ষত, রাখালের হারানো গাই
জনগনের সরকার ও কয়েকটি বিরোধী দল
গনতন্ত্র ও স্বৈরিনীতন্ত্র রাজপথের গলিত পিচে
দু’খোন হওয়া একখানা পারদ ওঠা আরশি
জুড়ে যায় পরস্পরের বিচ্ছেদ ঘুচিয়ে
তবু সম্পর্ক কেন জোড়ে না?
একা হয়ে যাওয়া শালিক আরেক দলছুট শালিকের সাথে
অশ্বত্থ ছাল কার্নিশের পলেস্তারার ফাঁটলে
ভাঙা উই ঢিবি, ভাঙা বাঁশি
বেলোয়াড়ি চুড়ি, প্রৌঢ়ের ভাঙা দাতের ফোঁকলা হাসি
ছন্দের অমিলে অপূর্ণ রয়ে যাওয়া কবিতার শেষ দু’টো লাইন
পূব পশ্চিমের চির বৈরী দিগন্ত দিনের শেষ রেখায় জুড়ে যায়
কিন্তু ভাঙা হৃদয় জোড়ে কি?
কালান্তরের ভুলে যাওয়া অসম্পূর্ন ইতিহাস,
যেনতেনভাবে আঁকা শিল্পির অতৃপ্ত একটা সৃষ্টি
বেখেয়ালি অবিন্যাস্ত পোঁচে মুর্ত হয়
চির সমান্তরাল রেললাইন, আজীবন যারা
মিলনের সুপ্ত বাসনায় একটু ফাঁক রেখে চলে
তারাও মিলিত হয় দৃষ্টির শেষ সীমানায়
তবু হঠাৎ ভাঙা সুখ স্বপ্নটা আর জোড়ে কি?
ভাত ঘুমের আলস্যে ফেলে রাখা ভুলে যাওয়া
বইয়ের পাতারা জুড়ে যায়
টুটে যাওয়া মানব অস্থি, শুধু একটা চিড় রেখে এক হয়
বৃষ্টির সলিল ধারায় খা খা মাঠের হা করা মুখ
বখাটে ছেলের কাঙ্খিত একা উঠতি যুবতী,
বৃদ্ধার রুক্ষ গোড়ালির ভাঁজ মিলে যায়।
ক্ষণিকের ভুলে ছিন্ন দু’টি জীবন আর মেলে কি?
কবির অন্তমিলের ভাষা মিলে যায়, তালটি মেলে না
ভিখারীর শুকনো রুটি মিলে যায়, তবু ক্ষিধে মিলায় না।
বেশ্যার দালাল-রুপকন্যা যুবতী মিলে যায়, খুশি মেলে, সুখ মেলে না
বর-কনের চার চক্ষু মিলে যায়, পূর্নতাটুকু মেলে না।
প্রেমিক প্রেমিকা মেলে, ভালবাসা মেলে না
মানব-মানবী মেলে, মানবতা মেলে না
ভুলে যাওয়া স্মৃতি মেলে, সময় মেলে না।
আমার আজন্ম স্বপ্ন একটা আকাশ মেলে, আকাশের রং মেলে না
তোমার,আমার, সারাটা জীবন একসাথে চলেও
মিল অমিলের খেরো খাতাটা মেলে না।