। ভিলেন।


কাগজ খুঁজছি খুব, জানো।
প্রাণপণ দেখছি,বন্যার খাতে তিনি কতটা দিলেন।
তাঁর তো অভাব নেই, সোনাদানা রাশিরাশি, উপঢৌকনে ছয়লাপ থাকে,
সকাল বিকেল তিনি সাজেন শুনেছি নাকি নতুন পোশাকে। দেশবিদেশের কত নবক্রোড়পতি, তাঁর পায়ে রেখে দেন সাত রাজা ধন,
সেসব তোষাখানা জমা করে রেখে, প্রতি উৎসবে করে বিত্ত সম্প্রচার।
অগণিত ভক্তের কুল, আকুল দর্শনার্থী সেজে এসে পরে তার দরজায়,
দিয়ে যায় সাধ্যমত কিংবা সাধ্যাতীত ধন মানসকামনা কিছু পূর্ণ হবে বলে।
জন্ম মৃত্যু বিয়ে সন্তানলাভে,
সুবিশেষ প্রাপ্তিযোগ তাঁর ভাগ্যে জোটে।
রোগব্যাধি ইত্যাদি ঘরে চলে এলে, তাঁর কাছে কেঁদে পরে মানুষ নাচার,
তিনিই তো সব, যেখানে করেছে ফেল সব ডাক্তার।
শুনেছি তিনিই নাকি সৃ্ষ্টি চালান।
বিশ্বটা যাঁর কাছে সামান্য ধুলো,
তাঁর দেখা-দেওয়া ঘরে সোনাদানা কেন থাকে ডাঁই ,
সে কথা জানতে চাই কার কাছে বলো!
এ পোড়ার দেশে তো তাঁকে প্রশ্ন করাই বারণ,
অকারণ ঝামেলায় কে পড়তে চায়!
হদ্দ বোকার মতো আমিই ছিলাম বসে এই দুরাশায়,
ঘোর দুর্যোগে পরে তার দরজায় যদি লোকঢল নামে,
যদি ডাইনে ও বামে শুধু শোনা যায় হারানোর হাহাকার আর ‘বাঁচাও বাঁচাও’ বলে প্রার্থনা,
পুরোনো দিনের কোনো উদার রাজার মতো তিনি তাঁর কোষাগার খুলে দিতে দেবেন আদেশ।
বন্যার তোড়ে তাঁর দেশ ভেসে যায়,
তিনি সবিশেষ উদ্যোগী নন উদ্বেগে,
এখনো ওঠেন নি জেগে সন্তানরক্ষা আবেগে,
দ্বার খুলে তাঁর কোনো দ্বারপাল বলেননি , আজ অবধি অর্জিত ধনরাশি যত,
ওহে বানভাসি লোক, তোমাদের হিতে চাই পুরোটাই দিতে।
আমি দেখি, জান কবুল করে মানুষ বাঁচায় যারা তারাও মানুষ, যারা তাঁকে ঘুষ দিয়েছিলো ভালো থাকবার জন্য, আর যারা দেয়নি,
বন্যার জল কারো তফাত করেনি।
যাই বলো, বৃষ্টি ও বন্যা ছাড়িয়ে আমি যেন দেখি এক অন্য ভিলেন...


সোনাদানা কোটি কোটি টাকা যার পুজোয় চড়েছে, কেউ জানো এই বন্যায় তিনি ঠিক কি দিলেন?


আর্যতীর্থ