। সেই মেয়েটা।


পরিখার ওপারে যে মেয়েটা দাঁড়িয়ে, রেখা অবয়বে যেন চেনা চেনা লাগে।
কোথাও দেখেছি আগে,অনতিঅতীতে ফেলে আসা কোনো বাঁকে ফেলেছি হারিয়ে।
যদি পারতাম এগিয়ে যেতে তার দিকে কোনোভাবে,
যদি কিছুটা স্ফুট হতো ভুরুর ভঙ্গিমা আর কটাক্ষপাত, কোথায় কখন ঘটেছিলো সাক্ষাৎ,
আমি জানি ঠিক আমার মনে পড়ে যাবে।
কিন্তু পরিখা কাটা সামনে আমার, সাঁকো নেই ওপারে যাওয়ার।
আবছায়া স্মৃতি আসে মনে, সযত্নে জমিয়ে রাখা বিষাদদহনে,
কোনোকালে এ জীবন সাথে ছিলো তার।
দুজনে একলা হয়ে জ্যোৎস্না মেখেছি কত পূর্ণিমা রাতে,
সূর্য ছুঁয়েছি কত নতুন প্রভাতে,
শহরের রাজপথে প্রকাশ্যে করে গেছি চুমুবিপ্লব,
সেইসব প্রেমকণা বিস্মৃতি থেকে করে ওঠে কলরব,
শিউলি আঁজলা করে উপহার কবে তার দিয়েছি দুহাতে।
তাহলে পরিখা কেন আজ, কেন নেই তার কোনো ছোঁয়া আমার জীবনে?
কেন এত পলিচাপা পড়ে গেছে মনে,
কেন এত কুঁকড়ানো সময়ের ভাঁজ?
পরিখার ধারে আসি অতীতবর্তিণীকে ডাক দেবো বলে , প্রাণপণ চিৎকারে গলা নিঃস্বর ,
স্মৃতিরা লুকাতে চায় হাওয়ায় উড়তে থাকা তার আঁচলে,
ঝড়ের পূর্বাভাস বুকের ভেতর........
হঠাৎ স্বপ্ন ভাঙে,
ধড়মড় বসি উঠে, গায়ের ওপরে কারো কোমল স্পর্শ পেয়ে ।
পাশেই বালিশে তার মুখ আছে ফুটে,
ভালো করে চেয়ে দেখি রেখার আদল টেনে, এ তো সেই মেয়ে!
চুলের রূপোলী রেখা, চোখের কোণের কালি বয়েসী ধকলে,      
  তবু হাত ছুঁলে হাতে বিজলির ঝটকাতে,
  পুরোনো সে পাগলামি আজও কথা বলে।


আর্যতীর্থ