। রাখী।


রাখী পরাবে বলে যে বোন আসবে বলেছিলো,
পথেই আটকে গেছে সে।
ইউ এস জি মেশিন তাকে তাচ্ছিল্যে বলে দিলো,
লাভ নেই তার এই পৃথিবীতে এসে।
মিটে গেছে তড়িঘড়ি জরায়ুর ভাড়া,( বাড়িওলা লোকটিরও ছিলো বড় তাড়া)
বহুদূর কোনো এক গোপন আস্তাকুঁড়ে ঠাই হলো তার,
রাখী হাতে বেঁধে দিতে আসবে না আর।
আরেকটা বোন ছিলো, ফুটফুটে পরী হয়ে মা'র দুধ খেতো চুকচুক,
এইবারে ওর থেকে রাখী পাবো ছিলো তার সব ঠিকঠাক,
নিশুত রাত্রে ওর কান্নারা থেমে গেলো,
মেয়ে হওয়া আজও বড় গভীর অসুখ,
আহা বোন, বাপ মা'র ভালোবাসা ঋণশোধ করে দিতে একদলা নুন মুখে থাক...
রাখীতে যে বড় লোভ , হাঁটি হাঁটি পা পা, এক বোন ওই স্কুলে যায়,
আমি পূর্ণিমা গুনি, আর কত চাঁদ পরে হাতে বেঁধে দেবে রাখীডোর,
একদিন বাড়ি ফিরে কালো মুখ করে তলপেট ধরে বোন খুব কাতরায়,
পাঁচ বছরেই তাকে নারী বানাতে চেয়ে পড়শী চড়াও নাকি দেহের ওপর।
তখন থেকেই সেই বোন আমার পুরুষ দেখলে ভেঙে পড়ে কান্নায়,
আমার বোনের বাড়ি, সম্ভ্রমচিন্তাতে ক্ষতবিক্ষত মন আড়ালে লুকায়।
আরও এক বোন ছিলো, ক্লাস নাইনের থেকে ভালোভাবে উঠেছিলো টেনএ,
উচ্ছল হাসি ছিলো, দুচোখে স্বপ্ন ছিলো কিছু করবেই সে দুপায়ে দাঁড়িয়ে,
এক বৈশাখী দিনে, দরজার কাঠ ধরে গুরুজনদের থেকে গিয়েছিলো জেনে,
মেয়েদের জীবনের অন্তিম মোক্ষ ভালো পাত্রের সাথে বিয়ে।


' বেটি বাঁচাও' য়ের যুগে এ পোড়ার দেশে আজ ভাইদের মন্দ বরাত,
ঠিক হচ্ছে না কিছু , সোচ্চারে বলে যায় শ'য় শ'য় রাখীহীন হাত।


আর্যতীর্থ